জলপাইগুড়ি, 23 ফেব্রুয়ারি: ছাত্রজীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা, মাধ্যমিককে এভাবেই ব্যাখ্যা করা হয় ৷ সেই পরীক্ষার প্রথম দিনই হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) অর্জুন দাসের ৷ ঘটনার সময় সে বাবা বিষ্ণু দাসের সঙ্গে বাইকে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিল ৷ চোখের সামনে ছেলেকে হাতির হানায় শেষ হয়ে যেতে দেখেছেন বিষ্ণু দাস ৷ ফলে তাঁর চোখের জল বাঁধ মানছে না ৷ বারবার বলছেন, ‘‘চোখের সামনে হাতি ছেলেকে তুলে আছাড় মেরে বুকে পা তুলে দিল ।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি বাইকে করে ছেলেকে নিয়ে মাধ্যমিক কেন্দ্রে যাচ্ছিলাম । হাতি চলে আসায় ছেলেকে বলি দৌড়ে পালা । কিন্তু হাতি ছেলেকে ধরে ফেলে । আমার চোখের সামনে ছেলেকে আছাড় মেয়ে পা তুলে দিল ।’’ এই ঘটনায় তিনি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বন দফতরের (Forest Department) বিরুদ্ধে ৷ জঙ্গলে বনকর্মীদের নজরদারি নিয়ে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন ৷ তাঁর দাবি, হাতির হানা (Elephant Attack) প্রায় রোজই হয়৷ অথচ বনকর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না ৷ তিনি বলেন, ‘‘বনবিভাগের কোনও কর্মী বা কেউ নিরাপত্তার জন্য ছিল না । প্রতিদিনই হাতি নেমে আসে । বনবিভাগের ফোর্স চাই । এই ভাবে যদি আমরা সবাই মারাই যাই, তাহলে কী হবে ?’’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে রাজগঞ্জ ব্লকের বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের জঙ্গল থেকে একটি হাতি বেরিয়ে হামলা চালায় । মোটর বাইকে করে বাবা বিষ্ণু দাসের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন দাস কেবলপাড়া স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল । জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মোটর বাইকের সামনে চলে আসে একটি বুনো হাতি । অর্জুনকে মেরে ফেলে ওই হাতিটি ৷
পরে স্থানীয়রা হাতি তাড়াতে আসে । হাতিকে তাড়াতে পারেননি । এর পর ট্র্যাক্টর নিয়ে তাড়ানো হয় ঘাতক হাতিকে । এরপর অর্জুনকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে চিকিৎসকরা জানান যে হাসপাতালে আসার আগেই অর্জুনের মৃত্যু হয়েছে ৷ জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (Jalpaiguri Hospital) ছুটে আসেন রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় । চহাত্রের বাড়িতে আসেন বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের ডিএফও হরিকৃষ্ণন । এদিন টাকিমারি মহারাজ ঘাট এলাকার মাধ্যমিক ছাত্রের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ স্থানীয় মানুষ । এলাকার মানুষ মৃতের বাড়িতে ছুটে আসেন । পরিবারকে সান্ত্বনা দেন ৷
আরও পড়ুন: দেওয়া হল না মাধ্যমিক, পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার পথে বুনো হাতির হামলায় মৃত ছাত্র