ETV Bharat / state

লকডাউনে ধুঁকছে নৌ শিল্প,উদাসীন সরকার - নৌ শিল্পী

বার্ধ্যকের ভারে জরাজীর্ণ চারশো বছরের বলাগড়ের নৌশিল্প ৷ লকডাউনে বেড়েছে আরও সংকট ৷ নৌশিল্পীদের সরকারি সাহায্যের আবেদন ৷

hoogly
লকডাউনে ধুঁকছে নৌ শিল্প,উদাসীন সরকার
author img

By

Published : Jun 10, 2020, 8:27 AM IST

Updated : Jun 16, 2020, 6:57 AM IST

বলাগড়,10 জুন : বাংলার নৌশিল্প বলতেই মনে আসে হুগলির বলাগড় ৷ প্রায় চারশো বছরের পুরানো এই নৌ শিল্প। যদিও , এখন এই শিল্প ধুঁকছে বার্ধক্যের ভারে ৷ তারউপর চলছে লকডাউন ৷ বন্ধ রয়েছে নৌ কারখানাগুলি । এছাড়াও ট্রেন-বাস চলাচল বন্ধের কারণে 24 পরগনা, পুরুলিয়া ,আসানসোল সহ একাধিক জেলার মানুষ নৌকা কিনতে আসছে না। দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন রয়েছে আমফানের কবলে। কেউ সেভাবে অর্ডারও দিছে না। সুতরাং নৌকা ব্যবসা এখন অথৈ জলে। সরকারি সহায়তার আশায় দিন গুনছেন নৌশিল্পের কারিগররা ৷

hoogly
সংকটের মুখেও রোজগারের আশায় শিল্পীরা বন্ধ করেনি নৌকা তৈরির কাজ

বলাগড়ের শ্রীপুর, গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চল জিরাট থেকে সবুজদ্বীপ এলাকাগুলির রাস্তার দুধারে তৈরি হচ্ছে ছোটো -বড় নানা ধরনের নৌকা ৷ হিসেব বলছে বর্তমানে প্রায় কয়েকশো শ্রমিক এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাঠের নৌকা চাহিদা অনেকটাই কমেছে । সে জায়গায় লোহার ও প্লাস্টিক নৌকা ব্যবহার বেড়েছে । আগে অবশ্য সমস্ত নৌকা বাবলা কাঠের হত। বাবলা কাঠের বড় ট্রলার দাম 5 লাখ টাকা। কিন্তু বাবলা ছাড়াও শাল সেগুন ও জিলিপি গাছ দিয়ে তৈরি হয় । সম্প্রতি কাঠের দাম বেশি হওয়ায় , শক্ত কাঠ অথচ দাম কম, এমন কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে নৌকো। নৌকো তৈরি হলেও , কেউ আসছেন না কিনতে ৷ লকডাউনের জেরই ব্যবসায় মন্দা ৷

লকডাউনে কেমন আছেন নৌশিল্পীরা ? দেখুন ভিডিয়োয়...

নিজেদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, নৌ শিল্পী বাবলু প্রামাণিক বলেন, " আমরা যা কাজ করি। তাতে সংসার চলে না। লকডাউনে রোজগার আরও বন্ধ ৷ কী করে খাব সেটাই ভাবছি ৷ এই পরিস্থিতিতে কোনও ক্রেতাই নৌকা কিনতে আসছে না। আমরা কোনওভাবেই সরকারের কাছে সাহায্য পাই না। প্রশাসন কিছু একটা ব্যবস্থা করুক আমাদের জন্য। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এই নৌ শিল্পের কাজে লাগায়নি । এটা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয়। আরও এক ব্যবসায়ী শেখ আশরফ বলেন," এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাই। না হলে শিল্পটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। সুন্দরবনসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সমস্ত কিছুই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ব্যবসা সেভাবে নেই।" একই চিন্তার সুর শেখ হোসেনের মুখেও ৷ তিনি বলেন," লকডাউনে কাঠের অধিকাংশ মিল বন্ধ ছিল। যার কারণে কাঠের অভাব হচ্ছে এই ব্যবসায়। পরিস্থিতি ভালো না হলেও পুরুলিয়া সুন্দরবন সহ একাধিক জায়গায় আমরা নৌকো পাঠাচ্ছি । কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যেও রাস্তায় বেরোলে পুলিশি হেনস্থার শিকারও হতে হচ্ছে । এছাড়া তিনি অভিযোগ করে বলেন," নৌকা বিক্রি করতে যাওয়ার সময় 500 টাকা থেকে হাজার টাকা দিতে হচ্ছে পুলিশকে।"

বলাগড়ের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সমিত সরকার নৌ শিল্প নিয়ে বলেন," এই পরিস্থিতিতে কিছু ভাবা যায়নি। নৌ শিল্প সেভাবে নেই । আর কাঠের বোর্ডের জায়গা অনেকেই ফাইবারের বোর্ড ব্যবহার করছে। তার ফলে চাহিদা কমেছে ।" সবশেষে বলাই যায়, একমাত্র সরকারি সাহায্যই খানিকটা হলেও মুখে হাসি ফেরাতে পারে এই সকল চিন্তিত নৌশিল্পীদের মুখে ৷

