জলপাইগুড়ি, 3 জুন: ছুটিতে বাড়ি আসা হল না সাগরের। ওড়িশার বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ডুয়ার্সের এক শ্রমিকের। প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া মৃতদেহ আনা সম্ভব নয় বলে জানাল মৃতের পরিবার। দুর্ঘটনার কবলে পড়া বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়াগামী যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে ছিলেন ডুয়ার্সের ওই শ্রমিক। গতকাল বালাসোরে দুর্ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় সাগর খড়িয়ার (30)। সাগরের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু একটি হোটেলে কাজ করতেন সাগর খড়িয়া। গত তিনমাস আগে নাগরাকাটা চা বাগানের 12 জন বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে যান। সাগর তাঁদেরই একজন ৷ শনিবার বাড়িতে ফেরার কথা থাকলেও ফেরা হল না! এরপর মৃতদেহ ফেরাতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পরিবারকে ৷
সাগরের ভাই মনোজ খড়িয়া বলেন, "আমরা গরিব মানুষ মৃতদেহ কীভাবে আনব বুঝে উঠতে পারছি না। প্রশাসন যদি সহযোগিতা না-করে আমরা কোথায় যাব। মৃত সাগরের বাড়িতে দুই বাবা, মা-সহ এক ভাই ও এক বোন আছে। আমার ভাই যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন কাজের জন্য। 12 জন বাড়ি ফিরছিলেন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান সাগর খড়িয়া।" আরও এক শ্রমিক করমনাথ সিং আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত করমনাথের মা চন্দ্রবতী সিং বলেন, "ছেলে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন কিন্তু এত দূরে থেকেও যেতে পারছি না। আমরা সরকারি সাহায্য চাই।"
জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার তৃণমূল ব্লক সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, "সাগরের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে। তাঁর মৃতদেহ আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি বাকি 10 জনের বাড়িতে ফেরার জন্য টিকিট খরচ বাবদ 6 হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওড়িশায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। বাকিদের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। একজনের হাত-পা কেটেছে ৷ চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাকি 10 জন কলকাতায় ফিরে এসেছে। কলকাতা থেকে তারা বাসের টিকিট কেটে নিয়েছে। আমিই তাদের ফিরিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আমরা মৃতদেহ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি। এদিকে ময়নাগুড়ি ও ফালাকাটা কয়েকজন ব্যক্তি আহত হয়েছে এই দুর্ঘটনা বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রেলমন্ত্রককে অবহেলা করার অভিযোগ মমতার