হাওড়া, 31 অক্টোবর : কোভিডের পাশাপাশি হাওড়ায় বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা । কোভিড-কালে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে হাওড়া পৌরনিগম । হাওড়া পৌরনিগমের অন্তর্গত 24 নম্বর ওয়ার্ডের 10 নম্বর যোগেন মুখার্জি লেনে দুর্গাপূজার সময় থেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বেশ কয়েকজন । এই মুহূর্তে ওই এলাকায় 22জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে । শনিবার রাতে এক শিশুর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সুত্র মারফত খবর । মৃত শিশুর নাম রিয়া চক্রবর্তী (8)। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া ৷
চলতি মাসের 23 তারিখ পরিবারের লোকেরা শিশুটিকে হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রেফার করা হয় কলকাতা মেডিকেল হাসপাতালে । গতকাল রাতে মৃত্যু হয় ওই শিশুর । মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন হাওড়া পৌরনিগমের পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ডক্টর সুজয় চক্রবর্তী । স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় নিয়মিত পরিষ্কারের কাজে ঘাটতি রয়েছে । মাসে 1-2বার পরিষ্কারের কাজ করেন পৌরনিগমের কর্মীরা । পৌরনিগমে খবর দিলে তবেই সাফাই কর্মীদের পাঠানো হয় । এই প্রসঙ্গে মৃতার মা পুতুল চট্টোপাধ্যায় বলেন যে তাঁর মেয়ের জ্বর আসায় তাঁরা ডাক্তার দেখান । সেখানে মেয়ের ডেঙ্গির পরীক্ষা করা হলে ডেঙ্গি ধরা পড়ে । এরপর তাকে কলকাতায় ভর্তি করা হয় চিকিৎসার জন্য ।
আরও পড়ুন : মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরদের সক্রিয় ভূমিকা চায় কলকাতা পৌরনিগম
এলাকার আরেক বাসিন্দা সমিতা কুণ্ডু জানান যে তাঁদের পরিবারেও তিনজন ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে । মহালয়ার পর থেকেই তিনজনের ডেঙ্গি ধরা পড়ে । শুধু তাঁর পরিবারেই নয়, আশপাশের বহু বাড়িতে ডেঙ্গিতে লোকে আক্রান্ত হয়েছে । পৌরনিগমকে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি । মাঝে মধ্যে এসে ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়ে গেছে । যদিও সেই ব্লিচিংয়ে কোনো ঝাঁঝ নেই ।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া পৌরনিগমের পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ডক্টর সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে শিশু মৃত্যু-সহ যে কোনও মৃত্যুই মর্মান্তিক । তবে এখনও তাঁর কাছে অফিসিয়ালি ডেঙ্গির কারণেই যে বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে সেই রিপোর্ট আসেনি । তাই আপাতত মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসেবে ডেঙ্গিকে অনুমান করা হচ্ছে । তিনি দাবি করেন যে গোটা হাওড়া শহর জুড়েই ডেঙ্গি প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ করা হয়েছে । এই এলাকাতেও হয়েছে । তাও দুর্ভাগ্যজনকভাবে একজনের মৃত্যু হল । তিনি আরও দাবি করেন মশার তেল, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো সমস্ত পদক্ষেপই করা হচ্ছে । এখানে পৌরনিগমের স্বাস্থ্য দফতরের টিমও আসবে । তারাও পর্যবেক্ষণ চালাবে । প্রসঙ্গত বর্ষা চলে যাওয়ার পরেই প্রতি বছর ডেঙ্গির উপদ্রপ শুরু হয় শহরে ।