কোন্নগর, 1 জানুয়ারি: পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যে কেন্দ্রের নয়া পরিবহণ আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ট্রাকচালকরা ৷ দিকে দিকে চলছে পথ অবরোধ ৷ একই পরিস্থিতি হুগলির জাতীয় সড়কেও ৷ সারি সারি দাঁড়িয়ে ট্রাক ৷ তবে কেন্দ্রের নয়া পরিবহণ আইনের বিরোধীতা করলেও ট্রাকচালকদের বিক্ষোভকে সমর্থন জানালেন না রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ৷ তাঁর দাবি, কেন্দ্র সরকার কালো আইন এনেছে । এর প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভ না করে কেন্দ্রের বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট বাক্সে ফেলা উচিত ।
তিনি বলেন, "সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার যে বিল এনেছে আমরা তাঁর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম । আমরা বলেছিলাম এই আইন লাগু হলে দেশে পুলিশিরাজ কায়েম হবে এবং দেশের মানুষের উপর নিপীড়নের কারণ হয়ে উঠবে এই আইন । এই আইনের আওতায় পথ দুর্ঘটনায় যদি কারোর মৃত্যু হয় তাহলে ট্রাকচালকদের 10 বছর জেল ও 7 থেকে 10 লক্ষ টাকা জরিমানা করা হবে । তার জন্যই দেশজুড়ে ট্রাকচালকরা পথ অবরোধ করছে । আমি বলব, পথ অবরোধ করে প্রতিবাদ জানালে সাধারণ মানুষ হয়রানি হচ্ছে । প্রতিবাদ জানাতে হলে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে জানান । যারা এমন স্বৈরাচারী কালো আইন আনছে তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে পতন ঘটাতে হবে । আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি । আইন কখনও নিপীড়নের হাতিয়ার হওয়া উচিত নয় ।"
কোন্নগরের বিজেপি নেতা প্রণয় রায় বলেন, "পরিবহণ আইন এখনও প্রণয়ন হয়নি । তার আগে তৃণমূল মানুষকে উস্কে এই ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটাচ্ছে । পরিবহণ আইন গাড়ি ও মালিকের উপর হয় । যদি কোনও সমস্যা থাকে তা আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান হওয়া উচিত । এইভাবে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে নয় । তৃণমূল লোকসভা রাজ্যসভা থেকে বেরিয়ে না গিয়ে আলোচনা করতে পারত ।"
রাজ্য ট্রাক অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রবীর চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, যে আইন নিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে সেটা সঠিকভাবে পরিষ্কারই নয় । কেন্দ্রে অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস সংগঠন আছে । এভাবে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটিয়ে কোনও লাভ নেই । এই আইনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করছে অ্যাসোসিয়েশন । যদি তাও না মানা হয় সারা ভারতবর্ষ স্তব্ধ হয়ে যাবে ।
কেন্দ্রের নয়া পরিবহণ আইন নিয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় রবিবার হুগলির জাতীয় সড়কে । ট্রাকচালকদের বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হয়ে থাকে কলকাতা বর্ধমানগামী জাতীয় সড়ক । যার জেরে ভোগান্তি মুখে পড়তে হয় সাধারণযাত্রী থেকে অ্যাম্বুলেন্স ও মালবাহী গাড়িকে । অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ । পালটা ইঁট বৃষ্টি শুরু করে অবরোধকারীরা । দীর্ঘক্ষণ জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে । এতে এক পুলিশ কর্মীও আহত হন । পরে কয়েকজন অবরোধকারীদের গ্রেফতার করে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: