জলপাইগুড়ি, 10 অগস্ট : করোনা আবহে ভিড় বাড়াচ্ছে বাইরের টোটো ৷ তাতে সংক্রমণের সম্ভাবনাও বাড়ছে ৷ আর সেই কারণেই এবার থেকে জলপাইগুড়ি শহরে বাইরে থেকে আসা টোটো চলাচলের উপর জারি হল নিষেধাজ্ঞা ৷ শহরের রাস্তায় টোটো চালাতে গেলে পৌরসভার দেওয়া পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক ৷ যেসব টোটোচালকদের সেই পরিচয়পত্র নেই, আপাতত জলপাইগুড়ি শহরে টোটো নিয়ে ঢুকতে পারবেন না তাঁরা ৷ মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে ধরপাকড় ৷
আরও পড়ুন : নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করায় আরামবাগে টোটোচালকদের কান ধরে ওঠবস করাল পুলিশ
বেকার সমস্য়া মেটাতে একটা সময় যেমন অটোর বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছিল, এখনও ঠিক সেইভাবেই বাড়ছে টোটোর সংখ্যা ৷ দূষণহীন যান হওয়ায় টোটো চালানোর ছাড়পত্র আদায়ও তুলনামূলক সহজ ৷ বহু বেকার যুবকই টোটো চালিয়ে সংসারের খরচ জোগাড়ের ব্যবস্থা করেছেন ৷ জলপাইগুড়িও তার ব্যতিক্রম নয় ৷ কিন্তু সমস্য়া হল, টোটোর বাড়বাড়ন্তে জলপাইগুড়ি শহরে যানজট বাড়ছে ৷ বাড়ছে মানুষের ভিড় ৷ করোনা আবহে যা চিন্তা বাড়িয়েছে পৌরসভার ৷
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি শহরে সকলের টোটো চালানোর অনুমতি নেই ৷ যাঁদের কাছে পৌরসভার দেওয়া পরিচয়পত্র রয়েছে, একমাত্র সেই চালকরাই শহরে টোটো নিয়ে ঢুকতে পারেন ৷ গত বছরই বিভিন্ন সংগঠনের তরফে এমন চারহাজার পরিচয়পত্র বণ্টন করা হয়েছিল ৷ যাঁদের মধ্যে জলপাইগুড়ি শহরের পাশাপাশি শহর লাগোয়া খড়িয়া, পাতকাটা, অরবিন্দ এবং পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আসা টোটোচালকরাও ছিলেন ৷ কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, জলপাইগুড়ি শহরে প্রতিদিন অন্তত 14 হাজার টোটো চলাচল করে ৷ যার অধিকাংশই আসে শহরের বাইরে থেকে ৷ ফলে একদিকে যেমন যানজটে নাকাল হতে হয় আমজনতাকে, অন্যদিকে তেমনই ভিড় বাড়ে মানুষের ৷
এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি পৌরসভার তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শহরের বাইরে থেকে আসা কোনও টোটোকে ঢুকতে দেওয়া হবে না ৷ শহরের রাস্তায় টোটো চালাতে গেলে থাকতে হবে পৌরসভার দেওয়া পরিচয়পত্রও ৷ মঙ্গলবার তাই রাস্তায় নামে পুলিশ প্রশাসন ৷ শহরের থানা মোড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় চলে ধরপাকড় ৷ যে টোটোচালকদের পৌরসভার দেওয়া পরিচয়পত্র নেই, তাঁদের টোটো বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ আচমকা এমন পদক্ষেপে বিপাকে পড়েছেন অধিকাংশ টোটোচালক ৷ যাঁদের প্রায় সকলেই শহরের বাইরে থেকে আসেন যাত্রীদের পরিষেবা দিতে ৷
আরও পড়ুন : বাইরে বেরোলেই পুলিশের ধরপাকড়, চরম সমস্যায় রায়গঞ্জের টোটো চালকরা
টোটোচালকদের বক্তব্য, পৌরসভার পরিচয়পত্র ছাড়া যে শহরের ভিতর ঢোকা যাবে না, সেটা তাঁদের আগে থেকে জানানো হয়নি ৷ অথচ পেটের টানে টাকা ধার নিয়ে টোটো কিনতে হয়েছে ৷ এখন যদি গাড়ি বসিয়ে রাখতে হয়, তাহলে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে ৷ সেক্ষেত্রে পৌরসভা যাতে অবিলম্বে বাকি টোটোচালকদের জন্যও পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করে, সেই আবেদন করেছেন তাঁরা ৷ তবে করোনা আবহে আদৌ সেটা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে ৷