পাণ্ডুয়া, 15 ডিসেম্বর : সাংসদের নামে নিখোঁজ পোস্টার । পাণ্ডুয়ার বিডিও অফিস, পঞ্চায়েত এবং তেলিপাড়া মোড়ে পোস্টার লাগানো হয়েছে "নিখোঁজ সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সন্ধান চাই" । তবে কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বোঝা না গেলেও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এর জন্য তৃণমূলকে দায়ী করছে (MP Locket Chatterjee missing poster in Pandua of Hooghly) ৷
বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন পাল বলেন, "সামনে থেকে লড়াই করতে না পেরে পিছন থেকে সাংসদের নামে কুৎসা করছে তৃণমূল । পাণ্ডুয়ায় তৃণমূলের বিধায়ক তথা মন্ত্রী রত্না দে নাগকেও দেখা যায় না । লকেট চট্টোপাধ্যায় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়েছেন ।" এছাড়া বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে উত্তরাখণ্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কাজকর্ম দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছে বলে জানান স্বপনবাবু ।
এদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে বহু দিন ধরেই পাণ্ডুয়া তথা হুগলির কোথাও দেখা যায়নি । অন্যদিকে সিঙ্গুরে শুরু হওয়ায় বিজেপির কিষাণ মোর্চার ধরনায় বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত থাকলেও লকেট সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন । তাই লকেট চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন, এই জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে তৃণমূল ।
আরও পড়ুন : Kunal Ghosh : মমতার জয় স্পষ্ট হতেই লকেটকে জবাব কুণালের, উচ্ছ্বসিত ফিরহাদও
এ প্রসঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, "আমি উত্তরাখণ্ডে দলের কাজে ব্যস্ত আছি । সেই সঙ্গে সংসদে অধিবেশন চলছে ৷ তাই যেতে পারছি না । কাজ মিটলেই আবার মানুষের হয়ে কাজ করব ।"
তৃণমূলের পাণ্ডুয়া ব্লক সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় এই পোস্টার লাগানোকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, "যাঁরা মেরেছে তাঁদের বলব, এই পোস্টার অনেক আগেই মারা উচিত ছিল" । তিনি জানান, পাণ্ডুয়ার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁকে খুঁজছে । অসিতবাবুর অভিযোগ, করোনায় তাঁকে পাওয়া যায়নি, আমফানেও তাঁকে পাওয়া যায়নি । কোনও কাজেই তাঁকে পাওয়া যায় না । সাংসদ দেখাই দেন না । তাই তাঁর অনুমান, পাণ্ডুয়ার জনগণই পোস্টার লাগিয়েছে । নির্বাচনে জেতার পর একবারই এলাকায় এসেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷ এমনকি তিনি বলেন, "ওনার দলের লোকরাও তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন না । দলের লোকরা তাঁর উপর বীতশ্রদ্ধ ।"
2019-এ হুগলি লোকসভায় তৃণমূলের রত্না দে নাগকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন লকেট চট্টোপাধ্যায় । হুগলি লোকসভার 7টি বিধানসভার মধ্যে পাণ্ডুয়া একটি । এখান থেকে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন রত্না দে নাগ । আর চুঁচুড়া বিধানসভা ভোটে পরাজিত হন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ।
আরও পড়ুন : BJP agitation at Singur : সাত দফা দাবিতে সিঙ্গুরে বিজেপির আন্দোলন
চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুদার বলেন, "লকেট চট্টোপাধ্যায় কোথায় যাবেন তা নিয়ে তৃণমূলের মাথাব্যথা নেই ৷ কে কোথায় পোস্টার দিল, কে কোথায় গায়েব হল, এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই ৷ বিজেপিই বিজেপিকে কালি মাখাচ্ছে ৷" তিনি লকেট চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে বলেন, "লকেট চট্টোপাধ্যায় এতটাই উচ্চাকাঙ্খী যে সাংসদ হওয়ার পরে আবার বিধানসভায় দাঁড়িয়েছেন ৷ কিন্তু প্রায় 20 হাজার ভোটে হেরেছেন ৷" তাঁর প্রশ্ন, তাহলে তাঁকে লোক পাবে কোথায় ?
চুঁচুড়ার বিধায়ক জানান, লকেট চট্টোপাধ্যায় বিধানসভা ভোটে হেরে পালিয়ে গিয়েছেন ৷