চণ্ডীতলা, 31 ডিসেম্বর: কেন্দ্রের নয়া পরিবহণ আইনের বিরুদ্ধে পথ অবরোধ করলেন ট্রাকচালকরা । নতুন আইনে চালকদের প্রতি অবিচার হয়েছে, এই অভিযোগে রবিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে অবরোধ শুরু হয় । যার জেরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হলে দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের ৷
আইনে রয়েছে যে, রাস্তায় পথদুর্ঘটনা হলে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা দিতে হবে ট্রাকচালককে ৷ এর প্রতিবাদেই আন্দোলন । সেই আইন মানতে নারাজ ট্রাকচালকদের অ্যাসোসিয়েশন । কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া আইন মানবেন না বলে জানিয়ে দেন ট্রাকচালকরা । ওই আইনের প্রতিবাদে রবিবার চণ্ডীতলার পাঁচঘরায় জাতীয় সড়কে অবরোধ শুরু হয় । সড়কের উপরে আড়াআড়ি ভাবে গাড়ি রেখে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান ট্রাকচালকরা ।
জাতীয় সড়কের উপরে গাছ ফেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় । প্রায় দু'ঘণ্টা কেটে গিয়েছে ৷ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের মতো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে আছে । এর ফলে বর্ষশেষের উদযাপনে রাস্তায় বেরিয়ে প্রায় হাজার হাজার মানুষ আটকে পড়েন । তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় । যাত্রীদের ভোগান্তি ক্রমশ বাড়তে থাকে । দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয় গোটা হাইওয়েজুড়ে ।
পুলিশ অবরোধকারীদের বুঝিয়ে ও আবেদন করেও অবরোধ তুলতে পারেনি । ট্রাকচালকরা তাঁদের দাবিতে অনড় রয়েছেন । পুলিশ বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের উপর ৷ তখন পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করা হয় । পরে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করে ।
হুগলি গ্রামীণের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানান, "200 জন চালক মিলে অবরোধ করেন । ওঁদের বেশকিছু দাবি ছিল । অনুরোধ করে কিছু না হওয়ায় লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেওয়া হয় । পুলিশকে হেনস্তা করাক চেষ্টা করা হয় । আমরা 12 জনকে গ্রেফতার করেছি । এখন জাতীয় সড়ক যানজটমুক্ত হয়ে গিয়েছে ।"
ট্রাক ড্রাইভার ওয়েলফেয়ার আসোসিয়েশনের এক চালক শেখ আবদুল জব্বার বলেন, "অমিত শাহ ড্রাইভারদের জন্য যে আইন তৈরি করেছেন, সেখানে পথ দুর্ঘটনায় কোনও ড্রাইভার পালিয়ে গেলে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে । উনি যে আইন লাগু করেছেন, আমাদের প্রশ্ন উনি কি চিন্তাভাবনা করে এই আইন পাশ করেছেন ? একজন চালক সকলের জন্য মাল বহন করে আনেন । একটি দুর্ঘটনায় যদি কোনও ড্রাইভারের মৃত্যু হয় তার জন্য পরিবারকে দশ ও কুড়ি লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ভাবা হয়নি । তাই এই আইন আমরা মানছি না । তার জন্যই আমরা অবরোধে নেমেছিলাম । সেখানেই আমাদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে ।"
আরেক ট্রাকচালক বশির আহমেদের দাবি যে, "বিল পাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ দুর্ঘটনা হলে ড্রাইভারের সাজা ও জরিমানার টাকাও তাদের দিতে হবে । তাহলে তাদের এটা চিন্তা করা উচিত, কোম্পানিগুলি থেকে এক লক্ষ টাকা মাইনের ব্যবস্থা করুক । তার পর জরিমানা করুক । আমাদের মাইনে থেকে জরিমানা দেবে, সাজা কাটবে, নাকি সংসার চালাবে ? এই আইন কানুন আমরা মানব না ।"
আরও পড়ুন:
অ্যাপ ক্যাবে অ্যাগ্রিগেটর আইন প্রণয়ন, আগামী সপ্তাহে বৈঠকে পরিবহণ মন্ত্রী
হুগলি নদীর জলপথ পরিবহণ সমিতির দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন রাজ্য সরকারের