শ্রীরামপুর, 22 অক্টোবর: তিনি একদিকে নেতা-সাংসদ, অন্যদিকে তিনি পুজোর উদ্যোক্তা ৷ দেবীর চিরাচরিত রূপই বেশি ভালোবাসেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তবে থিমের পুজোতেও কোনও আপত্তি নেই ৷ কলকাতা বনাম শ্রীরামপুরের দুর্গাপুজো প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, "ওদের মন্ত্রী আছে, ফুটবলার আছে ৷ বিখ্যাত ফুটবলার এনে দর্শক টানতে হচ্ছে। তাছাড়া অভিনেতা-অভিনেত্রীও আছে ৷" প্রসঙ্গত, এবারের পুজোয় ব্রাজিলের প্রাক্তন তারকা ফুটবলার রোনাল্ডিনহোকে নিয়ে এসে চমক দিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর পুজো ৷ তাছাড়া রাজ্যের আরেক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পুজো সুরুচি সঙ্ঘে চিরকালই ভিড় থাকে তারকাদের। এবার এই দুই মন্ত্রীর পুজোকে কটাক্ষ করলেন কল্যাণ ৷
শ্রীরামপুর আরএমএস ময়দানে পাঁচ-ছয়ের পল্লীর পুজো কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো নামেই খ্যাত ৷ 110 বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে ৷ বৃন্দাবনের প্রেম মন্দিরের আদলেই এবারের পুজোমণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে ৷ এখানে দেবী দুর্গার চিরাচরিত মূর্তিরই পুজো হয়। তা দেখতে ভিড় জমান শহরতলির মানুষ ৷
আশপাশের এলাকা থেকেও বহু মানুষ আসেন শ্রীরামপুরের সাংসদের পুজো দেখতে ৷ সেই ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন পুজো উদ্যোক্তারা ৷ প্যান্ডেলেই মোতায়ন করা হয়েছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের ৷ সপ্তমীর সন্ধ্যায় ঢাক বাজিয়ে আরাধনা করলেন পেশায় আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন: পুজোর চণ্ডীপাঠে মিলে গেল নমাজ-আজান, কলকাতার বুকে সম্প্রীতির শারদোৎসব
শনিবার তিনি বলেন, "থিমের পুজোয় নিঃসন্দেহে একটা শিল্পের ব্যাপার থাকে ৷ শিল্পীরা অনেক খেটে এই মণ্ডপ তৈরি করেন ৷ তাঁদের শিল্পী মনের পরিচয় দেন ৷ সেদিক থেকে ভাবলেও প্রথাগত দুর্গাপুজোর সঙ্গে থিমের পুজোর কোনওরকম তুলনা করাই চলে না ৷ এর সঙ্গে বহু মানুষেরই জীবন জীবিকা জড়িয়ে ৷"
দুর্গোৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার অর্থনীতি ৷ এই প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, "একদিকে সবাই তাদের পরিবার নিয়ে আনন্দে মেতে উঠছে অন্যদিকে এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে ৷ এই সময় অর্থনৈতিক উন্নতি হয় ৷ বহু মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে এই পুজোর সঙ্গে ৷ তবে, আমি মায়ের আদি রূপই পছন্দ করি ৷" কথার একটি অংশে খানিক আক্ষেপও ধরা পড়ল সাংসদের গলায়। তিনি বলেন, "ওদের মন্ত্রী, অভিনেতা, অভিনেত্রী রয়েছেন ৷ তার উপর বড় ফুটবলার নিয়ে এসে লোক করতে হচ্ছে ৷ আমার পুজো সুজিত-অরূপের থেকে কোনও অংশে কম নয় ৷"
আরও পড়ুন: হাত বাড়ালেই নাগালে ফুচকা, রসনাতৃপ্তিতে মণ্ডপ দেখতে এসে ফুচকা নিয়ে পগারপার দর্শনার্থীরা