বলাগড়,10 জুন : বাংলার নৌশিল্প বলতেই মনে আসে হুগলির বলাগড় ৷ প্রায় চারশো বছরের পুরানো এই নৌ শিল্প। যদিও , এখন এই শিল্প ধুঁকছে বার্ধক্যের ভারে ৷ তারউপর চলছে লকডাউন ৷ বন্ধ রয়েছে নৌ কারখানাগুলি । এছাড়াও ট্রেন-বাস চলাচল বন্ধের কারণে 24 পরগনা, পুরুলিয়া ,আসানসোল সহ একাধিক জেলার মানুষ নৌকা কিনতে আসছে না। দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন রয়েছে আমফানের কবলে। কেউ সেভাবে অর্ডারও দিছে না। সুতরাং নৌকা ব্যবসা এখন অথৈ জলে। সরকারি সহায়তার আশায় দিন গুনছেন নৌশিল্পের কারিগররা ৷

hoogly
সংকটের মুখেও রোজগারের আশায় শিল্পীরা বন্ধ করেনি নৌকা তৈরির কাজ

বলাগড়ের শ্রীপুর, গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চল জিরাট থেকে সবুজদ্বীপ এলাকাগুলির রাস্তার দুধারে তৈরি হচ্ছে ছোটো -বড় নানা ধরনের নৌকা ৷ হিসেব বলছে বর্তমানে প্রায় কয়েকশো শ্রমিক এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাঠের নৌকা চাহিদা অনেকটাই কমেছে । সে জায়গায় লোহার ও প্লাস্টিক নৌকা ব্যবহার বেড়েছে । আগে অবশ্য সমস্ত নৌকা বাবলা কাঠের হত। বাবলা কাঠের বড় ট্রলার দাম 5 লাখ টাকা। কিন্তু বাবলা ছাড়াও শাল সেগুন ও জিলিপি গাছ দিয়ে তৈরি হয় । সম্প্রতি কাঠের দাম বেশি হওয়ায় , শক্ত কাঠ অথচ দাম কম, এমন কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে নৌকো। নৌকো তৈরি হলেও , কেউ আসছেন না কিনতে ৷ লকডাউনের জেরই ব্যবসায় মন্দা ৷

লকডাউনে কেমন আছেন নৌশিল্পীরা ? দেখুন ভিডিয়োয়...

নিজেদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, নৌ শিল্পী বাবলু প্রামাণিক বলেন, " আমরা যা কাজ করি। তাতে সংসার চলে না। লকডাউনে রোজগার আরও বন্ধ ৷ কী করে খাব সেটাই ভাবছি ৷ এই পরিস্থিতিতে কোনও ক্রেতাই নৌকা কিনতে আসছে না। আমরা কোনওভাবেই সরকারের কাছে সাহায্য পাই না। প্রশাসন কিছু একটা ব্যবস্থা করুক আমাদের জন্য। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এই নৌ শিল্পের কাজে লাগায়নি । এটা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয়। আরও এক ব্যবসায়ী শেখ আশরফ বলেন," এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাই। না হলে শিল্পটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। সুন্দরবনসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সমস্ত কিছুই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ব্যবসা সেভাবে নেই।" একই চিন্তার সুর শেখ হোসেনের মুখেও ৷ তিনি বলেন," লকডাউনে কাঠের অধিকাংশ মিল বন্ধ ছিল। যার কারণে কাঠের অভাব হচ্ছে এই ব্যবসায়। পরিস্থিতি ভালো না হলেও পুরুলিয়া সুন্দরবন সহ একাধিক জায়গায় আমরা নৌকো পাঠাচ্ছি । কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যেও রাস্তায় বেরোলে পুলিশি হেনস্থার শিকারও হতে হচ্ছে । এছাড়া তিনি অভিযোগ করে বলেন," নৌকা বিক্রি করতে যাওয়ার সময় 500 টাকা থেকে হাজার টাকা দিতে হচ্ছে পুলিশকে।"

বলাগড়ের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সমিত সরকার নৌ শিল্প নিয়ে বলেন," এই পরিস্থিতিতে কিছু ভাবা যায়নি। নৌ শিল্প সেভাবে নেই । আর কাঠের বোর্ডের জায়গা অনেকেই ফাইবারের বোর্ড ব্যবহার করছে। তার ফলে চাহিদা কমেছে ।" সবশেষে বলাই যায়, একমাত্র সরকারি সাহায্যই খানিকটা হলেও মুখে হাসি ফেরাতে পারে এই সকল চিন্তিত নৌশিল্পীদের মুখে ৷

Last Updated : Jun 16, 2020, 6:57 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.