ETV Bharat / state

বাসের চাকা ঘোরেনি কয়েক মাস, মাথায় হাত পর্যটন ব্যবসায়

শুধু ভ্রমণ নয়, বিয়েবাড়ি বা অন্যান্য অনুষ্ঠানেও টুরিস্ট বাসগুলি ভাড়া দেওয়া হয় । এখন বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সেইসব বাস । সংক্রমণের ভয়ে বাস ভাড়া করছেন না কেউই । রুটিরুজি বন্ধ চালক ও মালিকদের ।

Tourist bus
Tourist bus
author img

By

Published : Jul 31, 2020, 4:46 PM IST

হুগলি, 31 জুলাই : লকডাউনে থমকে থাকার পর বিধিনিষেধ মেনে ফের খোলা হয়েছে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র । লকডাউন শেষ ৷ চলছে আনলক-3 ৷ একে একে খুলে দেওয়া হচ্ছে প্রায় সব কিছুই ৷ বিভিন্ন জেলায় এই ভ্রমণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কয়েকশো ট্যাভেল সংস্থা । জড়িয়ে কয়েক হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা । কিন্তু, কোরোনার আতঙ্ক সর্বত্র । দেখা নেই পর্যটকের । মার খাচ্ছে হুগলির ট্র্যাভেল ব্যবসা । দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে টুরিস্ট বাসগুলি ।

লাখ লাখ টাকার সুবিশাল বাস কিনেও চালানো যাচ্ছে না সেগুলি । শুধু ভ্রমণ নয়, বিয়ে বাড়ি বা অন্যান্য অনুষ্ঠানেও এই বাসগুলি ভাড়া দেওয়া হয় । এখন বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সেইসব বাস । সংক্রমণের ভয়ে বাস ভাড়া করছেন না কেউই । রুটিরুজি বন্ধ চালক ও মালিকদের । ভাড়া না হওয়ায় বাসগুলির বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটিও দেখা দিচ্ছে । পড়ে থেকে থেকে নষ্ট হচ্ছে বাসের টায়ার । তার ওপর চালক ও খালাসিদের বেতন দিতে হচ্ছে মালিকদের । যার জেরে প্রভূত ক্ষতির মুখে ট্র্যাভেল ব্যবসা ।

হুগলি জেলায় ১০০টির বেশি ট্র্যাভেল সংস্থা আছে । টুরিস্ট বাস রয়েছে 300 থেকে 400টি । ছোটো বাসের সংখ্যাও কম নয় জেলায় । অনেক মালিকেরই 4 থেকে 10টি বাস আছে । এক-একটি বাস চালাতে ড্রাইভার-সহ কমপক্ষে তিনজন লাগে । বছরে 5 লাখ টাকা থেকে 20 লাখ টাকার লেনদেন করেন বাসমালিকেরা । ক্ষতির মুখে প্রত্যেকেই ।

এই ব্যবসায় কাশ্মীর, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মুম্বই, গুজরাত-সহ একাধিক জায়গায় পর্যটকদের নিয়ে যায় বাসগুলি । আর প্রায় সারা বছরই পুরী, দিঘা-সহ রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় ভাড়া লেগেই থাকে । লকডাউনের পর পর্যটক তেমন না হওয়ায় ছোটো বাসগুলিতেই অফিস যাত্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে । দিনে যাত্রী পিছু 200 টাকা থেকে 300 টাকা করে নিয়েও লাভ হচ্ছে না বিশেষ ।

