ETV Bharat / state

Mahalaya 2023: বিস্মৃতির আড়ালে 'মহিষাসুরমর্দিনী'র গীতিআলেখ্যর রচয়িতা, স্মরণে বাণীকুমার

মহালয়ার ভোরে বাঙালির ঘুম ভাঙে বীরেন্দ্রকৃষ্ণভদ্রের কালজয়ী 'মহিষাসুরমর্দিনী' শুনে ৷ গ্রন্থনা ও শ্লোকপাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। সঙ্গীত পরিচালনায় পঙ্কজ মল্লিক। এর পাশাপাশি আরও একজন ছিলেন এই সৃষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে ৷ তিনি বাণীকুমার ৷ 'মহিষাসুরমর্দিনী'র গীতিআলেখ্যর রচয়িতা ৷ আজ তিনিই চলে গিয়েছেন বিস্মৃতির আড়ালে ৷

Etv Bharat
স্মরণে বাণীকুমার
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 14, 2023, 10:07 AM IST

হাওড়া, 14 অক্টোবর: সারা বছর রেডিওর খোঁজ না করলেও মহালয়ার ভোরে আগে থেকে ঝাঁড়পোচ করে রাখা রেডিওতে আকাশবাণীর সম্প্রসারিত 'মহিষাসুরমর্দিনী' শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাঙালির মননে মহালয়ার 'মহিষাসুরমর্দিনী' বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কালজয়ী ত্রয়ীর নাম। গ্রন্থনা ও শ্লোকপাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। সঙ্গীত পরিচালনায় পঙ্কজ মল্লিকের পাশাপাশি হাওড়ার এক বাসিন্দা করেছিলেন মহিষাসুরমর্দিনীর রচনা ও প্রবর্তনা। তিনি বাণীকুমার। কিন্তু কালের নিয়মে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের নাম লোকমুখে ও মননে থাকলেও অনেকেই ভুলতে বসেছেন 'মহিষাসুরমর্দিনী'র গীতিআলেখ্যর রচয়িতাকে ৷ মহালয়ার দিন আরও একবার স্মরণে বাণীকুমার ৷

1932 সালে 'প্রত্যুষ প্রোগ্রাম' শিরোনামে মহাষষ্ঠীর সকালে অনুষ্ঠানটি প্রথম সম্প্রচারিত হয় ৷ পরের বছর 1933 সালে তা সম্প্রচারিত হয় 'প্রভাতী অনুষ্ঠান' নামে ৷ 1936 সালে সেই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় 'মহিষাসুর বধ' ৷ 1937 সালে এই অনুষ্ঠানের প্রথম নাম দেওয়া হয় 'মহিষাসুরমর্দিনী'৷ যা আজও স্থায়ীভাবে রয়ে গিয়েছে। প্রথম দু’বছর অর্থাৎ 1932 ও 1933 সালে অনুষ্ঠানটি মহাষষ্ঠীর ভোরে সম্প্রচারিত হয়। 1934 সালের 8 অক্টোবর প্রথমবার ‘মহালয়া’-র সকালে গীতিআলেখ্য অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার হয়েছিল।

এই গীতিআলেখ্যর অন্যতম স্রষ্টা বাণীকুমার ৷ তাঁর আসল নাম বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য। পুরানো নথি ঘেঁটে জানা যায়, তাঁর পৈতৃক ভিটে হুগলির আঁটপুরে হলেও হাওড়ার কানপুর গ্রামের মামারবাড়িতে 1907 সালের 23 নভেম্বর জন্ম বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্যের। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতজ্ঞ পন্ডিত বিধুভূষণ ভট্টাচার্য ও অপর্ণা দেবীর বড় সন্তান ছিলেন বাণীকুমার ওরফে বৈদ্যনাথ। এছাড়াও তাঁর আরও তিন ভাই-বোন ছিলেন।

জানা যায়, হাওড়া জেলা স্কুলের পাঠ শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ (অধুনা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে প্রথম শ্রেণীতে ইংরেজির সাম্মানিক স্নাতক হন বৈদ্যনাথ। পিতা ও প্রপিতামহের মতো তাঁরও ছিল সংস্কৃতে অগাধ পান্ডিত্য। তাই তিনিও শিকড়ের টানকে অগ্রাহ্য করতে পারেননি। সংস্কৃত অধ্যয়ন করে তিনি 'কাব্যসরস্বতী' উপাধি লাভ করেন। মনে করা হয়, হাওড়া জেলা স্কুলের শিক্ষক করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্পর্শে এসে তাঁরই অনুপ্রেরণায় কাব্য রচনা শুরু বাণীকুমার। পরবর্তীকালে জীবনের অনেকটা সময় হাওড়ার কাসুন্দিয়ার সুবল কোলে লেনে কাটিয়েছেন। 1974 সালের 15 অগস্ট ইহলোক ত্যাগ করেন 'মহিষাসুরমর্দিনী'-র অন্যতম স্রষ্টা বাণীকুমার ওরফে বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য্য।

