কলকাতা, 3 আগস্ট: চাকরি দেওয়ার নাম করে একাধিক মহিলার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠল । প্রতারককে চড় মারলেন এক মহিলা । এ নিয়ে ডোমজুড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রতারিতরা । বুধবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ডোমজুড় পঞ্চায়েত অফিসে (Fraud in the Name of Giving Employment)।
এদিন বেলায় ডোমজুড় বিডিও গার্গী দাসের ঘরের সামনে দুই মহিলা প্রকাশ্যে চড় মারেন এক ব্যক্তিকে । সেই দৃশ্য ঘরের ভিতর থেকে বিডিও সিসি টিভিতে দেখে তাঁদের ভেতরে ডেকে পাঠান । এরপর দুই মহিলা ও ওই ব্যক্তির থেকে সমস্ত ঘটনা তিনি শোনেন । মাকড়দহ এলাকার বাসিন্দা অনিতা হাজারি । তাঁকে বিডিও অফিস থেকে নিজের প্রভাব খাটিয়ে চাকরি করিয়ে দেওয়ার টোপ দেয় মাকড়দহেরই অপর এক বাসিন্দা রাজেশ চক্রবর্তী । অনিতা হাজরার স্বামীর বন্ধু ওই প্রতারক রাজেশ চক্রবর্তী । তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিডিও অফিসে আইডিওর নাম করে অনিতা দেবীর থেকে কুড়ি হাজার টাকা চায় ।
আরও পড়ুন: 'আরেকটু সময় দিন সমস্যার সমাধান হবে,' চাকরি প্রার্থীদের আশ্বাস কুণালের
প্রতিবেশী ও পরিচিত বলে বিশ্বাস করে তাঁকে ওই টাকা দিয়ে দেন ওই গৃহবধূ । পাশাপাশি তার সমস্ত কাগজপত্র নেন তিনি । এরপর মাসের পর মাস কেটে গেলেও আদতে চাকরি পাননি অনিতা হাজরা । এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে আরও তিন হাজার টাকা হাতিয়ে নেন রাজেশ চক্রবর্তী । এরপর প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেড়ে তাঁরা ওই প্রতারকের থেকে টাকা ফেরৎ দেওয়ার চাপ দেন । তবে যখনই তার সঙ্গে দেখা হত এবং চাকরির কথা বলত ৷ তখনই প্রতারক রাজেশ চক্রবর্তী শীঘ্রই চাকরি হয়ে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে । তার মোবাইল ফোন সর্বদাই বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ । আজকে তাই ডোমজুড় থানাতে ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা করেন তিনি ।
অনিতা হাজারি জানান, শুধু তিনি নন, তার মতো আরও 5 জনের বেশি লোককে সে প্রতারিত করেছে । পাশাপাশি অপর এক প্রতারিত মৌমিতা পাল অভিযোগ করেন, তাঁর থেকে তিরিশ হাজার, তাঁর মাসি, বান্ধবী ও তাঁর দিদির থেকে প্রায় পঁচাত্তর হাজার টাকার মতো হাতিয়েছে সে । তিনি টাকা দেওয়ার আগে বিস্তারিতভাবে বোঝার চেষ্টা করেন যে তাঁকে প্রতারিত করা হচ্ছে কিনা । তবে ওই প্রতারক যেভাবে গোটা বিষয়টিকে উপস্থাপনা করেছিল তাতে সন্দেহ হলেও তিনি বিশ্বাস করেছিলেন ।
আরও পড়ুন: দ্রুত স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে চুঁচুড়ায় বিক্ষোভে 4 জেলার টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ডোমজুড়ের বিডিও গার্গী দাস জানান, তিনি সিসিটিভির ফুটেজে ওই ব্যক্তিকে চড় মারেন । এরপর গোটা ঘটনা তিনি জানেন ওই দু'জন মহিলার মুখ থেকে । জানার পর ওই ব্যক্তিও সমস্ত ঘটনা স্বীকার করেন । এরপর বিডিও ডোমজুড় থানায় খবর দেন । পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যায় । পাশাপাশি বিডিও জানান, ওই ব্যক্তি ডোমজুড় বিডিয়োর কোনও কর্মী নন ।
ঘটনা চক্রে বুঝতে পেরে তিনি ও আরও যারা প্রতারিত তাঁরা সকলে মিলে এদিন ডোমজুড় থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রতারক রাজেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে । গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ডোমজুড় থানার পুলিশ ।