মার খাচ্ছে ট্র্যাভেল ব্যবসা

বৈদ্যবাটির এক ট্র্যাভেল এজেন্সির মালিক রঞ্জিত রায় বলেন, "বাসের কোনও চাকাই গড়াচ্ছে না । টুরিস্ট ব্যবসা শেষ হয়ে গিয়েছে । যা পরিস্থিতি, তাতে ব্যবসা চলবে কিনা বোঝা যাচ্ছে না । কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে । দিতে হচ্ছে ট্যাক্স । কলকাতায় যে বাসগুলি ভাড়া খাটছে সেখানেও পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে । পারমিট নিয়ে সমস্যায় পড়ছি একাধিক জায়গায় । অন্যান্য রাজ্যেও যাওয়া যাচ্ছে না । একমাত্র ভরসা বলতে সরকারি সাহায্য । রুটের বাসে যেমন সরকার প্যাকেজ করছে। টুরিস্ট বাসের ক্ষেত্রে কিছু সরকারি সাহায্যের কথা ভাবলে আমাদের সুবিধা হবে ।" এক বাসচালক প্রভাস সরকার বলেন, "কীভাবে সংসার চালাব সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে । মালিকের কাছে এসে হাত খরচা বাবদ কিছু টাকা নিয়ে যাচ্ছি । রেশনের চালটুকুই এখন ভরসা । যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন কিছু সুরাহা হবে বলে মনে হয় না । আমরা টুরিস্ট ও অফিস বাস চালাই । সেগুলো সবই প্রায় বন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে । প্রচুর ড্রাইভার এখন বেকার ।" ব্যান্ডেলের এক বাস মালিক উৎপল কুণ্ডু বলেন, "লকডাউনের পর থেকে আমার ৬টি বাসের মধ্যে কোনওটাই চলছে না । গাড়ি না চললে ফাইন্যান্সের টাকা দেব কীভাবে ? কী করব, বুঝে উঠতে পারছি না । বেশিরভাগ বিয়েবাড়ি বাতিল হয়েছে । দিঘা, পুরীতেও একাধিক হোটেল খুলছে না । 60 আসন বিশিষ্ট বাসগুলি এ'ভাবে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকলে সবকিছুই নষ্ট হয়ে বসে যাবে ।" সুনীলকুমার পাসওয়ান বলেন, "লকডাউন যখন থেকে চলছে তখন থেকে ড্রাইভারকে বসিয়ে বসিয়ে মাইনে দিতে হয়েছে । বাধ্য হয়ে কলকাতায় অফিস যাত্রীদের নিয়ে যাচ্ছি । তা-ও সপ্তাহে তিন-চারদিন চলছে । তেলের দাম যা বেড়েছে, তাতেও সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে ।"

হুগলি, 31 জুলাই : লকডাউনে থমকে থাকার পর বিধিনিষেধ মেনে ফের খোলা হয়েছে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র । লকডাউন শেষ ৷ চলছে আনলক-3 ৷ একে একে খুলে দেওয়া হচ্ছে প্রায় সব কিছুই ৷ বিভিন্ন জেলায় এই ভ্রমণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কয়েকশো ট্যাভেল সংস্থা । জড়িয়ে কয়েক হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা । কিন্তু, কোরোনার আতঙ্ক সর্বত্র । দেখা নেই পর্যটকের । মার খাচ্ছে হুগলির ট্র্যাভেল ব্যবসা । দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে টুরিস্ট বাসগুলি ।

লাখ লাখ টাকার সুবিশাল বাস কিনেও চালানো যাচ্ছে না সেগুলি । শুধু ভ্রমণ নয়, বিয়ে বাড়ি বা অন্যান্য অনুষ্ঠানেও এই বাসগুলি ভাড়া দেওয়া হয় । এখন বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সেইসব বাস । সংক্রমণের ভয়ে বাস ভাড়া করছেন না কেউই । রুটিরুজি বন্ধ চালক ও মালিকদের । ভাড়া না হওয়ায় বাসগুলির বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটিও দেখা দিচ্ছে । পড়ে থেকে থেকে নষ্ট হচ্ছে বাসের টায়ার । তার ওপর চালক ও খালাসিদের বেতন দিতে হচ্ছে মালিকদের । যার জেরে প্রভূত ক্ষতির মুখে ট্র্যাভেল ব্যবসা ।

