জলপাইগুড়ি, 8 জুন : জলপাইগুড়ি শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের একটি গাছতলায় দাঁড়িয়ে আছেন এক মহিলা ৷ পরনে লাল সাদা আর হলুদের নকশা কাটা ছাপার শাড়ি ৷ আর মাথায় ঘোমটা ৷ হাতে একটা সাদা কাগজ ৷ এই গরমেও একজন মহিলা দিনভর একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন ৷ অথচ কাউকে কিছু বলছেন না ৷ এই রকম আচরণ দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়েছিল ৷ অনেকে জিজ্ঞাসাও করেছিল ৷ কিন্তু মেলেনি উত্তর ৷ কয়েকজন সংবাদকর্মীর সন্দেহ হওয়ায় , কথা বলেন তাঁর সঙ্গে ৷ জানা যায়, মহিলা ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন ৷ ডাক্তারবাবু কাগজে কী লিখেছেন সেটা তিনি বুঝতে পারছেন না ৷ বাড়ি ফিরতেও ভয় হচ্ছে ৷ রবিবার সকাল থেকে তাই গাছের তলাতেই আশ্রয় নিয়েছেন ৷
গাছের তলায় দাঁড়িয়ে থাকার কারণটি নিয়ে মহিলা বিস্তারিতভাবে জানান, " জলপাইগুড়ি শহরের নিউটাউন পাড়ার এক স্বাস্থ্য কর্মীর বাড়ি আমি মাত্র পাঁচ দিন কাজ করেছি। শনিবার গৃহকর্ত্রীর কোরোনা ধরা পড়ে । কথাটা জানতে পেরে আগে হাসপাতালে যাই ৷ হাসপাতাল থেকে কাগজ দিয়ে বলেছে এক জায়গায় যেতে হবে ৷ তবে , জানি না কোথায় থাকতে হবে। কাউকে যে বলব আমি কোরোনা আক্রান্তের বাড়িতে কাজ করেছি সেটাও বলতে ভয় পাচ্ছি। তাই সবার থেকে আলাদা ভাবেই রয়েছি । বাড়িতে গেলে গ্রামের লোকেরা আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দেবে না , সেটা আমি জানি। বাড়ির লোকেরা বলেছে ডাক্তার যেখানে থাকতে বলছেন সেখানেই এই কদিন থাকতে হবে ।"
মহিলার কথা শুনে সহায়তায় এগিয়ে আসে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ৷ প্রেসক্রিপশনটি পড়ে দেখেন ৷ তাতে লেখা রয়েছে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টারে থাকার কথা ৷ তিনি পড়তে পারছিলেন না বলেই এই সমস্যায় পড়েছিলেন । অবশেষে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ডাক্তারের নির্দেশিত ইন্দিরা কলোনির সরকার কোয়ারানটিন সেন্টারে যাওয়ার কথা তাঁকে বলেন। দিনভর গাছতলায় দাঁড়িয়ে থাকার পর তিনি হেঁটেই সেখানে চলে যান।