শ্রীরামপুর, 15 ফেব্রুয়ারি : পোলবায়ে পুলকার দুর্ঘটনা কারণ হিসেবে উঠে আসছে একাধিক প্রসঙ্গ ৷ জানা গিয়েছে, ওই পুলকারটির ফিট সার্টিফিকেট প্রায় দু'বছরের পুরোনো ৷ তাছাড়া গাড়ির টায়ারের অবস্থা ভালো ছিল না ৷ এবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক পড়ুয়া ঐশানী পাল জানাল, রাস্তার মাঝে পাল্টানো হয়েছিল গাড়ি ও ড্রাইভার ৷ স্বভাবতই ঐশানীর চোখেমুখে এখনও আতঙ্ক ৷ হাতে-পায়ে আঘাতের চিহ্ন৷ তাঁর কথায়, "রাস্তায় শামিম আঙ্কল আর পবিত্র আঙ্কলের মধ্যে গাড়ি বদলাবদলি হয় ৷ " শ্রীরামপুরে বাড়ি ঐশানীর ৷ তার মতোই আতঙ্কের রয়েছে তার পরিবার।
ঐশানীর মা বলেন, "বাড়ি থেকে মেয়েকে গাড়িতে তুলে নিয়েছিল শামিম। কিন্তু শেওড়াফুলিতে ড্রাইভার বদল হয়। শামিম ও পবিত্র আলাদা দুটি গাড়িতে পড়ুয়াদের নিয়ে এলেও শেওড়াফুলিতে এসে শামিমের গাড়িতে তোলা হয় সব ছাত্রছাত্রীকে ৷ এরপর পবিত্র সেই গাড়ি নিয়ে স্কুলের উদ্দেশে রওনা দেয়। চুঁচুড়ার স্কুলে আসার সময় পোলবায় দুর্ঘটনা কবলে পড়ে গাড়িটি । "
ঐশানীর মা ডলি পাল আরও বলেন, "অন্য দিনের মতোই 6.20 নাগাদ স্কুলের গাড়ি আসে।" তবে স্কুলের দেরি হওয়ায় কারণে জোরে গাড়ি চালানোর কথা মানতে চাইলেন না তিনি৷ ডলি দেবী বলেন, "দুর্ঘটনার পরে দুর্ঘটনাস্থান থেকে স্থানীয় একজন 7 টা বেজে 28 মিনিটে আমাকে ফোন করে । ওই সময়ের মধ্যে মধ্যে পড়ুয়াদের উদ্ধার করে ফেলেছিলেন স্থানীয়রা। অন্য দিকে 7 টা বেজে 40 মিনিটে স্কুলে পৌঁছানোর সময়। সেক্ষেত্রে দেরির প্রসঙ্গ উঠছে কী করে!" অভিভাবিকার দাবি, দুর্ঘটনাস্থান থেকে 10 মিনিটে স্কুলে পৌঁছনো যায়। তা সত্ত্বেও কেন অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো হয়েছিল সেটাই প্রশ্ন । প্রশ্নে উঠছে, ড্রাইভারের ব্যক্তিগত তাড়া ছিল না তো!
ঐশানীর মা ডলি পাল আরও বলেন, "আতঙ্কে রয়েছি। নিজে যেতে পারি না বলেই গাড়িতে দিয়েছিলাম। এখন কি করব ভেবে উঠতে পারছি না।" তবে শামিম ও পবিত্র দুই ড্রাইভারকেই চিনতেন বলে জানান তিনি ৷ মাঝপথে গাড়ি বদল নিয়ে অবশ্য ধন্দে তিনি৷ বলেন, "আমার মেয়েকে যে গাড়ি নিয়ে যায় সেটা ভাল। কিন্তু মাঝপথে গাড়ি ও ড্রাইভার বদল হলে আমরা কি করতে পারি! এসব তো বাড়ি বসে জানতে পারি না। "
এদিকে পোলবায়ের দুর্ঘটনাস্থানের এক প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগের ভিত্তিতে ড্রাইভারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে চুঁচুড়া থানায় পুলিশ । এর মধ্যে পুলকার মালিক শামিম বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজ পায়নি তদন্তকারী আধিকারিকরা৷ শামিমের মায়ের বক্তব্য, "জানি না কীভাবে এসব ঘটে গেল ৷ শামিম বাচ্চাদের ভালোবাসে ৷ হাসপাতালে ছাত্রদের দেখতেও গিয়েছিল।"