তারকেশ্বর, 9 অগস্ট: টানা 10 বছর পর লাল আবির উড়িয়ে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করল সিপিএম। জেলা জুড়ে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল বুধবার। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল একচ্ছত্র ক্ষমতা বিস্তার করতে পারলেও দীর্ঘদিন পর বেশ কিছু পঞ্চায়েতে বামেদের প্রভাব পড়েছে। এদিন তারকেশ্বরের কেশবচক গ্রাম পঞ্চায়েতে লাল আবির মেখে ও লাল বাতাসা খেয়ে শপথ নিতে দেখা গেল বাম সদস্যদের। আর এতেই ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখেছে বামেরা। হুগলি জেলায় এই পঞ্চায়েত ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত দখল করেছে সিপিএম। পাণ্ডুয়া ব্লকে জামনা গ্রাম পঞ্চায়েত ও চন্ডীতলা ব্লকে জনাই গ্রাম পঞ্চায়েত একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে তারা। এছাড়াও ইটাচুনা খন্যান গ্রাম পঞ্চায়েত ও জামগ্রাম মণ্ডলাই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করার সম্ভবনাও রয়েছে বামেদের।
পঞ্চায়েতে ফল প্রকাশের পর বেশ কিছু জায়গায় বিরোধী জয়ী প্রার্থীদের শাসকদলে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। তাতে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়াই অনেক জায়গায় পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করতেও সমর্থ হয়েছে। তবে তারকেশ্বর ব্লকের কেশবচক পঞ্চায়েতে নির্বিঘ্নেই বোর্ড গঠন করল বামেরা। এই পঞ্চায়েতে মোট আসন ছিল 14টি। তার মধ্যে বামেরা পায় আটটি আসন এবং শাসক দল তৃণমূল পায় ছয়টি আসন। কেশবচক পঞ্চায়েতে প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হন তপতি কুণ্ডু এবং উপ-প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হন বিশ্বনাথ সাঁতরা। এদিন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। সকাল থেকেই সিপিএম-এর কয়েকশো কর্মী-সমর্থক জড়ো হয় কেশবচক পঞ্চায়েতের সামনে। ভোটাভুটির মধ্য়ে দিয়ে প্রধান, উপ-প্রধান নির্বাচিত হতেই লাল আবির খেলায় মেতে ওঠেন দলীয় কর্মীরা। বিলি করা হয় লাল বাতাসাও। গানের তালে নাচতেও দেখা গেল সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের।
সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য স্নেহাশিস রায় বলেন, "এটা মানুষের জয় হয়েছে। সেই জন্য গরিব মানুষ আনন্দ করছে। আমরা সবাইকে নিয়ে পঞ্চায়েত চালাতে চাই। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে পঞ্চায়েত পরিচালনা করব। বীরভূমে সন্ত্রাস চালাতে গুড় বাতাসা বিলি করা হত, আর এখানে মানুষকে কাছে টানতে লাল বাতাসা বিলি করা হল। গুড় ও বাতাসার প্রতিপক্ষ লাল বাতাসা। যা এই কেশবচক থেকে শুরু হল।" একই সঙ্গে তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, "বামেদের জয়ী প্রার্থীদের প্রলোভন দেওয়া হয়েছিল । এমনকী ভীতি প্রদর্শন করাও হয়েছিল। তবে সেসব উপেক্ষা করেই মানুষের পঞ্চায়েত গঠন করল বাম প্রার্থীরা।"
আরও পড়ুন: দেশে 'ইন্ডিয়া' আর বাংলায় 'বিজেন্ডিয়া', বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির সখ্যতার অভিযোগ মমতার
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস তারকেশ্বর ব্লক সভাপতি প্রদীপ সিংহ রায় বলেন, "মানুষের রায়কে আমরা মেনে নিয়েছি। তারকেশ্বর ব্লকে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিএম পেয়েছে। আমরা চাইলে অনেক কিছু করতে পারতাম। দলের নির্দেশ মেনে চলেছি। আমরা এলাকায় উন্নয়ন করে যাব। সিপিএম একটু উঠেছে। সামনে লোকসভা নির্বাচনে ফের শূন্যে চলে যাবে। 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে কেশবচক পঞ্চায়েত থেকে দুই হাজার ভোটে লিড দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। এবং সেখানে আবারও সবুজ আবির নিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠবে মানুষ।"