শ্রীরামপুর, 9 ফেব্রুয়ারি : হুগলির বৈদ্যবাটি ও শ্রীরামপুর পৌরসভায় বহু নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন (many political workers files nomination as independent from bjp tmc dissidents at sreerampur baidyabati) । তাঁদের এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ৷ আবার বিজেপি কর্মী । সেই তালিকায় রয়েছেন শ্রীরামপুর পৌরসভার (Sreerampur Municipality) রাজেশ শা ওরফে কুকুয়া ৷ তিনি ওই পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডে বুধবার নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন ৷ অথচ তাঁর স্ত্রী রেখারানি শা শ্রীরামপুরের 9 নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন ৷
2015-র পৌরসভা নির্বাচনে 9 নম্বর ওয়ার্ড থেকেই জিতেছিলেন রেখারানি শা ৷ সেবার তাঁর স্বামী রাজেশকে 10 নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল ৷ কিন্তু তিনি সেখানে হেরে যান সিপিএমের কাছে ৷ এবার ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ৷ কিন্তু সেখানে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধেই নির্দল হিসাবে প্রার্থী হলেন তৃণমূল কর্মী রাজেশ শা ।
রাজেশের যুক্তি, ‘‘দল স্ত্রীকে প্রার্থী করছে । গত সাত বছর ধরে ওয়ার্ডে প্রচুর পরিশ্রম করেছি, দলের ছেলেরা চাইছে তাই প্রার্থী হলাম । না-হলে এই ওয়ার্ডে সিপিএম জিতে যাবে । সিপিএমের হাতে ওয়ার্ড দেওয়া যাবে না । তাই এই চিন্তাভাবনা ।’’
অন্যদিকে টিকিট না-পেয়ে শ্রীরামপুর পৌরসভার 24 নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হলেন বিদায়ী কাউন্সিলর নাসিমা পারভিন । তাঁর স্বামী আকবর আলিও নির্দলে প্রার্থী হয়েছেন । বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল । শ্রীরামপুর পৌরসভার 29টি ওয়ার্ডের মধ্যে অনেক ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে চলেছেন তৃণমূলের টিকিট না পাওয়া নেতা-কর্মীরা । শ্রীরামপুরের 29 নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী কাউন্সিলর বিজেপির রাজেশ সিং টিকিট না পেয়ে নির্দলে দাঁড়িয়েছেন । তাঁর দাবি, ‘‘জনগণের ভোটে আমি নির্বাচিত । 10 বছর ধরে ভোটে জিতে আসছি । মানুষ আমার সঙ্গে আছে । আমি জিতব ।’’
বৈদ্যবাটি পৌরসভাতেও (Baidyabati Municipality) একই পরিস্থিতি ৷ সেখানে 24 টি ওয়ার্ডের 12টি ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন যাঁরা, তাঁরা তৃণমূলের টিকিটের দাবিদার ছিলেন । চণ্ডীতলার বিধায়ক স্বাতী খন্দকারের বোন সীমিতা দত্তকে তিন নম্বর ওয়ার্ডে দল টিকিট দিয়েছিল । সেখানেও নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়ে যাওয়ায় ভোটে লড়বেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন সীমিতা । স্বাতী খন্দকার প্রয়াত তৃণমূল সাংসদ আকবর আলি খন্দকারের স্ত্রী । স্বাতী খন্দকারের বাবা দূর্গাচরন দত্ত এক সময় বৈদ্যবাটি পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন । সেই পরিবারের মেয়েকে এবার প্রার্থী করেছিল দল ।
স্বাতী খন্দকারের অভিযোগ, চাঁপদানীর বিধায়ক অরিন্দম গুঁইনের জন্য বোনকে প্রার্থীপদ থেকে সরিয়ে নিতে হল । স্বাতী খন্দকার বলেন, ‘‘অরিন্দম তাঁকে বলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লিখিত দিতে হবে । না হলে তাঁকে দু'নম্বরে প্রার্থী করুক আর তিন নম্বরে সীমিতাকে । গতকাল রাতেও কথা হয় । আজ শুনলাম 12 জন নির্দল হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন । আমি চাই না দলের কোনও ক্ষতি হোক । আমার বিধানসভা চন্ডীতলা, তাই বৈদ্যবাটি বা চাঁপদানী নিয়ে মাথা ঘামাই না ।’’
বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন কথা বলে লাভ নেই । অনেকের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা থাকতে পারে । কেউ নির্দলে দাঁড়ালে আমরা তাঁকে অনুরোধ করতে পারি । কিন্তু ভয় দেখাতে পারি না ৷ কারণ, আমরা কেউ গুন্ডা-মস্তান নই । আর দলের লোক যদি কেউ নির্দলে দাঁড়ায়, তাহলে দলকে বলব তাঁদের যেন দলে না নেওয়া হয় ।’’ বৈদ্যবাটির তিন নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর স্ত্রীকে প্রার্থী করা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী একজন স্কুল শিক্ষিকা । রাজনীতি থেকে দূরে থাকে । আর আমি দলকে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি । ভোট হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে ।’’
আরও পড়ুন : Tmc candidates in konnnagar municipality : তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় চমক, টিকিট পেলেন শ্বশুর-বৌমা