হাওড়া, 6 মার্চ : ভারতের জাতীয় পতাকাই খারকিভে আমাদের রক্ষা করেছে, এমনটাই বললেন খারকিভ ফেরত দেবারতি দাস । মেয়ে ঘরে ফিরলেও এখনও উৎকণ্ঠা কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে । ফিরেও যেন কাটছে না আতঙ্কের সেই রাতগুলো । যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ফিরে ইছাপুরের শিয়ালডাঙ্গার দেবারতি শোনালেন বাড়ি ফেরার রোমহর্ষক কাহিনি (Howrah Student Returns Home from Ukraine) ।
ভয়ঙ্কর ও অকল্পনীয় অভিজ্ঞতার মধ্যে কেটেছে দিনগুলো । বিস্ফোরণ আর গোলাগুলির মধ্যেই প্রায় 10 কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছে । শেষে ট্রেনে করে ইউক্রেনের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছন । সেখান থেকে আবার সীমান্তে 9 ঘণ্টার অপেক্ষা ৷ তারপর পোল্যান্ডে ঢুকে অবশেষে ভারতীয় দূতাবাসে পৌঁছন । ফেব্রুয়ারি 27 তারিখেই দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছিল খারকিভ ছাড়তেই হবে । তবু পাঁচ দিন বাঙ্কারে কাটিয়ে দু'হাজার জন পড়ুয়াকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গলিপথে পৌঁছায় বোকজাল রেল স্টেশনে । আগের চেনা রাস্তা দেখে চেনার উপায় ছিল না । গোটা শহরটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল । চারিদিকে তখন বোমা ফাটছিল, চলছিল গুলি আর তারই মাঝে তাঁরা ভারতের জাতীয় পতাকা সামনে ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ।
বোকজাল স্টেশনে ঢোকার মুখেই পরপর তিনটি বোমা বিস্ফোরণ হয় । সেখান থেকে কোনওভাবে মেট্রোর বাঙ্কারে পৌঁছে আশ্রয় নেন তাঁরা । তারপরে অনেক্ষণ অপেক্ষা করার পর পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে স্টেশনে ঢোকেন তাঁরা । সেখানে ট্রেনে আগে ইউক্রেনের বাসিন্দারা ওঠেন ৷ আগে মহিলাদের আর একদম শেষে পুরুষদের ট্রেনে ওঠার ব্যবস্থা ছিল । সেখান থেকে ট্রেনে করে পোল্যান্ডের সীমান্তে পৌঁছন ।
দেবারতি জানান, এখনও সীমান্তে অনেকে রয়েছেন । চাইছেন, পরিস্থিতি আবার দ্রুত স্বাভাবিক হোক, যাতে পড়াশোনা শেষ করতে পারেন । মেয়ে ঘরে ফিরে আসাতে পরিবারের উৎকণ্ঠা কেটেছে । তবে অসমাপ্ত পড়াশোনা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও মেয়েকে ফিরে পাওয়াটাই বড় বাবা-মার কাছে ।