হুগলি জেলায় ১০০টির বেশি ট্র্যাভেল সংস্থা আছে । টুরিস্ট বাস রয়েছে 300 থেকে 400টি । ছোটো বাসের সংখ্যাও কম নয় জেলায় । অনেক মালিকেরই 4 থেকে 10টি বাস আছে । এক-একটি বাস চালাতে ড্রাইভার-সহ কমপক্ষে তিনজন লাগে । বছরে 5 লাখ টাকা থেকে 20 লাখ টাকার লেনদেন করেন বাসমালিকেরা । ক্ষতির মুখে প্রত্যেকেই ।

এই ব্যবসায় কাশ্মীর, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মুম্বই, গুজরাত-সহ একাধিক জায়গায় পর্যটকদের নিয়ে যায় বাসগুলি । আর প্রায় সারা বছরই পুরী, দিঘা-সহ রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় ভাড়া লেগেই থাকে । লকডাউনের পর পর্যটক তেমন না হওয়ায় ছোটো বাসগুলিতেই অফিস যাত্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে । দিনে যাত্রী পিছু 200 টাকা থেকে 300 টাকা করে নিয়েও লাভ হচ্ছে না বিশেষ ।

মার খাচ্ছে ট্র্যাভেল ব্যবসা

বৈদ্যবাটির এক ট্র্যাভেল এজেন্সির মালিক রঞ্জিত রায় বলেন, "বাসের কোনও চাকাই গড়াচ্ছে না । টুরিস্ট ব্যবসা শেষ হয়ে গিয়েছে । যা পরিস্থিতি, তাতে ব্যবসা চলবে কিনা বোঝা যাচ্ছে না । কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে । দিতে হচ্ছে ট্যাক্স । কলকাতায় যে বাসগুলি ভাড়া খাটছে সেখানেও পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে । পারমিট নিয়ে সমস্যায় পড়ছি একাধিক জায়গায় । অন্যান্য রাজ্যেও যাওয়া যাচ্ছে না । একমাত্র ভরসা বলতে সরকারি সাহায্য । রুটের বাসে যেমন সরকার প্যাকেজ করছে। টুরিস্ট বাসের ক্ষেত্রে কিছু সরকারি সাহায্যের কথা ভাবলে আমাদের সুবিধা হবে ।" এক বাসচালক প্রভাস সরকার বলেন, "কীভাবে সংসার চালাব সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে । মালিকের কাছে এসে হাত খরচা বাবদ কিছু টাকা নিয়ে যাচ্ছি । রেশনের চালটুকুই এখন ভরসা । যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন কিছু সুরাহা হবে বলে মনে হয় না । আমরা টুরিস্ট ও অফিস বাস চালাই । সেগুলো সবই প্রায় বন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে । প্রচুর ড্রাইভার এখন বেকার ।" ব্যান্ডেলের এক বাস মালিক উৎপল কুণ্ডু বলেন, "লকডাউনের পর থেকে আমার ৬টি বাসের মধ্যে কোনওটাই চলছে না । গাড়ি না চললে ফাইন্যান্সের টাকা দেব কীভাবে ? কী করব, বুঝে উঠতে পারছি না । বেশিরভাগ বিয়েবাড়ি বাতিল হয়েছে । দিঘা, পুরীতেও একাধিক হোটেল খুলছে না । 60 আসন বিশিষ্ট বাসগুলি এ'ভাবে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকলে সবকিছুই নষ্ট হয়ে বসে যাবে ।" সুনীলকুমার পাসওয়ান বলেন, "লকডাউন যখন থেকে চলছে তখন থেকে ড্রাইভারকে বসিয়ে বসিয়ে মাইনে দিতে হয়েছে । বাধ্য হয়ে কলকাতায় অফিস যাত্রীদের নিয়ে যাচ্ছি । তা-ও সপ্তাহে তিন-চারদিন চলছে । তেলের দাম যা বেড়েছে, তাতেও সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.