হাওড়া, 22 জুন : জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে এগারো বছর ৷ 2010 সালে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল শতাধিক মানুষের ৷ সেই সময় মৃতদের পরিবারগুলিকে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল আর্থিক ক্ষতিপূরণ ৷ এগারো বছর পর ফের আলোচনায় উঠে এসেছে জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনা ৷ কারণ, অমৃতাভ চৌধুরী নামে জীবিত এক ব্যক্তির পরিবার তাঁকে মৃত দেখিয়ে ক্ষতিপূরণ পেয়েছিল ৷ সিবিআই তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ৷ আর এই পরিস্থিতিতে নিজেদের মেয়ের খোঁজ পাওয়া নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে বেলুড়ের বাত্রা পরিবার ৷
2010 সালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল । এই দুর্ঘটনায় বহু মানুষ নিহত হন, আহতের সংখ্যাও ছিল অনেক । বহু মানুষের দেহ ওই রেলের কামরার মধ্যে চাপা পড়েছিল । এই দুর্ঘটনাতেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন বেলুড়ের এক সরকারি আবাসনের একই পরিবারের তিন সদস্য । দু‘জনের দেহ পরে খুঁজে পাওয়া গেলেও এখনও পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি এই পরিবারের মেয়ে স্নেহা বাত্রার ৷ যেসময় স্নেহা নিখোঁজ হয় তখন তাঁর বয়স ছিল 18 বছর ৷
এরপর কেটে গিয়েছে এগারোটা বছর ৷ বাত্রা পরিবারের অভিযোগ, মেয়ের সন্ধান পাওয়া তো দূর তাঁকে খুঁজতে নূন্যতম সাহায্য মেলেনি সরকারের তরফ থেকে ৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে যোগাযোগ করেও মেলেনি সাহায্য ৷ নিখোঁজ সেই মেয়ের ছবিই এখনও আঁকড়ে দিন গুনছেন মেয়ে হারানো অসহায় বৃদ্ধ পিতা । সেই ঘটনার কথা স্মরণ করলেই চোখ ভেসে যায় জলে । বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে ওঠে ।
ঘটনার আগের দিন রাতে হাওড়ার নতুন কমপ্লেক্সের 21 নম্বর প্লাটফর্মে এসে দাঁড়িয়েছিল জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস । নিজে পরিবারের তিনজন সদস্যকে কোচ নম্বর এস-3, সিটে বসিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন রাজেশ ৷ এই প্রসঙ্গে রাজেশকুমার বাত্রা জানান, রাতে হাওড়া স্টেশনে মেয়ে, স্ত্রী ও ছেলেকে ট্রেনে তুলে দিয়ে বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে মেদিনীপুর থেকে ফোন আসে জ্ঞানেশ্বরী ট্রেনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর মেদিনীপুর ছুটে গিয়ে সেখানে আহত ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় ছুটে আসেন। একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন । চারদিন পর তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়। তার মধ্যেই তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন : Jnaneswari accident : জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডে অমৃতাভ ও তাঁর বাবার ডিএনএ পরীক্ষা করবে সিবিআই
কিন্তু আজও মেয়ে স্নেহা বাত্রার কোনও খোঁজ তিনি পাননি। সে মৃত না জীবিত সেই সম্বন্ধেও কোনও সম্যক ধারণা নেই বাত্রা পরিবারের সদস্যদের । এখন নতুন করে জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনা নিয়ে সিবিআইয়ের তদন্তের প্রেক্ষিতে আশায় বুক বাঁধছেন এই পরিবার। তাঁদের দাবি, ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হোক ও তাঁর নিখোঁজ মেয়ে স্নেহার সঠিক সন্ধান দিক সরকার ।