কলকাতা, 30 ডিসেম্বর : হাওড়া পৌরনিগমকে (Howrah Corporation) বাদ দিয়ে কেন রাজ্যের বাকি চারটি পৌরনিগমে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল ? কী কারণে করতে হল এমন পদক্ষেপ ? বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকার (West Bengal Government) ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (West Bengal State Election Commission) অবস্থান জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court seeks reply on Howrah Corporation Vote) ৷ বিচারপতি শম্পা সরকার ও বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে-র ডিভিশন বেঞ্চ আগামী 6 জানুয়ারি এই বিষয়ে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তাদের বক্তব্য পেশের নির্দেশ দিয়েছে ৷ এক্ষেত্রে গত 23 ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা পালন করা হয়েছে কিনা, তাও জানতে চেয়েছে আদালত ৷ আগামী 6 জানুয়ারি হলফনামা পেশ করে এর জবাব দিতে হবে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ৷
আরও পড়ুন : Siliguri Municipal Election : অবিলম্বে শিলিগুড়ি পৌর প্রশাসনিক বোর্ড ভেঙে দেওয়ার দাবি বামেদের
উল্লেখ্য, গত 28 ডিসেম্বর বকেয়া চারটি পৌরনিগমে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন ৷ বাদ যায় হাওড়া পৌরনিগম ৷ এক্ষেত্রে কমিশনের বক্তব্য, যেহেতু হাওড়া পৌরনিগম ভেঙে বালি পৌরসভা তৈরির প্রস্তাব বিধানসভায় পাস হয়ে গিয়েছে, কিন্তু, রাজ্যপাল তাতে এখনও স্বাক্ষর করেননি, তাই হাওড়া পৌরনিগমের বিভাজন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে ৷ সেই কারণেই হাওড়া পৌরনিগমে ভোট বকেয়া থাকলেও সেখানে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হয়নি ৷
এরপরই নির্বাচন কমিশনের ভোট বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন মৌসুমী রায় নামে এক মহিলা ৷ তাঁর বক্তব্য ছিল, গত 23 ডিসেম্বর এই প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে ৷ কারণ, আদালতে বকেয়া সমস্ত পৌরনিগমেই অবিলম্বে ভোট করানোর কথা বলা হয়েছিল ৷ এক্ষেত্রে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করার অভিযোগ তুলেছেন মৌসুমী ৷ তাঁদের আবেদন ছিল, এই পরিস্থিতিতে আগামী 22 জানুয়ারি রাজ্যের সংশ্লিষ্ট চারটি পৌরনিগমের ভোট বন্ধ রাখা হোক ৷
মামলার শুনানিতে মৌসুমীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ভুল তথ্য পেশ করে আদালতকে বিভ্রান্ত করেছে ৷ যদি হাওড়া পৌরনিগমে ভোট না হয়, তাহলে বাকি পৌরনিগমগুলিতেও ভোট করানো যাবে না ৷’’ এরপর রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার কাছে যেমন তথ্য এসেছিল, তার ভিত্তিতেই আমি আদালতে তথ্য পেশ করেছিলাম ৷ কিন্তু পরে জানতে পারি, বালি পৌরসভার পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গেলেও হাওড়া পৌরনিগম এবং বালি পৌরসভা সংক্রান্ত বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়নি ৷ ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবেই আদালতে ভুল তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল ৷ সেই কারণেই রাজ্য সরকার নতুন করে হলফনামা দিয়ে তথ্য পেশ করতে চায় ৷’’
এরপরই আগামী 6 জানুয়ারি রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়ে নতুন করে তথ্য পেশের নির্দেশ দেয় সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চ ৷ উল্লেখ্য, গত 23 ডিসেম্বর রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টকে জানায়, 22 জানুয়ারি প্রথম দফায় পাঁচটি পৌরনিগমের বকেয়া ভোট সেরে ফেলতে চায় তারা ৷ সংশ্লিষ্ট পাঁচটি পৌরনিগম হল, বিধাননগর ,চন্দননগর, হাওড়া, আসানসোল ও শিলিগুড়ি ৷ কিন্তু, এরপর 28 ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ভোটের যে নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে তাতে হাওড়ার নাম ছিল না ৷