হুগলি, 11 মার্চ: তাঁর নাম টুম্পা মেটে। তিনি হুগলির জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য । 2018 সালে টুম্পা চাকরি পেয়েছিলেন শ্রীরামপুরের নেতাজী বয়েজ স্কুলে ৷ 5 বছর ধরে করণিক হিসাবে চাকরি করেছেন । সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট 842 জন গ্রুপ সি-র প্রর্থীর চাকরি বাতিলের তালিকা প্রকাশ করেছে ৷ সেই তালিকায় নাম আছে টুম্পার। তবে তাঁর দাবি টাকা নয়, পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পেয়েছিলেন (TMC Leader said she is not involved with any scam) ।
টুম্পা ডানকুনির বামুনারির বাসিন্দা ৷ তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মেটেও তৃণমূল নেতা ৷ বর্তমানে তিনি রিষড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য । টুম্পার স্বামীর মতে, এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পরই চাকরি হয়েছে তাঁর স্ত্রীর । হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের তালিকা প্রকাশ প্রসঙ্গেই টুম্পা মেটে বলেন, "2016 সালে পরীক্ষা দিয়েছি । পরে সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরে, অন্য একটি পরীক্ষা দিই ৷ তারপর বেশ কয়েকটি পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে যোগ দিই । মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি অনেক টাকার লেনদেন হয়েছে । আমি কোনও লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত নই । পর্যায় ক্রমে পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে যোগদান করি । সিবিআই-ইডি যে খুশি আমায় জিজ্ঞাসা করুক । আমি টাকা পয়সার লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত নই । এসএসসি জানে তারা কেন এতোদিন পর নম্বর দিল । একমাস হল 54 নম্বর পেয়েছি । ওএমআর সিটে অন্য নম্বর পেয়েছি ।" টুম্পার দাবি 3115 জন যারা চাকরি করছে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলে খেলা চলছে ৷ তবে টুম্পা আরও বলেন, "আমি যেহেতু মা মাটি সরকারের জন প্রতিনিধি তাই বিরোধীরা এটা নিয়ে হয়ত আমাকে আমার দলকে কালিমা লিপ্ত করবেই। কিন্তু মানুষের জন্য সততার সঙ্গে কাজ করেছি । সেই কারণেই দল পাশে থাকবে এটা মনে করি ।"
স্ত্রীর চাকরি যাওয়া প্রসঙ্গে মৃত্যুঞ্জয় বলেন, "আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারে চাকিরর প্রয়োজন আছে । আমার কাছেই পড়াশোনা করত ।আমিও পরীক্ষা দিয়েছিলাম । কিন্তু আমার চাকরি হয়নি ৷ আমার স্ত্রী-র চাকরি হয়েছে । গ্রুপ-সি, গ্রুপ ডি ও শিক্ষক মিলিয়ে 3115 জনের নামের চাকরি বাতিলের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে ৷ সেই তালিকায় টুম্পা মেটের নামও আছে ৷ চাকরির জন্য কাউকে কোনও টাকা দিইনি । এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল । ওএমআর শিটে কিছু হয়ে থাকলে সেটা মধ্য শিক্ষা পর্ষদ বলতে পারবে । আমাদের জানা নেই । আমরা দু’জনেই যেহেতু তৃণমূল করি, তাই চাকরি চলে যাওয়ায় সামাজিক সম্মান নষ্ট হবে । পাঁচ বছর ওই স্কুলে চাকরি করল তারপর কী করে কী হল আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না । টুম্পা পড়াশোনায় খুব ভালো । লোকে কী বলবে জানি না । কিন্তু আমরা কোনও দোষ করিনি ।"
আরও পড়ুন: দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, জেনে নিন কে এই শান্তনু
বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদক জানান, যেভাবে গোটা রাজ্যে শিক্ষা দূর্নীতির জাল ছড়িয়ে রয়েছে তা তৃনমূল অস্বীকার করতে পারবে না । হাইকোর্ট যে রায় দিচ্ছে সেটা যুক্তি সংগত এবং গুরুত্বপূর্ণ । টুম্পা মেটের চাকরি ও কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে । তিনি অস্বীকার করছেন । তাহলে তিনি কোর্টের নির্দেশকে তিনি চ্যালেঞ্জ করুন । তৃণমূলের নেতারা একে একে গ্রেফতার হচ্ছেন। এর থেকে মুখ ঘোরানোর জন্য নানা পরিকল্পনা করছে তৃণমূল । কিন্তু যাই করুক আগামিদিনে তৃণমূল দলটা থাকবে না ৷