জলপাইগুড়ি, 27 মার্চ: দু'দিনের সফরে সোমবার রাজ্যে এসেছেন ভারতের প্রথম মহিলা আদিবাসী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ তার মধ্য়েই ন্যক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী হতে হল জলপাইগুড়ির মেটেলিবাসীকে ৷ স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা আদিবাসী নেতা বিরসা মুণ্ডার মূর্তি ভাঙার (Birsa Munda Statue Vandalized) অভিযোগ উঠল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ৷ এর প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই বিক্ষোভে সামিল হন এলাকার আদিবাসীরা ৷ স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য, বাংলায় যে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ ৷ অন্যদিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মূর্তি ভাঙার পিছনে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে ৷
জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার মহকুমার অন্তর্গত মেটেলির ইংডং চা বাগান মোড়ে বিরসা মুণ্ডার একটি মূর্তি ছিল ৷ সোমবার সকালে এলাকাবাসী দেখেন, সেই মূর্তিটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৷ প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, রবিবার রাতে কেউ বা কারা মূর্তিটি ভেঙে দিয়ে গিয়েছে ৷ এর প্রতিবাদে সকাল থেকেই রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ দলমত নির্বিশেষে সেই প্রতিবাদে সামিল হন এলাকার তৃণমূল ও বিজেপি নেতারা ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় স্থানীয় থানার পুলিশ ৷ তারা দোষীকে বা দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেওয়ার পর অবরোধ ওঠে ৷
নাগরাকাটার বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা পুনা ভেংরা এই প্রসঙ্গে বলেন, তাঁরা পুলিশকে 72 ঘণ্টা সময় দিয়েছেন ৷ এর মধ্যেই ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে আইনত পদক্ষেপ করতে হবে ৷ পুলিশ যদি তেমনটা করতে পারে তো ভালো, তা না হলে আরও বড় আন্দোলনে নামবে মেটেলির আদিবাসী সমাজ ৷
অন্যদিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা জোসেফ মুণ্ডা বলেন, এই ঘটনার পিছনে চক্রান্ত থাকতে পারে ! তাঁর প্রশ্ন, রাষ্ট্রপতির বঙ্গসফরের ঠিক আগের রাতে কেন এমন ঘটনা ঘটল ? আসলে কেউ বা কারা বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে ! বোঝাতে চাইছে, বাংলায় আদিবাসীরা সুরক্ষিত নন ! এই অপচেষ্টা কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না ! জোসেফরা সিআইডিকে দিয়ে ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ৷ দ্রুত যাতে দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়, পুলিশ প্রশাসনের কাছে সেই দাবি রেখেছেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন: আগামী 5 এপ্রিল থেকে ফের রেল রোকো আন্দোলনের ডাক কুড়মি সমাজের
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ তদন্ত চলছে ৷ শীঘ্রই দোষীদের চিহ্নিত করে পাকড়াও করা হবে ৷ পাশাপাশি, ভবিষ্যতে যাতে এমন কোনও ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে ওই জায়গায় সিসিটিভি ক্য়ামেরা লাগানো হবে ও বাড়তি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হবে ৷