জলপাইগুড়ি, 5 মে: জামিনের আবেদন খারিজ হল গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ধৃত পীর মহম্মদের ৷ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সেনাছাউনির বিভিন্ন তথ্য ও ছবি পাচারের অভিযোগে গত 23 সেপ্টেম্বর পীর মহম্মদকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ । বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চে পীর মহম্মদের হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলেন আইনজীবী অর্জুন চৌধুরী । কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায় ৷
তিনি ছিমছাম জীবনযাপন করতেন ৷ ঋণের ব্যবসার আড়ালে চলত গুপ্তচরবৃত্তি ৷ পাকিস্তানের হয়ে কালিম্পংয়ে বসে কাজ চালাতন পীর । ধৃত পীরের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টে মামলা দায়ের করা হয় । পীরের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগের একাধিক প্রমাণ এদিন আদালতে পেশ করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় । তিনি দাবি করেন, হোয়াটসঅ্যাপে সেনাছাউনির ছবি পাকিস্তানে পাঠিয়েছেন এই সন্দেহভাজন । তাছাড়া নিয়মিত সে দেশে ফোন করেছেন এমন প্রমাণও আদালতে পেশ করা হয়েছে । এরপরই সার্কিট বেঞ্চ জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে বলে জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী ।
পাক গুপ্তচর বৃত্তির অভি্যোগে ধৃত পীর মহম্মদের আইনজীবী অর্জুন চৌধুরী জানান, গত 21 সেপ্টেম্বর কালিম্পংঙের বাসিন্দা পীর মহম্মদকে তলব করে এসটিএফ । প্রথমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের ছেড়ে দেওয়া হয় । এর দু’দিন পর 23 সেপ্টেম্বর পীরকে গ্রেফতার করে এসটিএফ ৷ এরপর কালিম্পং থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় তাকে । পাকিস্তান থেকে আসা একটি ফোন কলের ভিত্তিতেই পীর মহম্মদকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ । এস টি এফ- এর অভিযোগ ছিল, পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ সংস্থার হয়ে কালিম্পং থেকেই গুপ্তচর বৃত্তি কাজ করত পীর মহম্মদ ।
পীরের আইনজীবী অর্জুন চৌধুরীর আরও দাবি ছিল, দু’জন ব্যক্তি পীর মহম্মদকে জানিয়ে ছিলেন, বাইরে থেকে একটি ফোন কল আসবে । ফোন কলটি ধরলে টাকা পাওয়া যাবে । সেই লোভের বশবর্তি হয়েই ফোন ধরে ছিলেন পীর মহম্মদ । যারা প্রলোভন দেখিয়েছিলেন তাদের সম্পর্কে এসটিএফ-কে আগেই জানানো হয়েছে । তবু তাদের গ্রেফতার করেনি এসটিএফ । বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী অর্জুন চৌধুরী ।
সরকার পক্ষের আইনজীবী জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের আইনজীবী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, পীরের মোবাইলে পাকিস্তান থেকে একাধিক ফোন এসেছে বলে জানতে পেরেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ । মূলত হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমেই গুপ্তচরের কাজ করতেন তিনি । পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা পীর মহম্মদকে অনেক বার ফোন করত বলে তদন্তে উঠে এসেছে । কালিম্পং থেকে ফোনে পাকিস্তানে তথ্য সরবরাহ করতো পীর । শুধু তাই নয় ধৃত পাক গুপ্তচরের মোবাইলে সেনা ছাউনির একাধিক ছবিও পাওয়া গিয়েছে । বেশকিছু ছবি ডিলিট করে দিয়েছে সে । সেই ছবি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ । দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পর পীর মহম্মদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটে বেঞ্চের এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: চোখে সানগ্লাস, হাতে ডিঙ্কস; সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে অমৃতপালের নতুন সেলফি