ETV Bharat / state

দশভুজার হাত ধরেই সংসারের ভার বইছেন পাণ্ডুয়ার নমিতা

পাণ্ডুয়ার দাবড়া গ্রামে মাটির ঘরে মা দুই দিদিদের নিয়ে থাকেন তিনি । মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন ৷

দশভুজার হাত ধরেই সংসারের ভার বইছেন পাণ্ডুয়ার নমিতা
author img

By

Published : Sep 25, 2019, 11:44 PM IST

Updated : Sep 26, 2019, 4:51 PM IST

পাণ্ডুয়া, 25 সেপ্টেম্বর : এই দুর্গা দশভুজা নন ৷ ইনি দ্বিভুজা ৷ অভাবের সংসারে হাতে রঙ তুলিটাই ছিল তাঁর একমাত্র ভরসা ৷ রঙ-তুলির টানেই চলে তাঁর সংসার ৷ শিল্পী নমিতা মালিক ৷ বাবা মারা যাওয়ার পর সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন তাঁর মা । বড় সংসার তাই দুর্গাপ্রতিমার গোলাতে কাজ শুরু করে বাড়ির ছোট মেয়ে নমিতা । বয়স তখন নয়-দশ হবে ৷ অভাব-অনটনে পঞ্চম শ্রেণীতেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছিল । আগে মূর্তি তৈরি করতে পারতেন না তিনি । এখন মূর্তিতে মাটি দেওয়া থেকে চক্ষুদান সব কিছুই করে ফেলেন চোখের নিমেষে ৷

পাল্লা দিয়ে রীতিমতো মেশিনে রঙ করা কে শুরু করে সব কিছুতেই পারদর্শী নমিতা । পাণ্ডুয়ার দাবড়া গ্রামে মাটির ঘরে মা দুই দিদিদের নিয়ে থাকেন তিনি । মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন ৷ কোনওরকমে সংসার চলে তাঁদের । সরকারি সাহায্য বলতে কিছুই পায়নি 22 পেরোনো মেয়েটির পরিবার । আর পাঁচজন পুরুষ মৃৎশিল্পীর মতোই সে কাজ করে চলেছে মুখ বুজে । পুজোর মরশুমে ছয়শো টাকা জুটছে বটে দিন পিছু, তবে সারা বছর তো এমনটা হয় না । তাই জীবনে তাঁর একটাই লক্ষ্য শিল্পী হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা ।

নমিতা মালিক বলেন, ''আমার কেউ নেই ৷ মনে হল আমাকেই সংসারটা চালাতে হবে । 15 বছর আগে বাবা মারা যায় । এখানে আসতাম দেখতাম ঠাকুর তৈরি হচ্ছে । এক চেনা দাদাকে বললাম আমি ঠাকুর তৈরি করব । ধীরে ধীরে প্রতিমা তৈরি করেছি । এখন বাড়িতে আমার বিধবা দিদি এবং মা রয়েছেন । মা লোকের বাড়িতে কাজ করেন । আমরা দিন আনি দিন খাই । মাথার উপরে কেউ নেই আমাদের । মাঠের কাজ জানিনা । প্রতিমা তৈরি করেই আমার সংসারটা চলছে । আমাদের এখানে ছেলেমেয়ে একসঙ্গে কাজ করি । আমাকে ওঁরা সম্মান দেন । আগে 400 টাকা দিন পিছুতে এই কাজ করতাম ৷ বর্তমানে তা 600 টাকা করেছে গোলার মালিক কুন্তল । সারা বছর কাজ পাই এখানে ৷'' নমিতার আক্ষেপ, ''সরকারি তরফে কোনও কাজ দেয়নি । অনেক চেষ্টা করেছি তা সত্ত্বেও কাজ পাইনি । কাজের কথা বললেই সেখানেই 25 হাজার , 50 হাজার টাকা চায় আমার কাছে । ''

