হাওড়া, 13 জানুয়ারি: মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন আরটি-পিসিআর টেস্ট না-থাকলে গঙ্গাসাগর মেলায় যাওয়া যাবে না। একইসঙ্গে যতটা সম্ভব কম পুণ্যার্থীকে গঙ্গাসাগরে যাওয়ার আবেদন জানান তিনি (Gangasagar Mela)। পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ মেনে চলারও পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান থেকে যাঁরা আসছেন তাঁদের সবাইকে স্বাগত। নিজেদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন ৷ মেলা কমিটির সঙ্গে সহযোগিতা করুন। কিন্তু কলকাতার বাবুঘাটের ক্যাম্পে টেস্টের ব্যবস্থা থাকলেও সেই ব্যবস্থা নেই হাওড়ার ক্যাম্পে। গতকাল থেকেই বাইরের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। দূরপাল্লার ট্রেন থেকে নেমে টেস্ট ছাড়াই বাসের টিকিট কেটে উঠে পড়ছেন বাসে। নজরদারির কোনও উদ্যোগ নেই। স্টেশন চত্বরের বাইরে সিএসটিসি, হাওড়া সিটি পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ক্যাম্প রয়েছে। তার মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের ক্যাম্প পুরোটাই ফাঁকা। সেখানে নেই কোনও স্বাস্থ্য আধিকারিক বা স্বাস্থ্যকর্মী।
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য যে সকল পুণ্যার্থীরা হাওড়ায় পৌঁছচ্ছেন তাদের জন্য রাজ্য পরিবহণ সংস্থা থেকে বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সেই বাসে করে তারা সরাসরি গঙ্গাসাগর মেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন। বাইরের বিভিন্ন রাজ্য থেকে যে সকল পুণ্যার্থীরা আসছেন। তারা বাসের টিকিট কেটে উঠছেন। নেই কোনও সামাজিক দূরত্ববিধি। আবার মুখে মাস্ক নেই অনেকেরই। কারও থুতনিতে মাস্ক ঝুলছে। স্বাস্থ্য দফতরের ক্যাম্পে তাদের কোভিড টিকা নেওয়ার সার্টিফিকেট খতিয়ে দেখার লোকও নেই ক্যাম্পে। থার্মালগান চেকিং তো দূরঅস্ত। পাশাপাশি বাসের দুটি সিটের মাঝখানের সিট যেটি ক্রস করে চিহ্নিত করে রাখা যাতে কেউ না বসে ৷ সেখানেও নেই কোনও নজরদারি। কার্যত একসঙ্গে পাশাপাশি বসেই তারা যাত্রা করছেন গঙ্গা সাগরের উদ্দেশ্যে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে যে কোভিড বিধি-নিষেধ মেনে গঙ্গা সাগরের মেলা দর্শনের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী নিজে গতকাল জানিয়েছিলেন। কার্যত ঘোষণার 24 ঘণ্টার মধ্যেই তা অন্তঃসারহীন অবস্থা সামনে আসছে।
আরও পড়ুন: প্রকাশিত হল বালি পৌরসভার নতুন আসন বিন্যাসের তালিকা
এই পরিস্থিতিতে কতটা সুরক্ষার মধ্যে কোভিডবিধি মেনে পুণ্যার্থীরা বাড়ি ফিরে আসবেন। আদৌ কি গঙ্গাসাগর মেলা কোভিড ও ওমিক্রনের সুপার স্প্রেডার হিসেবে উঠে আসবে কি না, তার উত্তর আগামিদিনে পাওয়া যাবে। প্রসঙ্গত, গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। মেলাতে কোভিডবিধি কঠোরভাবে পালন করতে তিন সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি তৈরির নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। যদিও এরপরেই রাজ্যের চিকিৎসকমহল থেকে বিশেষ আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টকে অনুরোধ জানানো হয় গঙ্গাসাগর মেলা এই বছর না-করার জন্য। গঙ্গাসাগর মেলা সুপারস্প্রেডার হয়ে উঠলে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।