চন্দননগর, 9 মে : চন্দননগরে কোরোনা আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়ে চিন্তায় হুগলি জেলা প্রশাসন । সূত্রের খবর, উর্দি বাজারসহ গোটা চন্দননগরে এখনও পর্যন্ত 20 থেকে 25 জন কোরোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে । উর্দি বাজারকে আগেই কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছিল । যার জেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এলাকার প্রবেশপথ । পাশাপাশি চন্দননগর পৌরনিগমের 11 ও 12 নম্বর ওয়ার্ডেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এমন আঁচ করে গোটা এলাকা বাঁশ ও টিনের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় । তবুও অনেকাংশেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি । অন্যান্য জেলার মতো এখানেও লকডাউন অমান্য করে নানা অজুহাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন মানুষজন । অযথা ভিড় করছেন বাজারে । যা নিয়ন্ত্রণ করতে স্থানীয় লক্ষ্মীগঞ্জ বাজার আগামী সাতদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । প্রশাসনের তরফে চলছে নজরদারি । স্থানীয়দের একাংশের কথায়, এই সংক্রমণ রুখতে না পারলে, মানুষ বাড়িতে না থাকলে আগামীদিনে এটি ছড়িয়ে পড়বে চন্দননগরসহ আশপাশের এলাকায় ।
এপ্রিলের শুরুতেই চন্দননগর উর্দি বাজার এলাকায় কোরোনা সংক্রমণ ছড়ায় । চন্দননগর পৌরনিগমের 11 নম্বর এবং 12 নম্বর ওয়ার্ডের সুকদেব সিং রোড অঞ্চলেও একই সঙ্গে পাওয়া যায় কোরোনা আক্রান্তের খোঁজ । এক তৃণমূল নেতা ও এক গাড়ি চালকের শরীরে কোরোনা ভাইরাস মেলে । তাঁদের আইসোলেশনে পাঠানো হয় । এরপর উর্দি বাজার এলাকা ঘিঞ্জি হওয়ায় বাড়তে থাকে সংক্রমণ । এলাকায় বস্তিও রয়েছে যা বাড়তি চিন্তায় ফেলে প্রশাসনকে । কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করা হয় উর্দি বাজারকে । সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে পর্যন্ত এই এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও, গতকাল তা লাফিয়ে বাড়ে । কিন্তু পরিসংখ্যান নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে প্রশাসন । তবে, ঘিঞ্জি এলাকায় বাড়তে থাকে সংক্রমণের হারে রীতিমতো চিন্তায় জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকরা ।
ঘেরা রয়েছে উর্দি বাজার এলাকা । এখানকার বাসিন্দাদের বাইরে যাওয়ার কোনও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না । বাইরে থেকে সেভাবে কাউকে এই এলাকায় ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না । নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেরিওয়ালা মারফত বিক্রি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে । প্রয়োজনে সরকারি তরফে দুস্থদের জন্য চাল-ডালের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গেছে । সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় তার জন্য আগামী সাতদিন লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারসহ 11 ও 12 নম্বরের ওয়ার্ডের আশপাশের দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন । তবে অবশ্য ওষুধের দোকানসহ জরুরি পরিষেবা সচল থাকবে । যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই প্রশাসন তাঁদের গৃহবন্দী করছে । এবং সংক্রমণের কারণ দেখিয়ে কোয়ারানটিনে পাঠানো হচ্ছে ।
এবিষয়ে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় তার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা হয়েছে । গতকালও বেশ কিছু মানুষকে কোয়ারানটিনে ও আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে । এবং কোরোনা পজ়িটিভ পাওয়াও গেছে । এই অঞ্চলের সাতটি পরিবারে কোরোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে । প্রশাসনিক তরফে বাজারহাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । সেই সঙ্গে স্থানীয়দের অসুবিধা যাতে না হয় তার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । বস্তি এলাকা বলে এই সংক্রমণ আরও ছড়াচ্ছে । কোরোনা পজ়িটিভ হওয়া সত্ত্বেও গোপন করায় উর্দি বাজারের মানুষের মধ্যে সংক্রমণ বেড়েছে । এলাকায় নজরদারি চলছে ।