হাবড়া, 31 অক্টোবর : হাবড়ার জমা জল মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের । টানা চার মাস ধরে জল কমছে না । ফলে কয়েকশো পরিবার এখনও জলবন্দী হয়ে রয়েছে । বাড়ছে ক্ষোভও । অবশেষে KMDA-র চিফ ইঞ্জিনিয়র শিশির বৈদ্যের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে এল ।
যদিও বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না । CPI(M)-র দাবি, মন্ত্রীদের বারবার পরিদর্শন আইওয়াশ ছাড়া কিছু নয় । গত কয়েকমাস বৃষ্টির জমা জলে আটকে রয়েছেন হাবড়া পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকশো বাসিন্দা । সম্প্রতি ঘরের মধ্যে জমা জলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ছোট্ট এক শিশুর । ETV ভারতে সে খবর প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের । হাবড়ার বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তিনবার ঘুরে গিয়েছেন দুর্গত এলাকায় । পৌর প্রশাসক নীলিমেশ দাসও ভেলায় চেপে এলাকা পরিদর্শন করেছেন । মন্ত্রীর নির্দেশে পাম্প চালিয়ে চলছে জল সরানোর কাজ । কিন্তু তাতে স্থায়ী সমাধান নয় বলে মত দুর্গত বাসিন্দাদের ।
অবশেষে শনিবার KMDA-র চিফ ইঞ্জিনিয়র শিশির বৈদ্যর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আসে । ওই দলে ছিলেন সেচ দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার সন্দীপ গুপ্তা, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর মনোজ রায় ও পৌর প্রশাসক পারিষদ তারকনাথ দাস ও নন্দা চক্রবর্তী সহ অন্যান্য । গোটা এলাকা ঘোরার পর তাঁরা হাবড়া পৌরসভায় বৈঠক করেন । যদিও সংবাদমাধ্যমের কাছে চিফ ইঞ্জিনিয়ার শিশিরবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি ।
তিনি জানান, সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর কিছু বলার এক্তিয়ার নেই । তবে জানা গিয়েছে, হাবড়ার জমা জল সরানোর জন্য দুটো পাম্প হাউস করার পরিকল্পনা করা হয়েছে । একটা মাস্টারপ্ল্যানও করা হচ্ছে । হাবড়া পৌরসভার প্রশাসক পারিষদ তারকনাথ দাস বলেন, "প্রাথমিকভাবে দুটো পাম্প হাউজ় তৈরি করে জল সরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে । একটা মাস্টারপ্ল্যানও করা হয়েছে ।"
যে জবরদখলের কারণে হাবড়া জলবন্দী, সেই জবরদখলকারীদের সরানো হবে কি না, সে ব্যাপারে তারকবাবু বলেন, "আমরা উচ্ছেদের বিপক্ষে । কাউকে না সরিয়ে কী করে সমস্যার সমাধান করা যায়, আমরা সেই পরিকল্পনা করছি ।"
যদিও মন্ত্রীদের বারবার পরিদর্শন সম্পর্কে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি CPI(M) । হাবড়া পৌরসভার প্রাক্তন CPI(M) কাউন্সিলর জয়ন্ত রায়চৌধুরি বলেন, "পাম্প চালিয়ে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয় । এগুলো লোক দেখানো । আসলে পরিকল্পনাহীনভাবে গঙ্গার জলের পাইপ নেওয়ার ফলে হাবড়ার নিকাশি ব্যবস্থা থমকে গিয়েছে ।" বাম আমলে খালের উপর জবরদখল করে বাড়ি তৈরি হয়েছিল। আপনারা তখন কোনও ব্যবস্থা নেননি কেন? জয়ন্তবাবুর সাফাই, আমরা চেষ্টা করেছিলাম । কিন্তু পারিনি ।
যদিও তৃণমূলের অভিযোগ, হাবড়ার পদ্মাখালের জবরদখল হয়েছিল BJP ও CPI(M)-র পৌরবোর্ডের আমলেই । তখন পৌরবোর্ড ঠিকঠাক কাজ করলে আজ হাবড়া জলমগ্ন হত না ।