হাওড়া, 22 এপ্রিল : প্যারা সুইমিংয়ে জাতীয় স্তরে তিন-তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ৷ জলে বাঁচার রসদ খুঁজে পেয়ে হারিয়েছিল সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে ৷ অথচ জীবনের লড়াইয়ে অকালেই থামতে হল সালকিয়ার অমর্ত্য চক্রবর্তীকে (National champion para swimmer Amartya Chakraborty died) ৷ 2015, 2016 এবং 2017 টানা তিন বছর জাতীয় স্তরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে অমর্ত্য উজ্জ্বল করেছিল বাংলার মুখ । কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর যা ঘটল তা মোটেই কাঙ্খিত ছিল না ৷ বুধবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নয়াদিল্লির জিবি পন্থ হাসপাতালে মৃত্যু হয় অমর্ত্যর (Amartya breathed his last at GB Pant hospital on Wednesday) ৷
ছেলের মৃত্যুর পর দুশ্চিন্তায় পড়েন অমর্ত্যর বাবা অমিতোষ চক্রবর্তী ৷ ক্রীড়ামন্ত্রক এবং প্যারালিম্পিক কমিটি অফ ইন্ডিয়া থেকে আর্থিক সহায়তার জন্য বারবার অনুরোধ করেও বিন্দুমাত্র সাহায্য পাননি তিনি । জীবনের সমস্ত সঞ্চয় ছেলের চিকিৎসায় ব্যয় করেছিলেন তিনি ৷ শেষবেলায় দিল্লি থেকে ছেলের মরদেহ আনতেও ব্যাপক আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হল অমিতোষ বাবুকে ৷ শেষমেশ তাঁর সহকর্মীদের অর্থসাহায্যে দিল্লি থেকে ফেরান সম্ভব হয় অমর্ত্যের মৃতদেহ। তবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে চিকিৎসার পর সন্তানহারা পিতাকে গ্রাস করেছে অর্থাভাবের আতঙ্ক ৷
জন্ম থেকেই জটিল রোগে জর্জরিত ছিলেন অমর্ত্য। যার জেরে এশিয়ান স্তর থেকে বাদ পড়তে হয় প্রতিভাবান সাঁতারুকে । তাঁর শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে অমর্ত্যর নাম এশিয়ান স্তর থেকে বাদ দেয় প্যারালিম্পিকস কমিটি ৷ এরপর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দীর্ঘ দু’বছর পশ্চিমবঙ্গ, চেন্নাই এবং দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও ছেলেকে ঘরে ফেরাতে অপারগ বাবা অমিতোষ চক্রবর্তী জানান, জীবনের সমস্ত সঞ্চয় নিঃশেষ করে দিয়েছেন ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে। বহু জায়গায় হাত পেতেও কোনও সাহায্য মেলেনি। সরকারকেও পাশে পাইনি ৷ এমনকী পাশে দাঁড়ায়নি কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও ৷
আরও পড়ুন : ‘দেশ সম্মান দেয়নি’, পদ্মশ্রী না পাওয়ার আক্ষেপ অশীতিপর জয়দীপের
মৃত্যুর পর ছেলের দেহ ফেরানোর টাকাও তাঁর কাছে ছিল না বলেও আক্ষেপ করেন মৃত সাঁতারুর বাবা ৷ বুধবার সন্ধেয় কার্গো বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় অমর্ত্য চক্রবর্তীর মৃতদেহ। বুধবার রাতেই সৎকার করা হয় তাঁর মরদেহ।