নাজিরগঞ্জ, 22 অগাস্ট : স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সংসার । কিন্তু সংসারে শান্তি নেই । আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যেরও অভাব । তাই সমাধান পেতে তান্ত্রিকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজু সাহানি । তান্ত্রিক নিদান দিয়েছিল, সংসারে শান্তি ও আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য আনতে প্রতি সোমবার স্ত্রীর স্নানের পর মারতে হবে । তান্ত্রিকের নিদান মেনে প্রতি সোমবার চলত স্ত্রীকে মারধর । এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সোমবার বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন রাজুর স্ত্রী মায়া । নাজিরগঞ্জ তদন্তকেন্দ্রের হাঁসখালি পোল এলাকার ঘটনা ।
শিবপুরের বাসিন্দা মায়া । রাজু পেশায় রেলের কর্মী । এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে হাঁসখালি পোলে নিজেদের বাড়ি তৈরি করে থাকেন । সংসারে আর্থিক অভাব দেখা দেয় । শুরু হয় অশান্তি । এই অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় এক তান্ত্রিকের সান্নিধ্যে আসেন রাজু । নিজের সমস্যার কথা তান্ত্রিককে জানান রাজু । সব কথা শুনে সমাধানও বলে দেয় তান্ত্রিক । কিন্তু সমাধানের কথা জানতে পারার পর থেকেই হতবাক এলাকার সকলে । কী ছিল সেই সমাধান ?
জানা যায়, ওই তান্ত্রিক না কি রাজুকে বলেছিল সংসারে শান্তি ও আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে প্রতি সোমবার স্ত্রীর স্নানের পর মারতে হবে । সংসারে শান্তি ফেরাতে উদগ্রীব রাজু তান্ত্রিকের এই নিদান মেনে নেন । প্রতি সোমবার মায়াকে মারধর করতে শুরু করেন । স্বামীর এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এর আগেও দু'বার আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন মায়া । কিন্তু সন্তানদের কথা ভেবে প্রতিবারই পিছপা হন তিনি ।
সোমবার(19অগাস্ট) মায়াকে ফের মারধর করেন রাজু । এরপর কাজে বেরোবে বলে মায়ার থেকে চা চান । তখন রাজুকে মায়া বলেন, তিনি বিষ খেয়ে নিয়েছেন । তখনই মায়ার গলায় আঙুল দিয়ে বমি করান রাজু । পরে হাওড়ার রেল হাসপাতালে ভরতি করেন মায়াকে । সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় । মায়ার মৃত্যুর পর থেকেই পলাতক রাজু । যদিও বাবার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে সাহানি দম্পতির ছেলে । সে জানায়, 15 অগাস্ট তার বাবা মজা করে মাকে তান্ত্রিকের নিদানের কথা বলে । তারপর থেকেই রাজুর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন মায়া । সোমবার রাজু মায়াকে রান্নার কথা জিজ্ঞাসা করায় তিনি বিষ খাওয়ার কথা জানান ।
ঘটনায় সাঁকরাইল থানায় রাজুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মায়ার বাবার বাড়ির লোক । রাজুর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ।