হাওড়া, 3 এপ্রিল: রবিবার রাত 9টা নাগাদ বেলুড় মঠে গঙ্গাতীরের পাশে মঠের অন্যান্য সন্ন্যাসীদের উপস্থিতিতে স্বামী প্রভানন্দজির শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় বেলুড় মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সহসভাপতি স্বামী প্রভানন্দজির জীবনবসান ঘটে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলুড় মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের ভাইস প্রেসিডেন্টের প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শোকবার্তা পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বেলুড় মঠ সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর শনিবার সন্ধ্যা 6.50 মিনিটে শিশুমঙ্গল সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে প্রয়াত হন স্বামী প্রভানন্দ। ওই দিন রাতেই তাঁর পার্থিব দেহ নিয়ে আসা হয় বেলুড় মঠে। রবিবার সকাল 6টা থেকে রাত 8টা পর্যন্ত বেলুড় মঠের সংস্কৃতি ভবনে স্বামী প্রভানন্দজির দেহ ভক্ত এবং দর্শকদের জন্য শায়িত রাখা হয়। বেলুড় মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সঙ্ঘাধ্যক্ষকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তাঁর অগণিত ভক্তবৃন্দ। গতকাল শুধুমাত্র বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীদের উপস্থিতিতে অন্তরের শ্রদ্ধা ও চোখের জলে মঠ চত্বরেই স্বামী প্রভানন্দজিকে সমাধিস্থ করা হয়।
কর্মজীবনে ইংরাজি এবং বাংলা ভাষায় বহু গ্রন্থ রচনা করেন প্রভানন্দজী। তাঁর লেখা বাংলা বইয়ের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য শ্রীরামকৃষ্ণের অন্ত্যলীলা (দুই খণ্ডে), ব্রহ্মানন্দ চরিত, সারদানন্দ চরিত ও রামকৃষ্ণ মঠের আদিকথা। ইংরাজী ভাষায় তাঁর লেখা, "First Meetings with Sri Ramakrishna এবং Early History of Ramakrishna Movement" শীর্ষক গ্রন্থাবলী সুপ্রসিদ্ধ। সুবক্তা প্রভানন্দজী বহু জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আলোচনাসভায় অংশগ্রহণ করেছেন। মহারাজের সুচিন্তিত বক্তৃতাবলী তাঁর মেধা ও পাণ্ডিত্যের সাক্ষ্য বহন করে।
আরও পড়ুন: বেলুড় মঠে পালিত হল রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের জন্ম মহোৎসব
স্বামী প্রভানন্দজীর জ্ঞানস্পৃহা ও গবেষণাস্পৃহা সর্বজনবিদিত। তাঁর অসাধারণ মেধা, পাণ্ডিত্য, সেবাপরায়ণতা ও ত্যাগ-তপস্যাপূতঃ জীবনের জন্য তিনি ছিলেন বহুমানিত। সর্বোপরি সঙ্ঘসেবায় তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। তাঁর মহাপ্রয়াণে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল বলেই জানিয়েছে বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ। দেশ-বিদেশে প্রায় 50 হাজারের বেশি ভক্তকে দীক্ষা দিয়েছেন স্বামী প্রভানন্দজী, এমনটাই বেলুড় মঠ সূত্রে জানা গিয়েছে।