জলপাইগুড়ি, 7 জানুয়ারি: বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দাবি মতো টাকা দিতে না পেরে কাঁধেই মায়ের দেহ নিয়ে হাসপাতাল থেকে রওনা দিয়েছিলেন ছেলে (Youth Carries Mother Dead Body) ৷ অমানবিক সেই ঘটনায় মাল মহকুমার ক্রান্তির বাসিন্দা রামপ্রসাদ দেওয়ানের পাশে দাঁড়ায় গ্রিন জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) নামে এক স্বেচ্ছেসেবী সংগঠন (NGO) ৷ মায়ের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য রামপ্রসাদকে শববাহী গাড়ি ঠিক করে দেন সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস ৷ সেই কারণে তাঁকে পড়তে হল আইনি জটিলতায় ৷
তাঁর বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ির কোতয়ালি থানায় দায়ের হল অভিযোগ ৷ তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন আইএনটিটিইউসি (INTTUC) সমর্থিত বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ দাস ৷ তিনি এই ঘটনায় সরকার ও অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance) চালকদের বদনামের জন্য চক্রান্ত করার অভিযোগ তুলেছেন ৷ যদিও এই নিয়ে অঙ্কুর দাসের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রিন জলপাইগুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, যে ঘটনার জেরে এই অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেই ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার ৷ রামপ্রসাদ দেওয়ানের মায়ের মৃত্যু হয় জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (Jalpaiguri Hospital) ৷ অভিযোগ, মায়ের দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে তিনি কোনও শববাহী গাড়ি পাননি ৷ হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা তাঁর থেকে তিন হাজার টাকা দাবি করেন ৷ সেই টাকা না থাকায় তিনি কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেন ৷ তার পর কাঁধেই মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেন ৷
জানা গিয়েছে, রাস্তায় তাঁদের সঙ্গে অঙ্কুর দাসের কাকতালীয়ভাবে দেখা হয় ৷ অমানবিক ঘটনা দেখে তিনি তাঁর সংগঠনের শববাহী গাড়িতে রামপ্রসাদের মায়ের দেহ বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন ৷ কিন্তু পুরো বিষয়টিকে কাকতালীয় বলে মানতে নারাজ আইএনটিটিইউসি সমর্থিত বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ দাস ৷
তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা জলপাইগুড়ি কোতয়ালি থানায় গ্রিন জলপাইগুড়ির সম্পাদক অঙ্কুর দাসের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি । কারণ ,তিনি আমাদের অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ও সরকারকে বদনাম করার জন্যই এটা করেছেন । আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি ৷ সঠিক তদন্ত করে উপযুক্ত বিচার হোক ।’’
দিলীপ দাস তাঁর অভিযোগ পত্রে লিখেছেন, অঙ্কুর দাস দলবল নিয়ে নাটকীয় ভাবে কাঁধে করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়ো ভাইরাল করেন । এবং কিছু সাংবাদিক ও অঙ্কুর দাস মিলিতভাবে সরকারকে ও অ্যাম্বুল্যান্স সংগঠনকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই প্রচার করেছেন ।
এদিন অঙ্কুর দাসের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে তিনি আগে অভিযোগ করেছিলেন যে জলপাইগুড়ি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের একটা অসাধু চক্র তৈরি হয়েছে ৷ ওই চক্র হাসপাতাল চত্বরে শববাহী গাড়ি ঢুকতে দেয় না ৷ আর তারা মৃতের আত্মীয়দের কাছ থেকে অনেক টাকার বিনিময়ে দেহ নিয়ে যায় ৷ এক্ষেত্রে রামপ্রসাদের অর্থ না থাকায় তিনি মায়ের দেহ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাই এই বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে এসেছে ৷
আরও পড়ুন: শববাহী গাড়ি ভাড়ার টাকা নেই, হাসপাতাল থেকে কাঁধেই মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরল ছেলে