হাওড়া, 7 জুন : মৃত শেখ জাহিরুদ্দিন হাওড়ার নতিবপুর পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা ৷ তিনি পারবিনা শেখের সঙ্গে প্রণয় ঘটিত সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন। তবে মেয়ের সঙ্গে এই ধরনের সম্পর্ককে মেনে নিতে পারেননি পারবিনার পরিবারের কেউই । এ কারণে মেয়ের মেয়ের মৃত্যুর খবর রটালেন মেয়ের পরিবারের লোক ৷ আর এই খবর পেয়ে মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করলেন প্রেমিক, এমনটাই অভিযোগ (Boyfriend dies by Suicide after receiving fake news of his girlfriend death) ৷
সূত্রের খবর, বিভিন্নভাবে তাঁদের সম্পর্ক ভাঙার বহু চেষ্টা চালান মেয়ের পরিবারের সদস্যরা। বেশ কিছুদিন ধরে ফোনে মেয়ের প্রেমিককে মারধরের হুমকিও দেওয়া হত বলেও স্থানীয় সূত্রে খবর। আত্মঘাতী শেখ জাহিরুদ্দিন কর্মসূত্রে হায়দরাবাদে কাজ করতেন । তাঁর পরিবারের অভিযোগ, শনিবার তাঁর প্রেমিকার বাড়ি থেকে শেখ জাহিরুদ্দিনকে ফোন করা হয়। ফোনে তাঁকে জানানো হয় পারবিনা আত্মঘাতী হয়েছেন ৷ আর তাঁর এই পরিণতির জন্য শেখ জাহিরউদ্দিনকেই দোষী করা হয়। এই খবর পাওয়ার পর তিনি ভেঙে পড়েন ও মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন : বিয়ের দু’মাসেই স্বামীকে খুনের চেষ্টা নববধূর, মুখ বেঁধে ভিডিয়ো পাঠাল মা’কে
এরপরই সোমবার জাহিরুদ্দিনের বাড়িতে খবর আসে তিনি হায়দরাবাদে যেখানে থাকতেন সেখানেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। মৃত জাহিরুদ্দিনের মা নাজিমা বেগম বলেন, আমরা দু'জনের প্রেমের সম্পর্ক জানতে পেরে মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাই। সেখানে আমাদেরকে অপমান করে বের করে দেন মেয়ের পরিবারের লোকেরা। এরপর থেকে মাঝে-মধ্যেই আমার ছেলেকে মেয়ের বাড়ি থেকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত। আমার ছেলেকে মিথ্যে কথা বলা হয়েছে মেয়ের বাড়ি থেকে। যার জন্যই ছেলে আমার আত্মঘাতী হয়েছে।" তিনি মেয়ের পরিবারের লোকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।
যদিও মেয়ের বাড়ি থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন মেয়ের মা তৈয়বা শেখ ৷ তিনি বলেন, "ছেলের বাড়ি-ঘর, রোজগার ভাল না-থাকার জন্য আমরা বিয়েতে রাজি হইনি। এরপরে আমার স্বামী ও নন্দাই মিলে ছেলের বাড়ির লোকের সঙ্গে কথাও বলি। রবিবার রাতে আমরা বাড়ি ছিলাম না। তখন ছেলের বাড়ির লোকেরা এসে বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান ৷ প্রায় দুই লাখ টাকা ও গহনা চুরি গিয়েছে।" অভিযোগ জানানোর পর গতকাল রাতেই পুলিশ আসে।
আরও পড়ুন : স্ত্রী পেয়েছেন সরকারি চাকরি, হীনমন্যতায় স্ত্রীর হাত কেটে দিল স্বামী
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোলোড়া 1 নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান নিলুফা মল্লিক জানান, ঘটনার কথা তিনি দিনদশেক আগে জানতে পারেন। প্রায় চার বছর ধরে দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন আগে দুই পক্ষকে সামনাসামনি বসিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেন তিনি। তবে তা মেটেনি। দু'জনের সঙ্গেই যোগাযোগ ছিল বলেই দাবি করেন প্রধান।
তিনি আরও জানান, আমি শুনেছি যে মেয়ের অন্যত্র বিয়ের কথা হচ্ছিল। তাঁর বাগদানের ছবি ছেলেকে পাঠালে সেটা দেখে সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। যদিও সেটা শোনা কথা বলেই তিনি দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন যে, "ছেলে-প্রেমিকার জন্য প্রাণ দিল ৷ সেই ছেলের পরিবারের লোকেরা মেয়ের বাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারেন।" গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।