শ্রীরামপুর, 22 জুন : শর্তসাপেক্ষে পুরীতে এবছর রথযাত্রার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট ৷ তবে, প্রশাসনের নির্দেশমতো বন্ধই রাখা হচ্ছে মাহেশের রথযাত্রা ৷ এবছর বন্ধ থাকছে নবাবী আমলের গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রাও ৷ তবে, নিয়ম পালনের জন্য মন্দিরের ভিতরেই তৈরি করা হবে মাসির বাড়ি ৷ সেখানেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার পুজো করা হবে ৷ দেওয়া হবে ভোগ ৷
নয়টি চূড়াবিশিষ্ট মাহেশের রথ সম্পূর্ণ লোহার তৈরি ৷ অ্যামেরিকান বার্ন কম্পানি 624 বছর আগে তৈরি করেন 125 টন ওজনের এই রথ ৷ মোট 12 টি চাকা রয়েছে ৷ 624 বছর ধরে পালিত হচ্ছে মাহেশের রথযাত্রা ৷ প্রতিবছর এই রথের দড়িতে টান দিতে ভিড় করেন লাখ লাখ মানুষ ৷ কিন্তু কোরোনার কারণে ছেদ পড়তে চলেছে এই ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রায় ৷ ফলে আগামীকাল বের হবে না মাহেশের রথ ৷ ঘুরবে না চাকা ৷ টান পড়বে না মাহেশের রথের দড়িতে ৷ তবে, মন্দিরে ধ্যান ঘরের ভিতরেই তৈরি করা হবে অস্থায়ী মাসির বাড়ি ৷ সেখানেই আগামীকাল রাখা হবে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে ৷ সকাল 8 টায় ভোগও দেওয়া হবে ৷ তারপর ধ্যনঘর থেকে মন্দিরের চাতালে বের করে আনা হবে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে ৷ সেখানেই করা হবে পুজো ৷ আর মাহেশের মাসির বাড়িতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা বদলে নিয়ে যাওয়া হবে নারায়ণ শিলা ৷
মন্দিরের ভিতরে পুজো হবে ঠিকই ৷ তবে, প্রতিবছরের মতো এবছর মন্দিরে সব ভক্তরা প্রবেশ করতে পারবেন না ৷ মোট 25 জনের একটি তালিকা করা হয়েছে ৷ তাঁরাই একমাত্র আগামীকাল মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন ৷ এমনকী, রথযাত্রার পরে মাহেশের মন্দির খোলার পরও ভক্তদের প্রবেশে বিধিনিষেধ বজায় থাকবে ৷ সেই বিধিনিষেধ অনুযায়ী, মাস্ক পরে ও স্যানিটাইজ়ার হাতে নিয়ে একসঙ্গে 25 জন ভক্তই প্রবেশ করতে পারবেন মাহেশের মন্দিরে ৷ তারপর তাঁরা বের হলে লাইনে থাকা পরের 25 জন প্রবেশ করতে পারবেন মন্দিরে ৷
মাহেশের সেবায়েত পিয়াল অধিকারী বলেন, "আগামীকাল কারা মন্দিরে ঢুকতে পারবেন এমন 25 জনের তালিকা প্রশাসনকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে । পুলিশ প্রশাসন থাকবে জগন্নাথ মন্দিরে । সাধারণ ভক্তদের জন্য মন্দিরের মূল ফটক বন্ধ থাকবে । বিকেল 3 টের সময় রথের চারদিকে তিনবার প্রদক্ষিণ করে দামোদর পুজো করবেন ।"
মাহেশের মতো এবছর বন্ধ থাকছে গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রাও ৷ এবছর 287 বছরে পা দিতে চলেছে এই রথযাত্রা ৷ নবাব আলিবর্দি খাঁর আমলের এই রথ কাঠ দিয়ে তৈরি ৷ এবছর রথযাত্রা বন্ধ থাকায় গুপ্তিপাড়ার মন্দিরের জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাও মাসির বাড়ি যাচ্ছে না ৷ তার বদলে মন্দিরের ভিতর যে কৃষ্ণচন্দ্রের মন্দির রয়েছে সেখানেই তৈরি করা হবে অস্থায়ী মাসির বাড়ি ৷ সেখানেই করা হবে পুজো ৷