গোঘাট, 28 ফেব্রুয়ারি: হুগলির গোঘাটে মাঠকে মাঠ জুড়ে চলছে মাদক ব্যবসার 'কর্মযজ্ঞ'। হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার পোস্ত চাষ । সেইসঙ্গে অভিযোগ, পোস্ত গাছ থেকে নিষিদ্ধ আফিমের ব্যবসাও নাকি চলছে রমরমিয়ে (Illegal Poppy Cultivation in Goghat) । কিন্তু ভয়ে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মুখে কুলুপ এঁটেছেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রমরমিয়ে চলছে এই পোস্ত চাষ। গোঘাটের মান্দারন ও কাঁটালি এলাকায় বিশেষ করে এই পোস্ত চাষ হতে দেখা যাচ্ছে । তিন মাস ধরে পোস্ত চাষ হলেও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি গ্রামবাসীদের ।
তবে এলাকায় সাংবাদিকরা গেলেই কখনও পোস্ত চাষিরা লুকিয়ে পড়ছে ৷ আবার সাংবাদিকরা এলাকা থেকে চলে গেলেই নাকি পোস্ত গাছ এবং পোস্ত গাছের ফল দ্রুত তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ । তবে চাষিরা জানিয়েছে, পুলিশকে জানিয়েই নাকি তারা পোস্ত চাষ করছে। পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে । এখানেই প্রশ্ন উঠছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। তাহলে কী পুলিশের মদতেই পোস্ত চাষ হচ্ছে ? সব জেনেও কি নির্বিকার প্রশাসন ?
জানা গিয়েছে, বিঘা প্রতি পোস্ত চাষ থেকে তৈরি হচ্ছে 2 থেকে 3 কেজি করে আফিম। প্রতি কেজি আফিম বিক্রি হচ্ছে প্রায় 50 হাজার টাকারও বেশি দামে। কিন্তু অবৈধ পোস্ত কারবারিদের বিরুদ্ধে নালিশ জানানোরও সাহস নেই কারও। সূত্রের খবর, এক বিঘা জমি থেকে পোস্তর আঠা সংগ্রহ করে 2 থেকে আড়াই কেজি মতো আফিম তৈরি হয় । যার বাজারমূল্য কেজি প্রতি 55 থেকে 60 হাজার টাকা ।
পোস্তর আঠা বের করে নেওয়ার পর যে ফলটি পড়ে থাকে, তার ভেতর থেকে তৈরি হয় খাবারের পোস্ত । কিন্তু পোস্ত চাষ বেআইনি । জেল জরিমানা হতে পারে জেনেও বিঘার পর বিঘা জমিতে চলছে পোস্ত চাষ । প্রশাসনের তরফে পোস্ত চাষের বিরুদ্ধে প্রচার এবং আবগারি দফতর মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও জমির মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর পদক্ষেপ না-নেওয়ার জন্যই প্রতিবছর পোস্ত চাষের রমরমা গোঘাটে । এমনটাই মনে করছে গ্রামবাসীরা। যদিও গোঘাট দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনিমা কাটারি বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন । সবমিলিয়ে এখন দেখার গোঘাটে বেআইনি পোস্ত চাষ বন্ধ করতে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয় ।
আরও পড়ুন: দামোদরের চরে পোস্ত চাষের রমরমা, কড়া পদক্ষেপ আবগারি দফতরের