ETV Bharat / state

Campaign Against Child Marriage : গোলাপসুন্দরী সেজে বাল্য বিবাহ রোধে রাস্তায় প্রচারে খানাকুলের প্রধান শিক্ষক - দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

সমাজ গড়ার কারিগর থেকে বাল্য বিবাহ রোধ (Child Marriage) ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্দ্যোগী হয়েছেন শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় (Teacher Debashis Mukherjee) ৷ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বহুরূপী সেজে প্রচার করছেন তিনি ৷

School Head master dresses as woman to aware people about child marriage
Head Master
author img

By

Published : Sep 4, 2022, 10:33 AM IST

খানাকুল, 4 সেপ্টেম্বর: পেশায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক (Head Master) ৷ কিন্তু তিনিই এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন বহুরূপী সেজে ৷ কপালে বড় সিদূরের টিপ ৷ গাল লাল-সবুজে রাঙানো ৷ গলায় প্ল্যাকার্ড ৷ নাম তাঁর গোলাপসুন্দরী ৷

তবে কীসের জন্য তাঁর এই রূপ ?

বাল্য বিবাহের (Child Marriage) বিরুদ্ধে প্রচার ও মানুষকে সচেতন করতেই এই রূপ ধারণ করেছেন হুগলির খানাকুলের মাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৷ আসল নাম দেবাশিস মুখোপাধ্যায় (Teacher Debashis Mukherjee) ৷

সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (Ishwar Chandra Vidyasagar) বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য লড়াই করেছিলেন ৷ আর তাঁকে অনুসরণ করেই সেই পথে হাঁটলেন শিক্ষক দেবাশিস ৷ সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাল্য বিবাহ রোধে প্রচার অভিযানে একক প্রচেষ্টা শিক্ষকের । গোলাপসুন্দরী সেজে শুধু হুগলি নয়, ভিন জেলা এমনকী অন্য রাজ্যেও তিনি প্রচারে যান । শিক্ষকতার সঙ্গে সঙ্গে ছুটির দিন এলেই বেরিয়ে পড়েন বহুরূপী সেজে ।

School Head master dresses as woman to aware people about child marriage
গোলাপসুন্দরী সেজে ভিন জেলায় প্রচারে যান তিনি

আরও পড়ুন: তপন কান্দু খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার ভাড়াটে শুটার

মহিলার বেশে রাস্তায়, মন্দির বা বিভিন্ন মেলায় ঘুরে ঘুরে প্রচার করেন দেবাশিস । পড়াশোনা শেখানোর পরও সমাজ গড়ার কারিগর হিসাবে ব্রতী হয়েছেন তিনি । লক্ষ্য একটাই হুগলি জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য বা দেশে বাল্য বিবাহ রোধ করা এবং মানুষকে সচেতন করা ।

প্রসঙ্গত, গত আর্থিক বছরে শুধু হুগলিতে 550টি বাল্য বিবাহ রোধ করেছে চাইল্ড লাইন । দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অহরহ ঘটে চলেছে এমন সব ঘটনা । সরকারি তরফে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কোথাও যেন খামতি থেকেই যায় । কন্যাশ্রী, রূপোশ্রীর মতো প্রকল্প করার পরও এখনও অজ্ঞতা রয়েই গিয়েছে মানুষের । হুগলি জেলায় পাণ্ডুয়া, বলাগর,পোলবা খানাকুল,জাঙ্গিপাড়া-সহ একাধিক ব্লকে এই ধরনের বাল্য বিবাহের অভিযোগ ওঠে আসছে ।

রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বহুরূপী সেজে প্রচার করছেন দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

সরকার পুলিশ, ব্লক প্রশাসন, কন্যাশ্রী ক্লাব ও আশা কর্মীদের দিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাচ্ছে । স্কুলে গিয়ে সচেতন করা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে । সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে । আর একজন শিক্ষক হিসাবে তাই ছাত্রদের পড়ানোর পাশাপাশি সমাজ সংস্কারের পথ বেছে নিয়েছেন দেবাশিস ।

