চন্দননগর, 5 অগস্ট: ডবল ডেকার বাসের আদলে ধাবা সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই খাবারের ঠিকানা । দিল্লি রোডের পাশেই দোতলা এসি বাসের ধাবাটি খাদ্য-প্রেমী মানুষের কাছে খুবই পছন্দের জায়গা । বাসে বসে খেতে খেতে জানলা দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখা রোমাঞ্চ লাগছে খাদ্য প্রমীদের কাছে । তাই এই বাসে খেতে মানুষ ছুটে আসছেন দূরদূরান্ত থেকে । খাবারের দাম সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় পর্যটকরাও এই ধাবায় এসে খুশি (Restaurant in double decker bus attract customers in Chandernagore Delhi Road) ।
দেড়-দু'বছরে দিল্লি রোডের ধারে 25টি উপর ধাবা ও রেস্তোরাঁ তৈরি হয়েছে । হাওড়া থেকে বর্ধমানগামী বহু মানুষজন এই ধাবামুখী হয়েছেন । ছুটির দিনে একটা ফ্যামিলি ট্যুর ৷ তার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া ভালো ঠিকানা হতে পারে এই ধাবাগুলি । এছাড়াও অনেক বাইক রাইডার টিম ও গাড়ি প্রেমী এই রাস্তার উপর দিয়ে যায় । তারাও ভালো খাবারের খোঁজ করেন । সেই কারণে ধাবাটিকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলেছে । কিছুটা প্রাকৃতিক পরিবেশ, কোথাও বিভিন্ন মন্ডেল তৈরি করে আকর্ষণীয় করে তোলা হচ্ছে গ্রাহকদের জন্য । চন্দননগর দিল্লি রোডের পাশে নত্তপাড়ায় বাসের আদলে হেরিটেজ ধাবা তৈরি করা হয়েছে ৷
এর আগে ইন্টার সিটি বলে একটি ট্রেনের কামরা বানানো হয়েছে । চন্দননগর দিল্লি রোডের ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই ডবল ডেকার নীল-সাদা বাস । যা দেখতে একটি দোতলা বাসের মতো । একতলায় ড্রাইভার ও যাত্রীদের বসার সিট রয়েছে । দোতলা পুরোপুরি এসি । তবে এখনও এর জন্য আলাদা চার্জ লাগছে না । অনেকেই শুধু সেলফি তুলতেই আসছেন এখানে ।
আরও পড়ুন: মালদায় রেশম শিল্প পরিদর্শনে এবার আইএএস অফিসাররা
কলকাতা, হাওড়া, কাটোয়া ও চন্দননগর-সহ বিভিন্ন শহরতলির বহু মানুষ আসছেন । আর সামাজিক মাধ্যমেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এই ধাবাটি । সম্পূর্ণ বাসের মতো নতুন করে সাজানো হয়েছে বাসটিকে । ঢুকতেই চোখে পড়বে টি-জোন, দেখতে চায়ের কাপের মতো । সেখানে লেখা 'এক কাপ চায়ে, তুমি আর আমি ।'
রয়েছে গোল খড়ের চালা । যেখানে গ্রাম্য পরিবেশ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । টায়ার কেটে তৈরি করা হয়েছে বসার চেয়ার । তারই মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে নীল-সাদা রঙের বাস। মালিক পক্ষের দাবি, আগামিদিনে এই জায়গাটিতে বাস টার্মিনাল তৈরি করা হবে । বাসস্ট্যান্ড থাকবে । কটেজের মতো ছোটো ছোটো চালা । শুধু বাস নয়, বাসস্ট্যান্ডের দোকান ও রাস্তা সবকিছুই করা হবে এখানে ।
ধাবার চারজন মালিকের মধ্যে এক অংশীদার জয়দীপ সিংহ বলেন, "প্রথম থেকে ইচ্ছে ছিল রেস্তোরাঁর ব্যবসা করব । চন্দননগর এলাকায় প্রথমে জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না । পরে দিল্লি রোডের ধারে এই ধাবা তৈরি করি । আমরা কোনও ট্রেন বা অন্য কিছু দেখে অনুপ্রাণিত হইনি । পুরনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য নতুনত্ব কিছু আনতে চেয়েছিলাম । দোতলা বাস কলকাতার একটা ঐতিহ্য ছিল । সেই ভাবনা থেকেই দোতলা বাসের আকৃতিতে ধাবা তৈরি করা হয়েছে । দোতলা বাস ছাড়াও ঘরের আকৃতি দেওয়া আটচালা তৈরি করা হয়েছে । যা শহরাঞ্চলে নেই ।" টায়ার দিয়ে চেয়ার তৈরি করে মানুষ টানার চেষ্টা করেছেন রেস্তোরাঁর মালিকেরা ৷
অভিনব ভাবনা রয়েছে খাওয়া-দাওয়ার মেনুতেও । সামনেই স্বাধীনতা দিবস ৷ সেই কথা মাথায় রেখে তেরঙা চিকেন তন্দুর বানানো হয়েছে । যা মানুষ খুব ভালোভাবে গ্রহণ করছে । ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, তন্দুর- তিন রকমের আইটেম রাখা হয়েছে । তিনরঙা কাবাব দেখতেও দারুণ ৷ খেতেও সুস্বাদু । এছাড়া আছে বানজারা কাবাব, সেলামি কাবাব ।
কাটোয়া, সটলেক, হাওড়া, উত্তর পাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই ধাবায় আসছেন । তবে এখানে কোনও বুকিংয়ের সিস্টেম নেই । রাত আটটার পর থেকে দশটা পর্যন্ত বাস ভর্তি হয়ে থাকছে । তবে ছুটির দিনগুলোতে বেশি ভিড় হচ্ছে । নীল-সাদা রং মানুষকে আকৃষ্ট করে । তাই দোতলা বাসটিকে এই রং করা হয়েছে, জানালেন অন্যতম কর্ণধার ৷
আরও পড়ুন: জিএসটির চাপে বাড়ছে হোটেল ভাড়া, পর্যটক কমার আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা