হুগলি, 24 অগাস্ট : প্রায় দু'মাস পর তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম খুনের কিনারা করল পুলিশ ৷ এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করল চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ ৷ ধৃতরা হল মঙ্গল যাদব, বৈদ্যনাথ রায় ওরফে হেডেক, ও মহম্মদ নাসিম ওরফে গুড্ডু ৷ ধৃতদের থেকে বেশকিছু অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ৷
দিলীপ রাম খুনের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তারের পর সাংবাদিক বৈঠক করেন কমিশনার হুমায়ুন কবীর ৷ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, "DCP চন্দননগর সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে তিন-চারটি টিম করে এই খুনের ঘটনার তদন্ত চলছিল ৷ সম্পত্তি কেনাবেচা সংক্রান্ত কারণেই দিলীপ রামকে খুন করা হয় ৷ এই ঘটনায় কমিশনারেটের ক্রাইম ব্রাঞ্চের ASI উৎপল গুপ্তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷"
দিলীপ রাম রেলে চাকরি করলেও ব্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন ৷ তিনি ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের ঘনিষ্ঠ ৷ প্রোমোটিং, জমি কেনাবেচার কাজও করতেন দিলীপ ৷ এ সূত্রে এলাকারই অন্য এক প্রোমোটার শকুন্তলা ওরফে সমুদ্রি যাদবের সঙ্গে তাঁর গন্ডগোল ছিল ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, দিলীপকে খুনের আগে প্রায় দু'মাস ধরে রেইকি করা হয় ৷ ওই তৃণমূল নেতা কখন, কীভাবে ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে ? প্ল্যাটফর্মে ওঠার রাস্তায় কোন জায়গায় CCTV নেই এসবই খতিয়ে দেখে পুলিশ ।
আরও পড়ুন : ব্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা খুন, CBI তদন্তের দাবি স্ত্রী নীতুর
কমিশনার জানান, এই ঘটনার মাস্টার মাইন্ড সমুদ্রিই ৷ তবে সে পলাতক ৷ ধৃতদের জেরা করে সমুদ্রির খবর জানার চেষ্টা করা হবে ৷ মৃত তৃণমূল নেতার স্ত্রী তথা ব্যান্ডেল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রীতু সিং বলেন, "দুমাসের মধ্যে প্রশাসন তিন ভাড়াটে খুনিকে গ্রেপ্তার করেছে ভালো ৷ তবে এই খুনের পিছনে মূল মাথা সমুদ্রি যাদব, বিজু পাসোয়ান এখনও পলাতক ৷ জমি নিয়ে একটা সমস্যা ছিল ৷ কিন্তু সেখান থেকে এতবড় ঘটনা ঘটবে বুঝতে পারিনি ৷"
গত 29 জুন সকাল সাড়ে নটা নাগাদ ব্যান্ডেল স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওঠার সময় তৃণমূল নেতা দিলীপ রামকে কাছ থেকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা ৷ তাঁর মাথার পিছনে গুলি লাগে ৷ দিলীপ রামের স্ত্রী রীতু সিং এই ঘটনায় বিজু পাসোয়ান, অর্জুন সিং ও সঞ্জয় মিশ্রের বিরুদ্ধে ব্যান্ডেল GRP-তে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ তাঁর অভিযোগ, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের দিন বিজু ও তাঁর দলবল দিলীপকে খুনের হুমকি দেয় ৷ এর আগেও দিলীপের সঙ্গে তাঁদের কয়েকবার গন্ডগোল হয়েছিল ৷ চন্দননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা ও ব্যান্ডেল GRP পটনা থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় মিশ্রকে গ্রেপ্তার করে ৷ পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে অর্জুন সিং ৷ কিন্তু ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিজু পাসোয়ান এখনও অধরা ৷