জলপাইগুড়ি, 2 সেপ্টেম্বর: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মেলালে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির দায়ও সিপিএম ও কংগ্রেসকে নিতে হবে ৷ ইন্ডিয়া জোটে এই তিন দলের সহাবস্থান এমনই মন্তব্য করেছেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ ৷ এছাড়া তিনি শনিবার ধূপগুড়ি উপ-নির্বাচনের প্রচারের মাঝে একাধিক ইস্যুতে বিরোধীদের নিশানা করলেন ৷ কটাক্ষ করলেন ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা শোনা গেল তাঁর কাছ থেকে ৷ পাশাপাশি এক দেশ এক ভোটের পক্ষেও সওয়াল করলেন তিনি ৷
ইন্ডিয়া জোটে সিপিএম-কংগ্রেস: বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে সিপিএম ও কংগ্রেস রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ৷ অথচ পশ্চিমবঙ্গে তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ৷ এই নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সিপিএম-কংগ্রেসের নেতারা নিজেদের বিধায়ক-সাংসদ আসন সিট বাঁচিয়ে রাখার জন্য কর্মীদের বলি দেওয়া হচ্ছে । সিপিএম-কংগ্রেস কর্মীদের খুন করা হচ্ছে, মারা হচ্ছে, মহিলাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে । আর নেতারা একসঙ্গে বসে চা খাচ্ছে । যে হাতে রক্ত লেগে আছে, সেই হাত মেলাচ্ছেন । সিপিএম কংগ্রেসের সাধারণ কর্মীরা যেন মনে রাখেন ।’’
দিলীপের নিশানায় অধীর-সেলিম: শুক্রবার ধূপগুড়িতে বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারে প্রদেশ কংগ্রেস অধীর চৌধুরী, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন । এই নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যদি অধীর, সেলিমরা আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে এক জায়গায় বসছেন না কেন ? দিদিমণি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নবান্নে চা খাওয়াবেন বলে ডেকেছিলেন । দু’জনে যাননি তো । ওখানে দোস্তি, এখানে কুস্তি । বাংলার লোককে বোকা বানাবেন না ।’’ তাঁর আরও দাবি, এখন যদি মমতার হাত ধরেন অধীর-সেলিম, তাহলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগের দায়ও তাঁদের নিতে হবে ৷
আরও পড়ুন: 'মুখ্যমন্ত্রী তার কাটা, মুম্বইতে এক হয়েছে পরিবারবাদী-দুর্নীতিবাদীরা'; চাঁছাছোলা শুভেন্দু
‘ইন্ডিয়া’ জোট প্রসঙ্গে: শনিবার জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এখনও ইন্ডিয়া জোট নিয়ে বলার কিছু নেই । কেবল মিটিংয়ে বসেছে । মিটিং থেকে বাড়ি গিয়ে অনেকে অনেক রকম কথা বলছেন । জোটের চেষ্টা হচ্ছে । মোদিজির সামনে কারও একার আসার হিম্মত নেই । অনেককে আনার চেষ্টা হচ্ছে । কিন্তু অনেকে সাহস করে আসতে চাইছেন না ।’’
রাজবংশী ও মতুয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে: দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এক তো চিন্তা ভাবনা করে কিছুই বলেন না । যখন যা মুখে আসে বলে দেন । কেবল পুলিশের জোরে আর টাকা দিয়ে ভোটে জিতছেন উনি৷ সাধারণ মানুষ এর থেকে মুক্তি চাইছেন । চব্বিশে আর একবার প্রমাণিত হবে ।’’
এক দেশ এক ভোট: দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সারা বছর ভোট লড়তে হয় এখানে । ভোটে লড়া মানে পয়সা খরচ করা নয় । আমরা রাজনীতি করি আমাদেরকেও ব্যস্ত থাকতে হয় । অন্য কাজ হয় না । সরকারি প্রশাসন কাজে লেগে যায় । সাধারণ মানুষের পরিষেবার ক্ষেত্রে সমস্যা হয় । ভোট করতে চলে যায় ।’’
একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন তৃণমূলকে জেতাতে লেগে যাচ্ছে । আমরা চাই সময় নষ্ট না হয় প্রশাসনিক কাজ ভালো হয়, এটাই আমরা চাই । কমিটি হয়েছে ৷ সভার সঙ্গে কথা বলা হবে । সংসদে আলোচনা হবে । ভোট লুট কম হবে ।’’
আরও পড়ুন: ছাত্র রাজনীতি থেকে দুর্নীতি পাঠ নেয় তৃণমূলের নেতারা, কটাক্ষ সুকান্তর