বৈদ্যবাটি, 5 এপ্রিল : লকগেট ভেঙে জলমগ্ন বিঘার পর বিঘা জমি । জমিতে হাঁটু জল, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকায় চাষের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । গঙ্গার জোয়ারের জলে খাল উপচে মাঠের ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষুব্ধ পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের চাঁপসরা ও উত্তর রাজ্যধরপুর এলাকার কৃষকরা (Land submerged due to demolition of Baidyabati lock gate) । দীর্ঘদিন ধরে এভাবে হওয়ার কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন চাষিরা । বছর চারেক ধরে খারাপ জিটি রোড সংলগ্ন বৈদ্যবাটি খালের লকগেট । ফলে বর্ষাকাল না হওয়া সত্ত্বেও জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ছে ।
বৈদ্যবাটি খাল পিয়ারাপুর, বৈদ্যবাটি চৌমুনী থেকে শুরু করে পিয়ারাপুর পঞ্চায়েত ও বৈদ্যবাটি পৌরসভার মধ্য দিয়ে গঙ্গায় মেশে । স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, তিন ফসলি জমি এগুলো । দীঘদিন ধরে ধান, আলু, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স ও পাট-সহ বিভিন্ন শাক সবজির চাষ হত এই মাঠে । কয়েকবছর ধরে চাষ করে লোকসান হল । সবজি খেতে জল জমে রয়েছে । পাটের দানা ছড়ানো হয়েছিল যেসব জমিতে সেগুলো জলের তলায় । এ বিষয়ে একাধিকবার পঞ্চায়েত প্রধান-সহ এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ চাষিদের । তাঁদের দাবি অবিলম্বে এই লকগেট মেরামতের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন ।
আরও পড়ুন : KMC Property Tax : সম্পত্তি কর আদায়ে আয় বাড়ল কলকাতা পৌরনিগমের
স্থানীয় কৃষক পরেশ দাসের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই চাষ হচ্ছে না । পাট চাষ করেছিলাম সব ডুবে যাচ্ছে না । চার পাঁচ বছর ধরে পেঁয়াজ, ঢেঁড়স চাষ করতে পারছি না ৷ উপরন্তু চাষের জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে । 1 কাঠা জমি বিক্রি হচ্ছে এক লক্ষ দেড় লক্ষ টাকায় । চাষ করতে পারছে না বলে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তাঁরা । ঘর থেকে আমাদের পয়সা দিতে হচ্ছে। চাষের টাকা তুলতে পারছি না ।
কৃষকদের জমি কমদামে কিনতে জমি মাফিয়ার সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের একটা আঁতাত আছে বলে মনে করছেন শাসকদলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি বিকাশ দাস। তিনি বলেন, "প্রশাসনের গাফিলতির ফলেই চাষিদের এই দুর্ভোগ । এনিয়ে স্থানীয় বিধায়ক থেকে সেচ দফতরকে খাল সংস্কার ও লকগেট মেরামত করার কথা জানানো হয়েছে । কৃষকদের মত, বছর বছর চাষ নষ্ট হওয়ার ফলে কৃষকদের চাষ করতে অনীহা আসবে । তখন কম দামে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হবেন তাঁরা ।
হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, "বৈদ্যবাটি চ্যানেলের খাল অপরিণত অবস্থায় ছিল । জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিতে হত 24 মার্চ একটি মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, জেলাশাসকের মাধ্যমে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে জানান হবে। শহরাঞ্চলের নিকাশির কাজ দেখে সুরাহার পাশাপাশি ডানকুনি খাল সংস্কারের জন্য 18 কোটি টাকার প্রজেক্ট জমা দেওয়া হয়েছে । ডানকুনি খালের সমস্যা হল এর পাশে অনেক খাটাল আছে সেগুলোকে সরাতে হবে । না হলে খাল সংস্কারের পরেও ভরাট যেতে পারে । তাই খাটালগুলোকে বিকল্প জায়গায় সরানোর চেষ্টা চলছে । আশা করা যায় আগামী দিনে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ।"