সিঙ্গুর, 27 মার্চ: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আগামিকাল সিঙ্গুর যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তার আগে সিঙ্গুরের তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করল ইটিভি ভারত ৷ সেই মনোরঞ্জন মালিক ৷ যিনি গতবার তৃণমূলের কর্মী হয়েও, নির্দলপ্রার্থী হিসেবে পঞ্চায়েত ভোটে লড়েছিলেন ৷ যার পরে তাঁর সঙ্গে খানিকটা দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কিন্তু, মনোরঞ্জন মালিক অভিযোগ করলেন, তাঁকে ফাঁসিয়েছেন মাস্টার মশাই তথা সিঙ্গুরের প্রাক্তন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তৃণমূলের নেতা তপন দাশগুপ্ত (Rabindranath Bhattacharya and Tapan Dasgupta Allegedly Trap Manoranjan Malik) ৷
কিন্তু, কেন এমনটা বলছেন মনোরঞ্জন মালিক ? তাঁর অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তৎকালীন সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তপন দাশগুপ্তর কথায় ৷ তাঁরা নাকি, মনোরঞ্জন মালিককে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়াতে বলেছিলেন ৷ তাও আবার বাড়ি গিয়ে সেই অনুরোধ করেছিলেন মাস্টারমশাই এবং তপন দাশগুপ্ত ৷ কিন্তু, নির্বাচনের আগে মনোরঞ্জন মালিককে তৃণমূলের তরফে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয় ৷ তবে, দলের সেই কথা শোনেননি তিনি ৷ তৃণমূল তাঁর থেকে সমর্থন তুলে নেয় ৷ ফলে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৷
এ নিয়ে মনোরঞ্জন মালিকের দাবি, তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলেও ভোটের প্রচার করেননি ৷ এমনকি ভোটেরদিন নির্বাচন নিয়ে মাথাও ঘামাননি ৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও তৃণমূলের তরফে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা হয় ৷ তাপসী মালিকের বাবার অভিযোগ, পরবর্তী সময়ে মন্ত্রী বেচারাম মান্নার চক্ষুশূল হয়েছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, কেন তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি ? সেই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি মনোরঞ্জন মালিক ৷
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সিঙ্গুরে পথশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন মমতা ৷ সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে কি থাকবেন মনোরঞ্জন ? যা নিয়ে তাঁর জবাব, ‘‘দিদি আমাকে ডাকলে, অবশ্যই যাব ৷ আমি আর ভোটে দাঁড়াতে চাই না ৷ কিন্তু, ভোটে দলের কর্মী হিসেবে কাজ করে যেতে চাই ৷’’ উল্লেখ্য, রাজ্যে তৃণমূলের উত্থানের পিছনে সিঙ্গুরের তাপসী মালিকের বড় অবদান রয়েছে ৷ তাপসী মালিক হত্যাকে সামনে রেখে রাজ্যে বৃহত্তর আন্দোলন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ক্ষমতায় আসার পর সিঙ্গুরে তৃণমূলের যে কোনও অনুষ্ঠানে ডাক পেতেন তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিক ৷
আরও পড়ুন: সিঙ্গুর অতীত ! রানিনগরে 600 কোটি টাকা বিনিয়োগ টাটাদের, জানালেন মমতা
কিন্তু, 2018 সালের পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে সেই মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলের সব অনুষ্ঠানে ব্রাত্য মনোরঞ্জন মালিক ৷ কারণ, তিনি দলবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ কিন্তু, সেই নিয়ে এবার সরাসরি সিঙ্গুরের প্রাক্তন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তপন দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে তাঁকে ফাঁসানোর অভিযোগ করলেন মনোরঞ্জন মালিক ৷ তবে, এ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তপন দাশগুপ্ত কেউ কিছু বলতে চাননি ৷ এমনকি মনোরঞ্জন মালিকের বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য গিয়েছিলেন কিনা, তা তাঁর মনে নেই ৷