হাওড়া, 19 এপ্রিল : প্রায় সাড়ে তিন বছর সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও হাওড়া পৌরনিগমের নির্বাচন হয়নি (Howrah Municipal Corporation)। রাজ্যের অন্যান্য সবক'টি পৌরসভার নির্বাচন সমাপ্ত হয়ে গেলেও আইনি জটে ফেঁসে রয়েছে বালি ও হাওড়া পৌরনিগমের পৃথকীকরণ বিল। পৌরবোর্ড না-থাকার জন্যে দিনের পর দিন নাগরিক পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। জমা জল থেকে নিকাশি, রাস্তা সারাইয়ের কাজ-সহ পরিশ্রুত পানীয় জলের পরিষেবা নিয়ে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ পৌরনিগমের বাসিন্দারা।
এলাকার 49টি পার্কের বেহাল অবস্থা। দীর্ঘ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আগাছা ও জঞ্জালের স্তূপে পরিণত হয়েছে নিগম এলাকার পার্কগুলি। পরিস্থিতি এমনই যে, ওই পার্কগুলিতে ছোট বাচ্চাদের খেলতে পাঠাতে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তাদের অভিভাবকরা। প্রাতঃভ্রমণকারীদের কাছেও দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে পৌরনিগমের পার্কগুলি। তবে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পৌরনিগমের তরফ থেকে চলতি বাজেটে হাওড়া পৌরনিগমের অন্তর্গত 50টি ওয়ার্ডের 49টি পার্ক নতুন করে সাজাতে ও সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করতে 80 লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। ওই নির্ধারিত অর্থে চলতি মাসের শেষ থেকেই পার্কগুলির সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ।
হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী পার্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণ আর সৌন্দর্যায়ন নিয়ে পার্ক ও উদ্যান দফতরের ইঞ্জিনিয়ার এবং অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রতিটি পার্কের ভিতরে গজিয়ে ওঠা ঝোপঝাড় কেটে তার সৌন্দর্যায়ন করা হবে। ছোট বাচ্চারা যাতে সেখানে নির্বিঘ্নে খেলাধুলো করতে পারে। এছাড়াও প্রয়াত শিশু সাহিত্যিক হাওড়ার বাসিন্দা নারায়ণ দেবনাথের নামেও একটি পার্কের নামকরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা যায়। তবে সংস্কারের ওই তালিকায় দু'কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন ‘মা-মাটি-মানুষ উদ্যান’ বাদ থাকছে। ওই পার্কের উপর দিয়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উড়ালপুল যেতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন : তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন হাওড়া পৌরনিগমের প্রাক্তন মেয়র
পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, "পার্কের রক্ষীদের আলাদা করে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। পৌরনিগমের সঙ্গে তাঁরা চুক্তি ভিত্তিক কাজ করবেন।" এছাড়াও পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ওই কর্মীরা ঠিকমতো করছেন কি না, তার উপরে বিশেষ নজরদারিও রাখা হবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আশাবাদী এই প্রকল্প শেষ হলে প্রতিটি পার্কের আবর্জনা সরিয়ে সেগুলির আমূল সংস্কার করা সম্ভব হবে। মুখ্য প্রশাসকের দাবিকে নস্যাৎ করে রাজ্য বিজেপি নেতা উমেশ রাই অভিযোগ করেন, "নতুন করে আবার একটা দুর্নীতির সূচনা হতে চলেছে পৌরনিগমে। নতুন করে এই সাধারণ মানুষের 80 লক্ষ টাকা নষ্ট হতে যাচ্ছে।" একবার তৈরি করে তার রক্ষণাবেক্ষণ না করে পুনরায় সেখানে অর্থের অপচয় করা হবে বলেই তিনি দাবি করেন।