হাওড়া, 12জুলাই : ছিল না কোরোনা পরীক্ষার রিপোর্ট । অসুস্থ অবস্থায় একাধিক হাসপাতাল ঘুরতে হয়েছে তাঁকে নিয়ে । কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের উপসর্গগুলি প্রকট হয়েছিল তাঁর মধ্যে । শেষে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অজয় সোমকে(52) । চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । এই মৃত্যুতে জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং কোরোনা পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় গাফিলতিকেই দোষ দিচ্ছে অজয়ের পরিবার ।
এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শিবপুরের বারুইপাড়া ফাস্ট বাই লেনের বাসিন্দা ছিলেন অজয় সোম । কয়েকদিন আগে জ্বর, সর্দি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয় । 9 জুলাই কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে নবনীড় নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা করা হয় । চিকিৎসক কোরোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন ।
10 জুলাই হাওড়া জেলা হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিকের কর্মীরা তাঁর সোয়াবের নমুনা সংগ্রহ করে । ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে সেই নমুনা পাঠানো হয় । এক থেকে দুইদিনের মধ্যে রিপোর্ট আসার কথা । কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা এখনও হাতে রিপোর্ট পায়নি । এইদিকে গতকাল অজয়ের অসুস্থতা বাড়তে থাকে । শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার কারণে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে পরপর চারটি হাসপাতালে নিয়ে যান । কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোরোনা রিপোর্ট ছাড়া তাঁকে ভরতি নিতে অস্বীকার করে ।
অবস্থার অবনতি হওয়ার পর অজয়কে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার হয় গতকাল বিকেলে । সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
অজয়ের ভাইয়ের অভিযোগ, COVID-19 রিপোর্ট হাতে পেলে হাসপাতলে ভরতির সুযোগ পেতেন । কিন্তু হাতে রিপোর্ট না থাকায় কার্যত বিনা চিকিৎসায় তাঁর দাদা মারা গেছেন । এই ব্যাপারে তাঁরা হাওড়া জেলা হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেন ।
হাওড়ার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস জানান, প্রতিদিন হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে 20জনের নমুনা পাঠানো হয় স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে । গোটা জেলা থেকে প্রায় 450টি নমুনা পাঠানো হয় । এত নমুনার একসঙ্গে রিপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছে । সেজন্য কোনও কোনও ক্ষেত্রে রিপোর্ট হাতে দিতে দেরি হচ্ছে । তবে এইক্ষেত্রে কী হয়েছে তা পরিবারের সদস্যরা লিখিত অভিযোগ জানালে পুরো ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন ।