খানাকুল, 14 মার্চ : সরকারি কাজে বাধা এবং সরকারি আধিকারিককে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার পঞ্চায়েত প্রধান তথা এলাকার তৃণমূল নেতা সন্দীপ বর । হুগলির খানাকুলের ঘটনা । গতকাল রাতে সন্দীপ বরকে গ্রেপ্তার করেছে খানাকুল থানার পুলিশ ৷ আজ অভিযুক্তকে আরামবাগ মুহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সাতদিন জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন ।
2015 সালের ICDS পরীক্ষায় সফল প্রার্থীরা গত বৃহস্পতিবার খানাকুল CDPO-র অফিসে কাজে যোগ দিতে যান । অভিযোগ, কাজে যোগ দিতে গেলে বাধা দেন একাংশ স্থানীয় তৃণমূল নেতা । তালা মেরে দেওয়া হয় CDPO-র অফিসে ৷ সেই সঙ্গে CDPO মহাদেব মণ্ডলকে ব্লক অফিসে নিয়ে গিয়ে BDO দেবাশিস মণ্ডলের সামনেই মারধর করা হয় ৷ এই ঘটনায় মোট 15 জন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় খানাকুল থানায় ৷ অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা কিশোরপুর এক নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সন্দীপ বর, আরেক তৃণমূল নেতা আলি হাসান ও খানাকুল এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নইমূল হক সহ বেশ কয়েকজন।
ওই ঘটনার পর গতকাল CDPO-র অফিসে পুলিশি ঘেরাটোপে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় । সেই সঙ্গে প্রশাসনের তরফে সরকারি কাজে বাধা ও সরকারিকর্মীকে মারধর সহ একাধিক অভিযোগে খানাকুল থানায় 15 জন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় । যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়েরের পরই গতরাতে খানাকুল থানায় একপ্রস্থ আলোচনায় বসে অভিযুক্তরা । কীভাবে অভিযুক্তরা পুলিশের সাথে আলোচনায় বসে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে BJP ৷ সেই সঙ্গে 15 জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়া সত্ত্বেও কেন এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র একজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা৷ BJP-র আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, থানার CCTV ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হোক ৷ অভিযুক্তদের বাঁচাতে পুলিশ উঠেপড়ে লেগেছে ।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আরামবাগ CPI(M)-এর জ়োনাল সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, "প্রশাসন এবং তৃণমূল মিশে গেছে । কীভাবে অভিযুক্তরা থানা থেকে নিরাপদে বাড়ি ফেরে ? তৃণমূল নেতারা কখন কোন দলে থাকেন? এঁরা কখনও তৃণমূল আবার কখনও BJP-তে ৷ এর থেকে বোঝা যায় তৃণমূল BJP-র বোঝাপড়া রয়েছে ।"
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সন্দীপ বর ৷ তিনি পালটা নিয়োগ পদ্ধতির দিকে আঙুল তুলেছেন । নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে CDPO-র অফিসে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন মাত্র, কোনও সরকারি কর্মী বা সরকারি কাজে বাধা দেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।