আরও পড়ুন: মহালয়া শুভ না অশুভ! তর্ক ছেড়ে জানুন আসল তথ্য

বেশ কয়েকবছর আগে খুরুট বারোয়ারির কাছে বাণীকুমারের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দাদের আক্ষেপ, মহালয়ার দিনে সেই মূর্তিতে ফুল-মালা দেওয়া হয়, আর সারাবছর তা পড়ে থাকে অনাদরে, অবহেলায়, বিস্মৃতির আড়ালে। তাঁরা আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমান প্রজন্মই বাণীকুমারকে ভুলতে বসেছে। হাওড়া জেলারই বাসিন্দা ছিলেন বাণীকুমার- এই তথ্যটুকু তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ভুলে গিয়েছেন।

হাওড়া, 14 অক্টোবর: সারা বছর রেডিওর খোঁজ না করলেও মহালয়ার ভোরে আগে থেকে ঝাঁড়পোচ করে রাখা রেডিওতে আকাশবাণীর সম্প্রসারিত 'মহিষাসুরমর্দিনী' শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাঙালির মননে মহালয়ার 'মহিষাসুরমর্দিনী' বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কালজয়ী ত্রয়ীর নাম। গ্রন্থনা ও শ্লোকপাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। সঙ্গীত পরিচালনায় পঙ্কজ মল্লিকের পাশাপাশি হাওড়ার এক বাসিন্দা করেছিলেন মহিষাসুরমর্দিনীর রচনা ও প্রবর্তনা। তিনি বাণীকুমার। কিন্তু কালের নিয়মে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের নাম লোকমুখে ও মননে থাকলেও অনেকেই ভুলতে বসেছেন 'মহিষাসুরমর্দিনী'র গীতিআলেখ্যর রচয়িতাকে ৷ মহালয়ার দিন আরও একবার স্মরণে বাণীকুমার ৷

1932 সালে 'প্রত্যুষ প্রোগ্রাম' শিরোনামে মহাষষ্ঠীর সকালে অনুষ্ঠানটি প্রথম সম্প্রচারিত হয় ৷ পরের বছর 1933 সালে তা সম্প্রচারিত হয় 'প্রভাতী অনুষ্ঠান' নামে ৷ 1936 সালে সেই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় 'মহিষাসুর বধ' ৷ 1937 সালে এই অনুষ্ঠানের প্রথম নাম দেওয়া হয় 'মহিষাসুরমর্দিনী'৷ যা আজও স্থায়ীভাবে রয়ে গিয়েছে। প্রথম দু’বছর অর্থাৎ 1932 ও 1933 সালে অনুষ্ঠানটি মহাষষ্ঠীর ভোরে সম্প্রচারিত হয়। 1934 সালের 8 অক্টোবর প্রথমবার ‘মহালয়া’-র সকালে গীতিআলেখ্য অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার হয়েছিল।

এই গীতিআলেখ্যর অন্যতম স্রষ্টা বাণীকুমার ৷ তাঁর আসল নাম বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য। পুরানো নথি ঘেঁটে জানা যায়, তাঁর পৈতৃক ভিটে হুগলির আঁটপুরে হলেও হাওড়ার কানপুর গ্রামের মামারবাড়িতে 1907 সালের 23 নভেম্বর জন্ম বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্যের। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতজ্ঞ পন্ডিত বিধুভূষণ ভট্টাচার্য ও অপর্ণা দেবীর বড় সন্তান ছিলেন বাণীকুমার ওরফে বৈদ্যনাথ। এছাড়াও তাঁর আরও তিন ভাই-বোন ছিলেন।

জানা যায়, হাওড়া জেলা স্কুলের পাঠ শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ (অধুনা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে প্রথম শ্রেণীতে ইংরেজির সাম্মানিক স্নাতক হন বৈদ্যনাথ। পিতা ও প্রপিতামহের মতো তাঁরও ছিল সংস্কৃতে অগাধ পান্ডিত্য। তাই তিনিও শিকড়ের টানকে অগ্রাহ্য করতে পারেননি। সংস্কৃত অধ্যয়ন করে তিনি 'কাব্যসরস্বতী' উপাধি লাভ করেন। মনে করা হয়, হাওড়া জেলা স্কুলের শিক্ষক করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্পর্শে এসে তাঁরই অনুপ্রেরণায় কাব্য রচনা শুরু বাণীকুমার। পরবর্তীকালে জীবনের অনেকটা সময় হাওড়ার কাসুন্দিয়ার সুবল কোলে লেনে কাটিয়েছেন। 1974 সালের 15 অগস্ট ইহলোক ত্যাগ করেন 'মহিষাসুরমর্দিনী'-র অন্যতম স্রষ্টা বাণীকুমার ওরফে বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য্য।

আরও পড়ুন: মহালয়া শুভ না অশুভ! তর্ক ছেড়ে জানুন আসল তথ্য

বেশ কয়েকবছর আগে খুরুট বারোয়ারির কাছে বাণীকুমারের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দাদের আক্ষেপ, মহালয়ার দিনে সেই মূর্তিতে ফুল-মালা দেওয়া হয়, আর সারাবছর তা পড়ে থাকে অনাদরে, অবহেলায়, বিস্মৃতির আড়ালে। তাঁরা আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমান প্রজন্মই বাণীকুমারকে ভুলতে বসেছে। হাওড়া জেলারই বাসিন্দা ছিলেন বাণীকুমার- এই তথ্যটুকু তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ভুলে গিয়েছেন।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.