হাওড়া, 20 অক্টোবর : কোরোনায় মৃতের দু'ধরনের রিপোর্ট ঘিরে বিভ্রান্তি । মৃত রোগীর প্রথমে রিপোর্ট পজ়িটিভ এলেও পরে আসে নেগেটিভ । এই নিয়ে মৃতের পরিবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবে বলে জানিয়েছে । হাওড়ার পিলখানা নন্দ ঘোষ রোডের ঘটনা ৷
হাওড়ার বাসিন্দা শীতল প্রসাদ সাউ (78) শ্বাসকষ্ট ও কাশি নিয়ে চলতি মাসের 13 তারিখে ভরতি হন শিবপুরের জৈন হাসপাতলে । কোরোনা সন্দেহে ওই রোগীকে ওইদিন হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হয় । সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন । এর পরদিন অর্থাৎ 14 অক্টোবর তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয় । এরপর 15 তারিখ হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ফের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে ওই রোগীর । সেই অনুযায়ী গত 15 তারিখ দ্বিতীয়বার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে সরকার অনুমোদিত ওই একই ল্যাবে পাঠানো হয় । তার পরদিন অর্থাৎ 16 অক্টোবর দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । ওইদিনই তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে । রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই রোগীকে কোরোনা হাসপাতাল সঞ্জীবনে পাঠানোর ব্যবস্থা করে । সেই মতো রোগীর পরিবারকেও জানানো হয় । গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর ।
এরপর 17 অক্টোবর কোরোনা নির্দেশিকা অনুযায়ী, শিবপুর শ্মশান ঘাটে দাহ করা হয় মৃতদেহ । কিন্তু, ওইদিন রাতে রোগীর পরিজনদের কাছে প্রথম পরীক্ষার রিপোর্ট আসে । সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জানানো হয় কোরোনা নেগেটিভ । এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃতের পরিবার । তাদের অভিযোগ, হাসপাতালে গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে শীতলবাবুর । মৃতের পরিবারের দাবি, তাদের হাতে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী হাসপাতালে ভরতির সময় শীতলবাবু কোরোনা আক্রান্ত ছিলেন না । হাসপাতালে অবহেলার কারণে ভরতির পরে পজ়িটিভ হয়ে যায় তাঁর ।
অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তারা সরকার অনুমোদিত যে ল্যাব থেকে টেস্ট করায় সেখান থেকে তাদের প্রথম পরীক্ষার রিপোর্ট জানানো হয় 'ইনকোনকলিউসিভ' । অর্থাৎ প্রথম পরীক্ষা থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি । অথচ ওই রিপোর্টে রোগীর পরিজনদের জানানো হয় 'নেগেটিভ' । এর থেকেই বিভ্রান্তির সূত্রপাত । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই বিভ্রান্তির দায় সরাসরি ল্যাব কর্তৃপক্ষের উপর চাপিয়েছে । ঘটনায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস জানান, তিনি গোটা ব্যাপারটি খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখবেন ।