জলপাইগুড়ি, 11 জানুয়ারি: মৃতদেহ কাঁধে তুলে পরিবারকে সাহায্য করতে গিয়ে গ্রেফতার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস ৷ কোতয়ালি থানার পুলিশ 10 ঘণ্টা ধরে থানায় জেরা করে গ্রিন জলপাইগুড়ি (Green Jalpaiguri NGO) স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসকে গ্রেফতার করল ৷ পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের অনেকেই মৃতদেহ কাঁধে তোলার ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন ৷ পুলিশ তাঁদেরও থানায় ডেকে জেরা করেছে বলে অভিযোগ ৷ সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা কবে ছবি তুলেছে, তা নিয়ে অতিসক্রিয় হয়েছে পুলিশ ৷ পুলিশের দাবি তদন্তে অঙ্কুর দাস সহযোগিতা করেননি ৷ তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
গত 5 জানুয়ারি জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধীনে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় লক্ষ্মীরানী দেওয়ান ৷ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা লক্ষ্মীদেবীর পরিবারের কাছে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য 3 হাজার টাকা দাবি করে ৷ কিন্তু মৃতার পরিবারের কাছে টাকা না-থাকায়, তাঁরা বিপাকে পড়েন ৷ এমনকী অভিযোগ, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকেও সরকারিভাবে শবদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার অ্যাম্বুলেন্স মেলেনি ৷ তাই মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মৃতার 77 বছরের স্বামী জয়কৃষ্ণ দেওয়ান ও তাঁর পুত্র ৷
আরও পড়ুন: শববাহী গাড়ি ভাড়ার টাকা নেই, হাসপাতাল থেকে কাঁধেই মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরল ছেলে
সেই সময় তাদের শববাহী গাড়ি দিয়ে সাহায্য করে 'গ্রিন জলপাইগুড়ি' স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৷ সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রকাশিত হয় ৷ এই ঘটনায় তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি ৷ এরপরে অভিযোগ ওঠে গ্রিন জলপাইগুড়ি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস চক্রান্ত করে সরকার ও অ্যাম্বুলেন্স চালকদের বদনাম করার জন্যই এমন কাজ করেছেন ৷ অঙ্কুর দাসের নামে কোতোয়ালি থানায় চক্রান্ত করে সরকারকে কালিমালিপ্ত করার অভিযোগ দায়ের করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক ইউনিয়নের সম্পাদক দিলীপ দাস ৷
কোতোয়ালি থানার পুলিশ 10 জানুয়ারি সকাল সাড়ে 10টা থেকে অঙ্কুর দাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থাকায় ডাকে ৷ তাঁকে সারাদিন গড়িয়ে রাত 12 ঘণ্টা জেরা করার নামে বসিয়ে রাখে বলে অভিযোগ ৷ অঙ্কুর দাস জানিয়েছেন, পুলিশ আধিকারিকরা দফায় দফায় তাঁকে জেরা করেছেন ৷ এরপর তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে ৷
অ্যাম্বুলেন্স চালকদের করা অভিযোগের মামলায় তিনি ইতিমধ্যে আদালতের কাছে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন ৷ বুধবার অঙ্কুরের অভিযোগ, "গতকাল সকালে আমি পুলিশের ডাকে তদন্তে সহযোগিতা করতে থানায় এসেছিলাম ৷ যাঁরা মৃতদেহ পরিবহণের জন্য বেশি টাকা চাইলেন, হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ নিয়ে আসার জন্য কোনও সহযোগিতা করা হল না ৷ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হল না ৷ কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল না ৷" কিন্তু মৃতের পরিবারকে সাহায্যের পর সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগে অঙ্কুর দাসকে গ্রেফতার করা হল ৷ কোতয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার জানান, তদন্তে অঙ্কুর পুলিশকে সহযোগিতা করেনি, তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: 'কারও প্ররোচনায় মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিইনি', বললেল মৃতার স্বামী