আরামবাগ, 9 জুলাই: পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধরা পড়েছে হিংসার ছবি ৷ প্রাণ গিয়েছে বেশ কয়েকজনের ৷ প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ৷ তবে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন কমিশনকে ৷ তাঁর মতে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করেছে । রাজ্যে 10-এর উপর মৃত্যু হয়েছে বলে মেনে নিয়ে তিনি বলেন, কোনও মৃত্যুই কাঙ্খিত নয় । যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক । তবে এ সবের জন্য বিরোধীদের ঘাড়েই যাবতীয় দোষ চাপিয়েছেন তিনি ৷ শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা শান্ত না থাকলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ত বলে দাবি করেন তিনি ৷
হুগলির আরামবাগে একাধিক বুথে শনিবার বোমা ও গুলি চলে । ব্যালট বাক্স জলে ফেলে দেওয়া হয় । বিভিন্ন ঘটনায় তৃণমূলের 12 জন কর্মী আহত হন ৷ আহতদের দেখতে শনিবার রাতে আরামবাগ হাসপাতালে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন ৷ সেখানেই তিনি বলেন, "বিরোধীদের আবেদন অনুযায়ী আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হল । কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা আমরা কী দেখলাম । কেন্দ্রীয় বাহিনী বাদ দিয়ে মনোনয়ন পর্ব করেছিলাম । বাহিনী এসে হাতি-ঘোড়া হল না । বিরোধীরা যে সন্ত্রাস করল কেন্দ্রীয় বাহিনী তা তো আটকাল না ।"
শান্তনু সেন আরও বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনে করেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর দরকার নেই । বিরোধীরা আদালতে গিয়েছিল । আদালতের নির্দেশ মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন । দু'দিন আগে 822 কোম্পানি মধ্যে 337 কোম্পানি আসে । শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদাররা অমিত শাহকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠায়নি । শান্তনুর আরও অভিযোগ, ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষেরা বিজেপির কর্মীদের ট্রেনিং দিয়েছিল। না পারলে ভোট বানচাল করার জন্য ব্যালট বাক্সে কালি না হলে জলে ফেলে দেওয়ার মতো কাজ করতে বলেছিল ।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার বলি আরও এক, কুলতলিতে খুন তৃণমূল কর্মী
তৃণমূল সাংসদের দাবি, শাসকদল অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়েছিল বলে সহনশীলতা দেখিয়েছে ৷ কিন্তু বিজেপির বিধায়ক ও নেতারা তৃণমূলের উপর আক্রমণ চালিয়েছে । সেই কারণে আহত ও নিহতদের সংখ্যা বেশি । রাজ্যে 66 থেকে 67 হাজার বুথের মধ্যে 50টি বুথে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে । অধিকাংশ জায়গায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি ।
সাংসদের অভিযোগ, হুগলির আরামবাগ মহকুমায় বিজেপির বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, সুশান্ত ঘোষরা নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে বুথে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেছে, কর্মীদের উস্কানি দিয়েছে, কারওকে গুলি, লাঠি শাবল দিয়ে মেরেছে, চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়েছে, চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে । আরামবাগ হাসপাতালে 10 জন ভর্তি আছেন । একজন কলকাতায় ভর্তি ৷ একজন পোলিং এজেন্ট রোশন আলিকে মারধর করা হয়েছে । তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । পুলিশকে জানানো হয়েছে, তাঁর খোঁজ চলছে । বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেসও কিছু কিছু জায়গায় সন্ত্রাস করেছে । তারা বাইরে থেকে বন্দুক নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ করেন শান্তনু সেন ।