ঠাকুরের গোলার মালিক কুন্তল পাল বলেন, ''2010 সাল থেকে আমি কাজ শুরু করেছিলাম । বর্তমানে আমি পঁচিশটি দুর্গা ঠাকুর তৈরি করেছি । গুড়াপ ,ধনেখালি পোলবাসহ একাধিক জায়গায় আমাদের তৈরি দুর্গা ঠাকুর যায় । নমিতা আমার এখানেই কাজ করে । ছোটোবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর মাঝেমধ্যেই এখানে এসে বসে থাকত । একদিন আমাকে বলে ঠাকুর তৈরির কাজে নেবে আমায় । তখন আমি চিন্তা করেছিলাম মেয়ে মূর্তি তৈরি করবে কি না । তাঁকে নিয়ে কাজ করা সমস্যা হবে না তো । বলেছিলাম, যদি কাজ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আসবি । ও তখন বলেছিল হ্যাঁ পারব । তারপর থেকেই একটু দেখিয়ে দিতে ভালোমতোই কাজ করত নমিতা । ঠাকুরের মাটি দেওয়া রঙের কাজ, ঠাকুরের চোখ আঁকা সবকিছুই একহাতে করতে পারে নমিতা ।''

কুন্তলবাবু বলেন, ''আর্থিক দিক থেকে ওঁদের পরিবার খুবই গরিব । দাদা বা ভাই বলে কেউই নেই তার বাড়িতে । আমি চেষ্টা করি ওকে সাহায্য করার । এখানে সারাবছরই ওঁকে কাজ দেওয়ার ও চেষ্টা করি আমি । মেয়ে হয়ে যে প্রতিমা তৈরীর কাজে এগিয়ে এসেছে ও, আমি কাজটা শিখিয়েছিলাম । চেষ্টা করব যাতে ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করে ।''

পাণ্ডুয়া, 25 সেপ্টেম্বর : এই দুর্গা দশভুজা নন ৷ ইনি দ্বিভুজা ৷ অভাবের সংসারে হাতে রঙ তুলিটাই ছিল তাঁর একমাত্র ভরসা ৷ রঙ-তুলির টানেই চলে তাঁর সংসার ৷ শিল্পী নমিতা মালিক ৷ বাবা মারা যাওয়ার পর সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন তাঁর মা । বড় সংসার তাই দুর্গাপ্রতিমার গোলাতে কাজ শুরু করে বাড়ির ছোট মেয়ে নমিতা । বয়স তখন নয়-দশ হবে ৷ অভাব-অনটনে পঞ্চম শ্রেণীতেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছিল । আগে মূর্তি তৈরি করতে পারতেন না তিনি । এখন মূর্তিতে মাটি দেওয়া থেকে চক্ষুদান সব কিছুই করে ফেলেন চোখের নিমেষে ৷

পাল্লা দিয়ে রীতিমতো মেশিনে রঙ করা কে শুরু করে সব কিছুতেই পারদর্শী নমিতা । পাণ্ডুয়ার দাবড়া গ্রামে মাটির ঘরে মা দুই দিদিদের নিয়ে থাকেন তিনি । মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন ৷ কোনওরকমে সংসার চলে তাঁদের । সরকারি সাহায্য বলতে কিছুই পায়নি 22 পেরোনো মেয়েটির পরিবার । আর পাঁচজন পুরুষ মৃৎশিল্পীর মতোই সে কাজ করে চলেছে মুখ বুজে । পুজোর মরশুমে ছয়শো টাকা জুটছে বটে দিন পিছু, তবে সারা বছর তো এমনটা হয় না । তাই জীবনে তাঁর একটাই লক্ষ্য শিল্পী হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা ।

