ডানকুনি, 30 মার্চ : ডানকুনির হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানায় সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক-এর নোটিস । বেকার হলেন সাড়ে ছ'শো শ্রমিক । বুধবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে এই নোটিস দেখতে পান কারখানার শ্রমিকেরা (Several workers unemployed as Dankuni Hindustan Engineering issues Suspension of work notice) । গত 25 মার্চ হিন্দুস্থান ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানায় 90 ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি শেডে কাজ করার সময় সেখান থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় অস্থায়ী শ্রমিক শেখ আজিজুলের । তাঁর বয়স মাত্র 23 ৷ এরপর শ্রমিকের মৃতদেহ আটকে রেখে ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা ।
শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই শ্রমিকের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দিন কারখানার ম্যানেজার, সুপারভাইজার-সহ ম্যানেজমেন্ট স্টাফদের মারধর ও হেনস্থা করা হয়। কারখানার সম্পত্তি নষ্ট করা হয় । এতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের । সেদিন যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁরা কাজে আসতে ভয় পাচ্ছেন ৷ তাই কর্তৃপক্ষ সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ঘটনার দিন শ্রমিক ইউনিয়ন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর মৃত শ্রমিকের পরিবারকে ছ'লক্ষ টাকার চেক দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ । তারপর থেকে কারখানা ঠিকঠাক চলছিল । শ্রমিকরা কাজ করছিলেন । হিন্দুস্থান ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছ'শো শ্রমিক কাজ হারালেন ।
আরও পড়ুন : Dankuni Factory Shut Down : বিস্কুট তৈরির কারখানায় কাজ বন্ধের নোটিস, বিপাকে 500 শ্রমিক
আইএনটিটিইউসি নেতা (Indian National Trinamool Trade Union Congress) অন্বয় চট্টোপাধ্যায় জানান, শেখ আজিজুলের মৃত্যুতে কারখানায় উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হলেও সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক-এর নোটিস দেওয়ার মতো কিছু হয়নি ৷ শেখ আজিজুলের বাবা এই কারখানায় কর্মরত অবস্থায় মারা যান ৷ তখন শেখ আজিজুলকে কারখানা চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ৷ কিন্তু তাঁকে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করা হয় ৷
ঘটনার দিন শেখ আজিজুল 90 ফুট উঁচুতে কোনও রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই কাজ করছিলেন ৷ অথচ কারখানার সুপারভাইজাররা সে বিষয়ে খেয়াল করেননি ৷ কারখানা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় শেখ আজিজুলের মৃত্যু হয়েছে, জানান তৃণমূল শ্রমিক নেতা অন্বয় ৷ এই সমস্যা মেটাতে শ্রম দফতরে চিঠি দিয়ে জানানো হবে । শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে কথাও বলবেন তৃণমূল শ্রমিক নেতা ৷ হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিং এভাবে সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক-এর নোটিস ঝোলাতে পারে না, জানান শাসকদলের নেতা ।
স্বভাবত, একে ইস্যু করে শাসকদলকে একহাত নিয়েছে গেরুয়া শিবির ৷ রাজ্য বিজেপি নেতা ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, "রাজ্যে এখন কয়লা পাচার, গরু পাচার, বালি পাচার, পাথর পাচার বড় ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়ে গিয়েছে ৷ এখানে আর নতুন কোনও ইন্ডাস্ট্রি থাকবে না ৷" তিনি জানান, শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল নেতাদের ভাবা উচিত, কর্মীদের জন্য ইন্ডাস্ট্রি, ইন্ডাস্ট্রির জন্য কর্মী নয় ।