হাওড়া, 9 নভেম্বর: ঘুষের বদলে প্রশ্ন ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর পাশে দাঁড়িয়েছেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ মহুয়ার সঙ্গেও প্রতিহিংসার রাজনীতি হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ এই নিয়ে অভিষেককে পালটা কটাক্ষ করলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷
তিনি বলেন, ‘‘যেখানে দুবাইয়ের নাম জড়িত আছে, উনি (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) তো পাশে দাঁড়াবেন ৷ দুবাইয়ের প্রতি ওঁর বিশেষ প্রেম ৷ মাঝামাঝেই দুবাই যান৷ চোখ দেখাতেও দুবাই যান ৷ পেট দেখাতেও দুবাই যান ৷ আরও কী কী করতে দুবাই যান আমরা জানি না ৷’’
উল্লেখ্য, মহুয়া মৈত্র সাংসদ হিসেবে লোকসভার ওয়েবসাইটের যে লগ-ইন আইডি ও পাসওয়ার্ড পেয়েছেন, তা তিনি দর্শন হিরানন্দানি নামে এক ব্যবসায়ীকে দেন বলে অভিযোগ ৷ তার পর দুবাই থেকে সেই লগ-ইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লোকসভার ওয়েবসাইট ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷ এই প্রসঙ্গ টেনেই এ দিন সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷
পাশাপাশি এই ইস্য়ুতে এনআইএ তদন্তের দাবিও তুলেছেন তিনি ৷ বৃহস্পতিবার হাওড়ায় বিজেপির এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন সুকান্ত মজুমদার ৷ সেখানেই তিনি এই কথা বলেন ৷ মহুয়াকে নিয়ে এথিক্স কমিটির সুপারিশ প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমরা যতদূর মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তাতে শুধু খারিজ করার সুপারিশ করেনি ৷ তার সঙ্গে বলেছে যে প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত করানোর জন্য ৷ অর্থাৎ ইডি বা সিবিআইকে দিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তদন্ত করানোর জন্য বলেছে ৷’’
তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা ছেলেখেলা নয় ৷ একজন সাংসদের লগ-ইন আইডি চলে যাচ্ছে অন্য কারও কাছে ৷ পিএ-কে দিলেও বুঝতাম ৷ লগ-ইন হয়েছে দুবাই থেকে ৷ তৃণমূল বা অভিষেক কি গ্যারান্টি দিতে পারবেন ওই লগ-ইন আইডি দুবাইয়ের কোনও নাগরিক ব্যবহার করেননি ? এটা তো দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে ধোঁকা দেওয়া৷ এনআইএ তদন্ত হওয়া উচিত ৷’’
আরও পড়ুন: মহুয়ার সমর্থনে এগিয়ে এসে প্রতিহিংসার তত্ত্ব সামনে আনলেন অভিষেক
ইডির কাছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাজিরা: বৃহস্পতিবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র অফিসে গিয়ে হাজিরা দেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এই নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আজ নথি জমা করার কথা ৷ সেই জন্যই তিনি ইডি-র ডাকে গিয়েছিলেন ৷ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলে ডিভিশন বেঞ্চে যেতেন ৷ না হলে কপিল সিবালের মতো আইনজীবী যাঁর ফি অন্তত 7 লক্ষ টাকা, তাঁকে নিয়োগ করতেন ৷ নথি জমা দিতে হবে বলেই ড্রামাবাজি করে এলেন ৷ এর পর যেদিন ডাক পাবেন, সেদিন চা খাবেন এবং অনেকটা সময় সেখানে থাকতে হবে ৷’’
তৃণমূলকে আক্রমণ সুকান্তর: বালুরঘাটের সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘চুরির করার দিক থেকে তৃণমূলের ধারে কাছে কেউ নেই ৷... চুরির জন্য নোবেল চালু হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস পাবে ৷’’ অন্যদিকে মালদায় বিজেপি বিধায়ককে তৃণমূলের হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘চুরি করেছে একশো দিনের টাকা ৷ তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে বলুন ৷ চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন ৷ নরেন্দ্র মোদির পাঠানো টাকা যাঁরা খেয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই টাকা পেয়ে যাবেন ৷’’
আর বিজেপির জাতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা সম্পর্কে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘উপেক্ষা করুন ৷ এত গুরুত্ব দেওয়ার মতো ইস্যু বলে মনে হচ্ছে না ৷’’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সবটাই জানে, আগামিতে ফল দেখা যাবে; অনুপম প্রসঙ্গে বললেন সুকান্ত