জলপাইগুড়ি, 6 অক্টোবর: সিকিমের তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে গেছে মেয়ে। আর মেয়ে এবং মেয়ের শ্বশুরের মৃতদেহ খোঁজার জন্য মর্গ থেকে মর্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বৃদ্ধ মান্নান খান। কিন্তু মেয়ের সন্ধান এখনও পাননি তিনি। গত 4 তারিখ ভোর রাতে বিধ্বংসী হরপা বানের ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সিকিম রাজ্য। সিকিমের একাধিক গ্রাম তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। একে একে তিস্তা নদীর সমতলে জলপাইগুড়ি জেলায় তিস্তার বুক থেকে একে একে উদ্ধার হচ্ছে মৃতদেহ। সেই মৃতদেহের মধ্যে মেয়ের মৃতদেহ আছে কি না, তা জানতেই মর্গে মর্গে লাশের পাহাড়ে দেহ খুঁজছেন মান্নান ও তাঁর ছেলে পেয়ারে খান।
এই রাজ্যের শিলিগুড়ির দার্জিলিং মোড় সংলগ্ন রাজীব মোড় এলাকার বাসিন্দা মান্নান খান হোসেন। তিনি গত 2018 সালে মেয়ে তৈয়াবা খাতুনের বিয়ে দেন বাংলা সিকিম বর্ডারে রংপোতে। রংপোর স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আনসারির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মান্নানের মেয়ের। তাদের দুই সন্তানও রয়েছে। রংপোর ওভার ব্রিজের নীচে বাড়ি ছিল ফিরোজের। বিধ্বংসী বন্যায় তৈয়াবার শ্বশুর মনসুর মিঞা, দেওর আরমান আলি-সহ তিনজন ভেসে যায়। গোটা বাড়ি তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে যায়। ফিরোজ আনসারি ছেলেকে নিয়ে উপরে উঠে গেলেও বাবা, ভাই ও স্ত্রীকে উদ্ধার করতে পারেননি তিনি।
নিখোঁজ তৈয়াবা খাতুনের বাবা মান্নান হোসেন জলপাইগুড়ি মর্গে দাঁড়িয়ে বলেন, "গত পরশু দিন থেকে আমরা মেয়ে ও তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকেদের খোঁজ করার চেষ্টা চালাচ্ছি । কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। আমরা সব মর্গে খুঁজে যাচ্ছি কোথাও এখনও কোনও খবর মেলেনি । মেয়ের শ্বশুর মনসুর মিঞা (50), মেয়ে তৈয়াবা খাতুন (24) ও মেয়ের দেওর আরমান আলি (20) কারও এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে জামাই ফিরোজ আনিসারি (25) বেঁচে আছে।"
আরও পড়ুন: বিকেল থেকে কমবে বৃষ্টি, পুজোয় আগে বর্ষার বিদায় নিয়ে সংশয়
এদিকে পদ্মশ্রী করিমুল হক বলেন, "তিস্তা নদীতে অনেক মৃতদেহ ভেসে আসছে। আমি সবার কাছে অনুরোধ করব যে মৃতদেহগুলো দেখা গেলে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে খবর দেওয়ার জন্য।"