হাওড়া, 3 জুলাই: বর্ষার একটানা বৃষ্টি সেভাবে শুরু হয়নি । কিন্তু এরই মধ্যে ডেঙ্গি থাবা বসাল হাওড়াতে (Teenage Died by Dengue in Howrah)। হাওড়া ডোমজুড় এলাকার সলপের বাসিন্দা রবি হাজরার মৃত্যু হল ডেঙ্গির প্রকোপে। সরকারি তথ্যানুযায়ী এ বছর ডেঙ্গিতে প্রথম মৃত্যু হল রাজ্যে ।
পরিবার সূত্রে খবর, গত মাসের 16 জুন থেকেই জ্বর নিয়ে ভুগছিল বছর ষোলোর রবি। প্রথমে পাড়ার স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে ছেলেকে নিয়ে যান বাবা গৌতম হাজরা। তবে চিকিৎসক জানান, তাঁর ছেলের ভাইরাল জ্বর হয়েছে ।
ওইদিন ওষুধ খাওয়ার পরে রবি সুস্থ থাকে। পাড়ার মাঠে খেলতেও যায় সে। ফের জ্বর এলে চিকিৎসক ডেঙ্গির পরীক্ষা করাতে বলেন। সেইমতো রবির ডেঙ্গি টেস্টের রিপোর্টে ডেঙ্গি ধরা পরে। চিকিৎসক পরামর্শে তাকে হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা করার পর সে ধীরে-ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে বলেই জানিয়েছে পরিবার । এরপর 21 জুন ভোর 3.10 নাগাদ তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন : করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা কমে 16 হাজারে, বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণের হার
মৃত রবির বাবা গৌতম হাজরা জানান, গত 16 জুন ছেলের জ্বর হলে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতি হওয়ায় তাকে হাওড়া হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথাও জানানো হয়। আর তার পরের দিন ভোরে হঠাৎ ছেলের নাক দিয়ে রক্ত বেরোয়। এরপরই ছেলের মৃত্যু হয়।
যদিও তিনি জানান, তার ছেলের ভালো চিকিৎসা করছিলো হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কিন্তু কীভাবে এটা হয়ে গেল তা চিকিৎসক ও তিনি নিজে কিছুই বুঝতে পারলেন না। ওই এলাকাতে এখনও 7-9 জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বলেই জানান গৌতমবাবু। স্থানীয় বাসিন্দা কবিতা সাধুখাঁ অভিযোগ করে বলেন, "এই এলাকাতে নর্দমা পরিষ্কার হয় না। আমফানের সময় একবার পরিষ্কার হলেও তারপর দু'বছর কেটে গেলেও তা আর পরিষ্কার করা হয়নি। রবির মৃত্যুর পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হুঁশ ফিরেছে। তড়িঘড়ি এলাকায় এসে পরীক্ষা করে নর্দমা ও মাঠকে মশার আঁতুরঘর বলে চিহ্নিত করেছেন।"
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, "যদি আগে থেকে নর্দমাগুলো পরিষ্কার করার কাজ হত তাহলে এই বাচ্চাটার জীবন যেত না। রবির পরে আরও অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে বলেই দাবি করেছেন তিনি। এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ থাকলেও কারও কোনও হেলদোল নেই। মুখে সুরক্ষার কথা বললেও কার্যক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে বেশকিছু মানুষের ডেঙ্গি হলেও পঞ্চায়েতের ঘুম ভাঙেনি।"
আরও পড়ুন : রাজ্যে বন্ধ প্রায় 7 হাজারের বেশি প্রাইমারি স্কুল, উদ্বিগ্ন শিক্ষামহল