নমিতা মালিক বলেন, ''আমার কেউ নেই ৷ মনে হল আমাকেই সংসারটা চালাতে হবে । 15 বছর আগে বাবা মারা যায় । এখানে আসতাম দেখতাম ঠাকুর তৈরি হচ্ছে । এক চেনা দাদাকে বললাম আমি ঠাকুর তৈরি করব । ধীরে ধীরে প্রতিমা তৈরি করেছি । এখন বাড়িতে আমার বিধবা দিদি এবং মা রয়েছেন । মা লোকের বাড়িতে কাজ করেন । আমরা দিন আনি দিন খাই । মাথার উপরে কেউ নেই আমাদের । মাঠের কাজ জানিনা । প্রতিমা তৈরি করেই আমার সংসারটা চলছে । আমাদের এখানে ছেলেমেয়ে একসঙ্গে কাজ করি । আমাকে ওঁরা সম্মান দেন । আগে 400 টাকা দিন পিছুতে এই কাজ করতাম ৷ বর্তমানে তা 600 টাকা করেছে গোলার মালিক কুন্তল । সারা বছর কাজ পাই এখানে ৷'' নমিতার আক্ষেপ, ''সরকারি তরফে কোনও কাজ দেয়নি । অনেক চেষ্টা করেছি তা সত্ত্বেও কাজ পাইনি । কাজের কথা বললেই সেখানেই 25 হাজার , 50 হাজার টাকা চায় আমার কাছে । ''

ঠাকুরের গোলার মালিক কুন্তল পাল বলেন, ''2010 সাল থেকে আমি কাজ শুরু করেছিলাম । বর্তমানে আমি পঁচিশটি দুর্গা ঠাকুর তৈরি করেছি । গুড়াপ ,ধনেখালি পোলবাসহ একাধিক জায়গায় আমাদের তৈরি দুর্গা ঠাকুর যায় । নমিতা আমার এখানেই কাজ করে । ছোটোবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর মাঝেমধ্যেই এখানে এসে বসে থাকত । একদিন আমাকে বলে ঠাকুর তৈরির কাজে নেবে আমায় । তখন আমি চিন্তা করেছিলাম মেয়ে মূর্তি তৈরি করবে কি না । তাঁকে নিয়ে কাজ করা সমস্যা হবে না তো । বলেছিলাম, যদি কাজ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আসবি । ও তখন বলেছিল হ্যাঁ পারব । তারপর থেকেই একটু দেখিয়ে দিতে ভালোমতোই কাজ করত নমিতা । ঠাকুরের মাটি দেওয়া রঙের কাজ, ঠাকুরের চোখ আঁকা সবকিছুই একহাতে করতে পারে নমিতা ।''

কুন্তলবাবু বলেন, ''আর্থিক দিক থেকে ওঁদের পরিবার খুবই গরিব । দাদা বা ভাই বলে কেউই নেই তার বাড়িতে । আমি চেষ্টা করি ওকে সাহায্য করার । এখানে সারাবছরই ওঁকে কাজ দেওয়ার ও চেষ্টা করি আমি । মেয়ে হয়ে যে প্রতিমা তৈরীর কাজে এগিয়ে এসেছে ও, আমি কাজটা শিখিয়েছিলাম । চেষ্টা করব যাতে ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করে ।''

Intro:দশ ভুজা রূপে মা দুর্গা নাশ করেছিলেন মহিষাসুরকে।আর সেই মায়েরই দুহাতে রূপ দিচ্ছে আজকের দুর্গা নমিতা।বাবা মারা যাওয়ার পর সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছিল মা।বড় সংসার তাই দুর্গা প্রতিমার গোলাতে কাজ শুরু করে বাড়ির ছোট মেয়ে।অভাব অনটনে পঞ্চম শ্রেণীতেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।আগে মূর্তি তৈরির কিছু পারত না সে।এখন মূর্তিতে মাটি দেওয়া থেকে চক্ষু দান সব কিছুই পারে নমিতা মালিক।ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রীতি মতো মেশিনে রঙ করা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই পারদর্শী সে।পাণ্ডুয়ার দাবড়া গ্রামে মাটির ঘরে মা দুই দিদিদের নিয়ে থাকে।মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোন রকমে চলে তাদের।মূর্তি তৈরি সঙ্গে এক হাতে সংসারের কাজ করে 22 ঊর্ধ এই মেয়েটি।সরকারি সাহায্য বলতে কিছুই পায়নি তার পরিবার।শিল্পী হিসাবেও মর্যাদা নেই তার।আর পাঁচটা পুরুষ মৃৎ শিল্পীর মতোই সে কাজ করে চলেছে মুখ বুজে।পুজোর মরশুম গুলিতে ছয়শো টাকা রোজ পেলেও।সারা বছরই কোন রকমে সংসার চলে তার।জীবনে তার একটাই লক্ষ্য মহিলা শিল্পী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা।