সম্পূর্ণ নিজের খরচায় বহুরূপী সেজে দিনের পর দিন বাল্য বিবাহ রোধের প্রচারের জন্য ছুটে গিয়েছেন তিনি । কখনও বেড়াতে গিয়ে, আবার কখনও শ্রাবনী মেলায় তারকেশ্বর বা তারাপীঠের মন্দিরে মানুষকে সচেতন করেন দেবাশিস । হুগলির প্রবাদ প্রতিম রাজা রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথা রোধ করেছিলেন । সেই খানাকুলের শিক্ষক হয়ে সমাজ সচেতনতার একক প্রচেষ্টা তাঁর । সরকারি ক্ষেত্রেও দেবাশিসকে ডাকা হয় । তাঁর আবেদন, তিনি যেমন এগিয়ে এসেছেন । সমাজের প্রতিটা স্তরের মানুষ এগিয়ে আসুক এই উদ্যোগে । সরকারি তরফে তাঁকে কাজে লাগানো হোক সমাজ সচেতনতায় । শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষকে শিক্ষক দিবসে কুর্নিশ জানায় ইটিভি ভারত ।

School Head master dresses as woman to aware people about child marriage
বাল্য বিবাহ রোধ করা এবং মানুষকে সচেতন করাই লক্ষ্য তাঁর

দেবাশিস বলেন, "মেয়েদের বাল্য বিবাহ হওয়ায় তারা নানারকম রোগের শিকার হচ্ছে । পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে । মেয়ের বিয়ে দিলেই একটা বোঝা কমে যাবে, এই অজ্ঞতা গ্রামের মানুষের মধ্যে আজও আছে । তাই আমার এই বহুরূপী সাজা । বাংলার লোক শিল্প হিসাবে গ্রহণ যোগ্যতা পাই আমি । করোনাকাল থেকেই বহুরূপী সেজে নানা ধরনের প্রচার করেছি । সরকারি স্তরে আরও প্রচার করতে হবে । ছুটির দিন বা স্কুলনছুটির পরেই আমি প্রচারে যাই ।"

খানাকুল-1 ব্লকের বিডিও শান্তুনু চক্রবর্তী বলেন, "প্রতিটি পঞ্চায়েতে শনিবার বৈঠক করা হয় । কন্যাশ্রী ক্লাব করা হয়েছে । দেবাশিস মুখোপাধ্যায় নিজের প্রচেষ্টায় বাল্য বিবাহ রোধের কাজ করছেন । সরকারি অনুষ্ঠানে আমরা আমন্ত্রণ জানাই তাঁকে । শিক্ষক দিবসে উপযুক্ত শিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন তিনি ।"

খানাকুল, 4 সেপ্টেম্বর: পেশায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক (Head Master) ৷ কিন্তু তিনিই এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন বহুরূপী সেজে ৷ কপালে বড় সিদূরের টিপ ৷ গাল লাল-সবুজে রাঙানো ৷ গলায় প্ল্যাকার্ড ৷ নাম তাঁর গোলাপসুন্দরী ৷

তবে কীসের জন্য তাঁর এই রূপ ?

বাল্য বিবাহের (Child Marriage) বিরুদ্ধে প্রচার ও মানুষকে সচেতন করতেই এই রূপ ধারণ করেছেন হুগলির খানাকুলের মাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৷ আসল নাম দেবাশিস মুখোপাধ্যায় (Teacher Debashis Mukherjee) ৷

সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (Ishwar Chandra Vidyasagar) বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য লড়াই করেছিলেন ৷ আর তাঁকে অনুসরণ করেই সেই পথে হাঁটলেন শিক্ষক দেবাশিস ৷ সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাল্য বিবাহ রোধে প্রচার অভিযানে একক প্রচেষ্টা শিক্ষকের । গোলাপসুন্দরী সেজে শুধু হুগলি নয়, ভিন জেলা এমনকী অন্য রাজ্যেও তিনি প্রচারে যান । শিক্ষকতার সঙ্গে সঙ্গে ছুটির দিন এলেই বেরিয়ে পড়েন বহুরূপী সেজে ।

School Head master dresses as woman to aware people about child marriage
গোলাপসুন্দরী সেজে ভিন জেলায় প্রচারে যান তিনি

আরও পড়ুন: তপন কান্দু খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার ভাড়াটে শুটার

