চুঁচুড়া (হুগলি), 28 এপ্রিল : তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বচসা থেকে মারধরের অভিযোগ উঠল হুগলির চুঁচুড়ায় (Youth TMC Leader Allegedly Beaten at Chinsurah due to Inner Clash) ৷ বুধবার রাতে ঘটনাটি চুঁচুড়ার 6 নম্বর ওয়ার্ডের বালির মোড় সংলগ্ন এলাকায় ঘটে বলে অভিযোগ ৷ এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে চুঁচুড়া থানায় ৷
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক ও কাউন্সিলরের দুই গোষ্ঠীর গোলমালের জেরে এই ঘটনা ঘটে (TMC Inner Clash at Chinsurah) ৷ চুঁচুড়ার বিধায়ক তৃণমূলের অসিত মজুমদার ও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাস ৷ স্থানীয়দের দাবি, পৌরসভা ভোটের পর অসিত মজুমদার ও কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাসের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয় । এর মধ্যে নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে বিধায়কের । ওই ওয়ার্ডের যুব থেকে অন্যান্য পদে দায়িত্ব পেয়েছেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ নেতারাই । তাতে তৃণমূলের মধ্যে আরও বেড়েছে মতবিরোধ । সেই থেকেই গোলমাল বলে অভিযোগ ৷
বুধবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) কর্মীদের দু’টি পক্ষ জড়িয়ে পড়েন বচসায় ৷ এমনকি সেই বচসা থেকে হাতাহাতিও হয় । অভিযোগ, তৃণমূলের 6 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাস পার্টি অফিসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMC Chairperson Mamata Banerjee) নামে কুৎসা করে তৃণমূলেরই কয়েকজন । তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিধায়ক অসিত মজুমদার ঘনিষ্ঠ প্রেমজিৎ সাহার সঙ্গে বচসা শুরু হয় । চলে হাতাহাতি ও মারধর । ওই তৃণমূল কর্মীর জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয় । বর্তমানে তিনি চুঁচুড়া হাসপাতালে ভর্তি ।
তবে ঝন্টুর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসার করার জন্য প্রতিবাদ করতে গিয়ে জামা ছিঁড়ে যায় । ওই কর্মীকে কোনও মারধর করা হয়নি । অন্যদিকে অসিত মজুমদার (TMC MLA Asit Majumder) ঘনিষ্ঠ প্রেমজিৎ বলেন, ‘‘আমরা ওয়ার্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প নিয়ে কাজ করছিলাম বলেই ওরা মারধর করেছে ।’’
ঝন্টু বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী । পাহারাদার হিসাবে কাজ করি । ওয়ার্ডে কিছু বিজেপির ছেলে চোলাই মদ বেচে ৷ তাঁদেরকে নিয়ে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে । আমাদের দিদি ও আমার নামে কুৎসা করছে । ওর (প্রেমজিৎ) চুঁচুড়ার বিধায়ক দাদাই ওর সব বলে চিৎকার করছিল । আমাদের কর্মীরা ওকে ধরে টানাটানি করতে গিয়ে জামা ছিঁড়ে যায় । আমি তো বিধায়ককে সম্মান দিয়েই চলি । তাও ওই লোক কেন করছে বুঝতে পারছি না ।’’
চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের যুবর ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট প্রেমজিৎ সাহাকে মারধর করে কিছু দুর্বৃত্ত । তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে । আমি রবীন্দ্রনগর, ব্যান্ডেলের মতো জায়গাকে শান্ত করে দিয়েছি ৷ আর বালির মোড়ের মতো জায়গায় উশৃংখলতা চলবে, মারধর করা হবে, এটা হতে পারে না । আইন আছে কারও ভালো না লাগলে আইনের সাহায্য নেবে, আইন হাতে নেওয়ার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি চুঁচুড়াকে শান্ত রাখতে চাই । আমার সঙ্গে কারও দূরত্ব নেই ৷ আমি দলের বিধায়ক । দলের গাইড লাইন মেনে চলতে হবে । তলে তলে কেউ বিজেপি সিপিএমের সঙ্গে যোগ রাখবে, এটা করলে হবে না । কেউ কোনও অশান্তি করলে কঠোর হাতে রুখব বলেন বিধায়ক ।’’
রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান চুঁচুড়া থানার আইসি-সহ পুলিশ বাহিনী । চুঁচুড়া পরিস্থিতি সামাল দিতে বালির মোড়ে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে । ঘটনায় আক্রান্ত প্রেমজিৎ সাহাকে সকালে দেখতে যান চুঁচুড়ার বিধায়ক ।