মূর্তি শিল্পী নমিতা মালিক বলেন আমরা কেউ নেই মনে হল আমাকেই সংসারটা চালাতে হবে ।15 বছর আগে বাবা মারা যায়। এখানে আসতাম দেখতাম ঠাকুর তৈরি হচ্ছে ।কুন্তল দা কে বললাম আমি ঠাকুর তৈরি করব ।আস্তে আস্তে প্রতিমা সবকিছুই তৈরি করেছি।এখন বাড়িতে আমার বিধবা দিদি এবং মা আছে।মা লোকের বাড়িতে ঝিগিরি করে। আমরা খুবই গরীব বলা যায় দিন আনি দিন খাই ।আর মাথার গোড়ায় কেউ নেই আমাদের। মাঠের কাজ বা অন্য কোন কিছু কাজে জানিনা ।আমি প্রতিমা তৈরি কাজটা করেই আমার সংসারটা চলছে ।আমাদের এখানে ছেলেমেয়ে একসঙ্গে কাজ করি।আমাকে ওরা সম্মান ও দেয় ।মিলেমিশে কাজ করি। এখানে আগে 400 টাকা রোজে এই কাজ করতাম বর্তমানে 600 টাকা রোজ বাড়িয়ে করেছে গোলার মালিক কুন্তল। সারা বছর কাজ পাই এখানে সরকারি তরফে আমাদের কোনো কাজ দেয়নি ।অনেক চেষ্টা করেছি তা সত্ত্বেও কাজ পাইনি। আমরা সরকারি জায়গায় যেখানে কাজের কথা বললেই সেখানেই 25 হাজার , 50 হাজার টাকা চায় আমা কাছে। আর কিছুই হয়নি।

ঠাকুরের গোলার মালিক কুন্তল পাল বলেন 2010 সাল থেকে আমি কাজ শুরু করেছিলাম।বর্তমানে আমি পঁচিশটি দুর্গা ঠাকুর তৈরি করেছি। গুড়াপ ,ধনেখালি পোলবাসহ একাধিক জায়গায় আমাদের তৈরি দুর্গা ঠাকুর যায়। নমিতা আমার এখানেই কাজ করে ।ওর ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর মাঝেমধ্যেই এখানে এসে বসে থাকতো। একদিন আমাকে বলে ঠাকুর তৈরি কাজে নেবে আমায় ।তখন আমি চিন্তা করেছিলাম মেয়ে মূর্তি তৈরি করবে। তাকে নিয়ে কাজ করা সমস্যা হবে না তো। একটু ভেবে বলেছিলাম।যদি কাজ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আসবি।সে তখন বলেছিল হ্যাঁ পারব। তারপর থেকেই একটু দেখিয়ে দিতেই গুছিয়ে বাগিয়ে ভালোমতোই করত সে।ঠাকুরের মাটি দেয়া রংয়ের কাজ ঠাকুরের চোখ আঁকা সবকিছুই একহাতে করতে পারে নমিতা। আর্থিক দিক থেকে বলতে গেলে ওদের পরিবার খুবই গরিব।সমস্যায় আছে বাড়িতে ।একা মা দাদা বা ভাই বলে কেউই নেই তার বাড়িতে। আমি চেষ্টা করি ওকে সাহায্য করার। খুবই গরীব বলা যায় ।আমার এখানে সারাবছরই ওকে কাজ দেওয়ার ও চেষ্টা করি আমি ।মেয়ে হয়ে যেই প্রতিমা তৈরীর কাজ এগিয়ে এসেছে সেই কারণেই আমি কাজটা শিখিয়েছিলাম। চেষ্টা করব যাতে ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করে ।আরো ভালো পজিশনে যেতে পারলে যাক তাতে আমার নাম সুনাম বাড়বে।Body:WB_HGL_PANDUA AAJKER DURGA_7203418Conclusion:
Last Updated : Sep 26, 2019, 4:51 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.