মহিলার বেশে রাস্তায়, মন্দির বা বিভিন্ন মেলায় ঘুরে ঘুরে প্রচার করেন দেবাশিস । পড়াশোনা শেখানোর পরও সমাজ গড়ার কারিগর হিসাবে ব্রতী হয়েছেন তিনি । লক্ষ্য একটাই হুগলি জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য বা দেশে বাল্য বিবাহ রোধ করা এবং মানুষকে সচেতন করা ।

প্রসঙ্গত, গত আর্থিক বছরে শুধু হুগলিতে 550টি বাল্য বিবাহ রোধ করেছে চাইল্ড লাইন । দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অহরহ ঘটে চলেছে এমন সব ঘটনা । সরকারি তরফে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কোথাও যেন খামতি থেকেই যায় । কন্যাশ্রী, রূপোশ্রীর মতো প্রকল্প করার পরও এখনও অজ্ঞতা রয়েই গিয়েছে মানুষের । হুগলি জেলায় পাণ্ডুয়া, বলাগর,পোলবা খানাকুল,জাঙ্গিপাড়া-সহ একাধিক ব্লকে এই ধরনের বাল্য বিবাহের অভিযোগ ওঠে আসছে ।

রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বহুরূপী সেজে প্রচার করছেন দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

সরকার পুলিশ, ব্লক প্রশাসন, কন্যাশ্রী ক্লাব ও আশা কর্মীদের দিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাচ্ছে । স্কুলে গিয়ে সচেতন করা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে । সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে । আর একজন শিক্ষক হিসাবে তাই ছাত্রদের পড়ানোর পাশাপাশি সমাজ সংস্কারের পথ বেছে নিয়েছেন দেবাশিস ।

সম্পূর্ণ নিজের খরচায় বহুরূপী সেজে দিনের পর দিন বাল্য বিবাহ রোধের প্রচারের জন্য ছুটে গিয়েছেন তিনি । কখনও বেড়াতে গিয়ে, আবার কখনও শ্রাবনী মেলায় তারকেশ্বর বা তারাপীঠের মন্দিরে মানুষকে সচেতন করেন দেবাশিস । হুগলির প্রবাদ প্রতিম রাজা রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথা রোধ করেছিলেন । সেই খানাকুলের শিক্ষক হয়ে সমাজ সচেতনতার একক প্রচেষ্টা তাঁর । সরকারি ক্ষেত্রেও দেবাশিসকে ডাকা হয় । তাঁর আবেদন, তিনি যেমন এগিয়ে এসেছেন । সমাজের প্রতিটা স্তরের মানুষ এগিয়ে আসুক এই উদ্যোগে । সরকারি তরফে তাঁকে কাজে লাগানো হোক সমাজ সচেতনতায় । শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষকে শিক্ষক দিবসে কুর্নিশ জানায় ইটিভি ভারত ।

School Head master dresses as woman to aware people about child marriage
বাল্য বিবাহ রোধ করা এবং মানুষকে সচেতন করাই লক্ষ্য তাঁর

দেবাশিস বলেন, "মেয়েদের বাল্য বিবাহ হওয়ায় তারা নানারকম রোগের শিকার হচ্ছে । পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে । মেয়ের বিয়ে দিলেই একটা বোঝা কমে যাবে, এই অজ্ঞতা গ্রামের মানুষের মধ্যে আজও আছে । তাই আমার এই বহুরূপী সাজা । বাংলার লোক শিল্প হিসাবে গ্রহণ যোগ্যতা পাই আমি । করোনাকাল থেকেই বহুরূপী সেজে নানা ধরনের প্রচার করেছি । সরকারি স্তরে আরও প্রচার করতে হবে । ছুটির দিন বা স্কুলনছুটির পরেই আমি প্রচারে যাই ।"

খানাকুল-1 ব্লকের বিডিও শান্তুনু চক্রবর্তী বলেন, "প্রতিটি পঞ্চায়েতে শনিবার বৈঠক করা হয় । কন্যাশ্রী ক্লাব করা হয়েছে । দেবাশিস মুখোপাধ্যায় নিজের প্রচেষ্টায় বাল্য বিবাহ রোধের কাজ করছেন । সরকারি অনুষ্ঠানে আমরা আমন্ত্রণ জানাই তাঁকে । শিক্ষক দিবসে উপযুক্ত শিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন তিনি ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.